বেপাত্তা চিকিৎসক! খোঁজ নেই স্বাস্থ্যকর্মীদেরও। কুমারগঞ্জে তিন দিন ধরে তালাবন্ধ সরকারী হাসপাতাল। বিনা চিকিৎসাতেই মৃত্যু রোগীর।
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ২৩ জুলাই ———- বেপাত্তা চিকিৎসক, তিন দিন ধরে তালা বন্ধ সরকারি হাসপাতালে। খোঁজ নেই নার্স ও অনান্য স্বাস্থ্য কর্মীদেরও। আর যার জেরে বিনা চিকিৎসাতেই মৃত্যু হয়েছে এক রোগীর। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ ব্লকের সমজিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের। রবিবার এই ঘটনা সামনে আসতেই রীতিমতো ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। ঘটনা নিয়ে কড়া ব্যবস্থা নেবার আশ্বাস দিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।
বাংলাদেশ সীমান্ত অধ্যুষিত কুমারগঞ্জ ব্লকের সমজিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতটি। যে প্রত্যন্ত এলাকায় মানুষের সুবিধার্থে গড়ে উঠেছিল দশ বেডের সমজিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। সময়ের সাথে সাথে যে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বৃদ্ধি পেয়েছে বেডের সংখ্যাও। বর্তমানে ২০ টি বেড রয়েছে ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। যেখানে প্রসূতি মহিলাদের সমস্ত রকম চিকিৎসা ছাড়াও, ডায়েরিয়া বা রাতবিরেত যেকোন অসুখ বিসুখের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। বর্তমানে যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির দায়ীত্বে রয়েছেন একমাত্র চিকিৎসক এস বি মুখার্জ্জী। এছাড়াও ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি পরিচালনার জন্য রয়েছে ৫ জন নার্স ও সাতজন সরকারী কর্মী। অভিযোগ, সরকারী ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একমাত্র চিকিৎসক শুক্রবার থেকে আচমকাই বেপাত্তা হয়ে যান। শুধু তাই নয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নার্স সহ বাকি কর্মীরাও নিখোঁজ হয়ে যায় হাসপাতাল থেকে। আর যার জেরেই প্রায় তিনদিন ধরে তালাবন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে সরকারী ওই হাসপাতালটি। এদিকে শনিবার রাতে স্থানীয় রসুলপুর এলাকার এক যুবক তথা মৎস্যজীবি সাগর মহন্ত আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। যাকে তড়িঘড়ি স্থানীয় সমজিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আনা হলেও তার চিকিৎসা হয়নি। তালাবন্ধ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কাউকেই খুজে পায়নি তার পরিবারের লোকেরা। এরপর স্থানীয় কুমারগঞ্জ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। যাকে ঘিরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ, সরকারি হাসপাতাল কেন তালা বন্ধ হয়ে পড়ে থাকবে ? একমাত্র চিকিৎসক ছুটিতে থাকলেও তা নিয়ে কেন হেলদোল নেই স্বাস্থ্য দপ্তরের ? নার্স ও বাকি স্বাস্থ্যকর্মীরাই বা কেন বেপাত্তা হয়ে থাকলো ? যেসব প্রশ্ন তুলে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চরম অব্যবস্থা নিয়ে সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
কাজিমুল হক সরকার ও সাধন বসাকরা বলেন, ডাক্তার ছুটিতে গেলেই হাসপাতাল তালা বন্ধ হয়ে পড়ে থাকে। দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে এই একই সমস্যা চলছে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। হাসপাতাল তালা বন্ধ থাকার কারণে বিনা চিকিৎসাতেই এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। কেন বারবার এসব ঘটনা ঘটছে। এসব বন্ধ হওয়া উচিত। স্বাস্থ্য দপ্তরের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ দাস জানিয়েছেন, এ ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে তার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহন করা হচ্ছে।