শীতল চক্রবর্তী গঙ্গারামপুর ১১জুন দক্ষিণ দিনাজপুরঃ-শিক্ষিকা তথা শাসকদলের প্রাক্তন কাউন্সিলার মহিলা তৃণমুল নেত্রী সহ তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে স্বর্ণপদক জয়ী মহিলা সাইক্লিষ্ট ও তার মা বিজেপি কর্মী সহ তিনজনকেমারধরের ঘটনায় যখন বিজেপির সাংসদ অভিযুক্তদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে থানার সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে ,তখন সেই ঘটনার ধামাপাকা দিতে আসরে নামল তৃণমুলের নেতারা। দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর পুরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ডের বোরডাঙ্গী এলাকায় ওই প্রাক্তন কাউন্সিলার মহিলা তৃণমুল নেত্রী দেবযানী দত্ত দেসরকার সহ তাঁর অনুগামীদের স্বর্ণপদক জয়ী মহিলা সাইক্লিষ্ট ও তার মা বিজেপি কর্মী সহ তিনজনকে মারধরের ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অভিযোগ জানানো হয়েছে থানায়। সাংসদ ও বিজেপি নেতৃত্বরা জানিয়েছেন, এমন ঘটনা মেনে নিতে পারেনি তাই দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলনে নামা হয়েছে। অন্যদিকে তৃণমুলের প্রাপ্তন কাউন্সিলার ও তৃণমূল নেত্রীরা দাবি জানিয়েছেন, শান্তিপুর্ণভাবে সালিশিসভা ইচ্ছিল। বিজেপি নোংরা রাজনীতি করছে। এমন ঘটনায় শোরগোল পরেছে এলাকাজুড়ে। আইনকে বুড়ো আঙ্গুন দেখিয়ে কোন এলাকায় কেউ কি এমন সালিশি সভা করতে পারেন?

আক্রান্ত কেয়ার মা চন্দনা রাজবংশী বিজেপির টাউন মন্ডলের সাধারন সম্পাদকের পদে রয়েছেন ।তাঁর স্বামী ওই ওয়ার্ডের বুথ সভাপতি পদে রয়েছেন। বিধানসভা ভোটের সময় তাঁরাই ওই ওয়ার্ড থেকে এক হাজারের বেশী ভোটে বিজেপি দলকে এগিয়ে দিয়েছিল তারা। গঙ্গারামপুর পুরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ডের বোরডাঙ্গী এলাকায় বাসিন্দা শাসকদলের প্রাক্তন কাউন্সিলার মহিলা তৃণমুল নেত্রী দেবযানী দত্ত দেসরকার সহ তাঁর অনুগামীরা মিলে ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা স্বর্ণপদক জয়ী মহিলা সাইক্লিষ্ট কেয়া রাজবংশীর মা চন্দনা রাজবংশীকে ডেকে নিয়ে যান এলাকার এক তৃণমুল কর্মী অমল দাসের বাড়িতে।সেখানেই ওই প্রাক্তন কাউন্সিলারকে নিদান দেন কেন তাঁদের বাড়িতে একটি ব্যাঙ্কের লোকজন সেখানে যাওয়া আসা কেন করবে,কোন সম্পর্ক আছে কি।কাউন্সিলারের সেই অন্যায় দাবি মেনে নিতে না পেরে অভিযোগ সেই ঘটনার প্রতিবাদ করেন স্বর্ণপদক জয়ী মহিলা সাইক্লিষ্ট কেয়া।

অভিযোগ সেই সময় গঙ্গারামপুর কালীতলার নিরঞ্জন ঘোষ স্মৃতী বিদ্যাপীঠের শিক্ষিকা তথা ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলার মহিলা তৃণমুল নেত্রী দেবযানী দত্ত দেসরকার নিজে ওই মহিলা সাইক্লিষ্ট কেয়া ও তাঁর মা চন্দনা রাজবংশী,কেয়ার এক আত্নীয় সবিতা হালদার রাজবংশীকে মারধর করা হয়েছে।তাঁদেরকে বাঁচাতে গেলে প্রাক্তন কাউন্সিলার নিজে ও তাঁর অনুগামীদের হাত থেকে ওই মহিলা বাদ যায়নি কেউ বলে অভিযোগ।যে ভিডিও ছবি ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়াম ভাইরাল হয়েছে প্রাক্তন কাউন্সিলার সহ তাঁর অনুগামীদের মারধরের ভিডিও ছবি।যে ঘটনা নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে সবত্র।এমন ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে শুক্রবার দুপুরে শাসকদলের মহিলা নেত্রী ও তার লোকজনের হাতে এমনভাবে আক্রান্ত হবার খবর পেতেই তাঁদের পাশে দাড়ান বালুরঘাটের বিজেপির সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। আক্রান্ত স্বর্ণপদক জয়ী মহিলা সাইক্লিষ্ট কেয়া রাজবংশীর সাথে হাসপাতালে দেখা করেন তিনি।সেখানে সাংসদের পাশাপাশি তপনের বিধায়ক বুধরাই টুডু ,বিজেপির জেলা সভাপতি বিনয় বর্মন, মহিলা নেত্রী চন্দনা রাজবংশীদের সঙ্গে নিয়ে গিয়ে যান।এর পরেই সামাজিক দুরত্ববিধি মেনেই থানার সামনে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভে সামিল হন তারা।যান আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের বোরডাঙ্গী এলাকার বাড়িতেও৷

আক্রান্ত বিজেপি নেত্রী তথা মহিলা টাউন মন্ডলের সাধারন সম্পাদিকা চন্দনা রাজবংশী অভিযোগ করে বলেন,বিজেপি দলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছি বলেই এমন ঘটনা ঘটানো হল। দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাই। বিজেপি সাংসদ বালুরঘাট লোকসভা সুকান্ত মজুমদার ও জেলা বিজেপির সভাপতি বিনয় বর্মন জানিয়েছেন,এমন ঘটনা মেনে নিতে পারেনি তাই দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবার জন্য বিক্ষোভে সামিল হয়েছি।

এই ঘটনা নিয়ে বিজেপির আন্দোলনের খবর পেতেই তৃণমুলের তরফে ঘটনার খোজ খবর দিতে বোরডাঙ্গীতে ছুটে আসেন জেলা তৃণমুলের সভাপতির নির্দেশে তৃণমুল নেত্রী ললিতা টিপ্পা, জেলা তৃণমুল নেতা আনন্দ দাস,গঙ্গারামপুর টাউন মহিলা তৃণমুল কংগ্রেস সভাপতি সম্পা ঘোষ(বিশ্বাস),তৃণমুলের রাকেশ পন্ডিত, প্রবীর ঘোষ, নবীন দাস,সহ আরো অনেকেই।
জেলা পরিষধের সহকারি সভাধিপতি তথা মহিলা তৃণমুল নেত্রী ললিতা টিপ্পা জানিয়েছেন, পারিবারিক একটি ঘটনাকে বিজেপি রাজনীতির রং লাগাতে চাইছে। সেই কারনেই কর্মীদের পাশে দাঁড়ানো হল। আমরা কর্মীদের সঙ্গে থাকব।
অভিযুক্ত প্রাপ্তন কাউন্সিলার তথা মহিলা তৃণমুল নেত্রী শিক্ষিকা দেবযানী দত্ত দেসরকার জানিয়েছেন,শান্তিপুর্ণভাবে সালিশি সভা হচ্ছিল। সেখানে বিজেপি গোলমাল পাকিয়ে নোংরা রাজনীতি করছে।
এমন ঘটনার নিন্দা জানাই। আইনকে বুড়ো আঙ্গুন দেখিয়ে কোন এলাকায় প্রাক্তন কাউন্সিলার তথা মহিলা তৃণমুল নেত্রী শিক্ষিকা কি এমন সালিশি সভা করতে পারেন সেই প্রশ্ন উকি দিচ্ছে সবত্র।পুরো ঘটনায় শোরগোল পড়েছে এলাকাজুড়ে।