পিন্টু কুন্ডু , বালুরঘাট, ২৫ জানুয়ারী––– বই মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন খোদ রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী । সোমবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটে ২৫তম বই মেলার উদ্বোধন করতে এসে মঞ্চে দাড়িয়ে এমনই জোড়ালো বক্তব্য রাখেন মন্ত্রী। বই পড়বার গুরুত্ব বোঝাতে এদিন তিনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, কোন ইমেল বা কোন মোবাইল নিয়ে নয়, বই পড়েই তিনি বিদ্যাসাগর হয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও পুথি পড়েই রবীন্দ্রনাথ হয়েছিলেন। দ্বিতীয় কোন রবীন্দ্রনাথ আর তৈরি হয়না। কেননা এখন পড়াশুনাও নেই, সংস্কৃতি বা ভাবনা কিছুই নেই। খোদ রাজ্যের একজন মন্ত্রীর এমন বক্তব্যে যথেষ্টই আলোড়ন ছড়িয়ে পড়ে।
২৫ শে জানুয়ারী থেকে শুরু হওয়া বালুরঘাট হাইস্কুল মাঠের এই বই মেলা চলবে ৩০ শে জানুয়ারী পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ১২ টা থেকে রাত্রি ৯ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে এই মেলা । এদিন ফিতে কেটে ও প্রদীপ জ্বালিয়ে বই মেলার উদ্বোধন করেন রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী । যেখানে অনান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা শাসক নিখিল নির্মল, জেলা পুলিশ সুপার দেবর্ষী দত্ত, জন শিক্ষা প্রসার দপ্তরের যুগ্ম সচিব ভারতী ঘোষ মাইতি প্রমুখ ।
এদিন মন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, ‘বই হল মানুষের জীবনের খাদ্য। সভ্য সমাজ বই বাদ দিয়ে বাচতে পারে না। যতই কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ইমেল থাকুক না কেন, বই হলো আপনার হাতেখড়ি। বই বাদ দিয়ে আপনি কম্পিউটার চিনতেন না । বই কে বাদ দিয়ে লেখা পড়া শেখা যাবে না । তিনি বলেন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলার মাটিতে আর জন্মাই নি । লেখা পড়া করে পুথি ধরেই তিনি বিদ্যাসাগর হয়েছেন । রবীন্দ্রনাথকেও আমরা স্মরণ করি লেখাপড়ার জন্য । তাঁর পরেই মন্ত্রী বলেন, দ্বিতীয় রবীন্দ্রনাথ জন্মান না কেন ? পড়াশুনা নেই, সংস্কৃতি নেই, ভাবনাও নেই । স্বামীজী, নজরুল সহ বড়বড় পীড় আলমদের কথাও তুলে ধরেন গ্রন্থাগার মন্ত্রী । তিনি বলেন, লেখা পড়া ছাড়া সমাজের পরিবর্তন আসতে পারে না । এদিন বই মেলার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, আগে বই মেলায় আসতে গেলে পয়সা দিয়ে টিকিট কেটে আসতে হত । আমরা ২০২০ সালে নিশুল্ক ভাবে বইমেলায় প্রবেশের অধিকার জনগণকে দিয়েছি । গ্রহ্নাগারের সদস্যপদ নিতে হলে আগে পয়সা দিয়ে নিতে হত । কিন্তু তাদের সরকার নিশুল্ক ভাবে সদস্যপদের ঘোষণা করেছেন । এছাড়াও এখন থেকে সদস্যদের জন্য আলাদা আলাদা ভাবে চারটি গ্রুপে পরিচয় পত্র তৈরীর কথাও এদিন বলেছেন সিদ্দিকুল্লহা চৌধুরী । এই জেলায় বই ধর বই পড় প্রকল্পে সাড়ে দশ হাজার সদস্য পদ দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন গ্রহ্নাগার মন্ত্রী । অনুষ্ঠান শেষে এবারের বিধানসভা নির্বাচনে মিমের প্রার্থী পদ নিয়ে মন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, বাংলার মানুষ এত বোকা না যে, ধর্মের নামে ভোট দেবেন । আমরা সকলে এক সাথে থাকবো ।