‘বাম্পের রাজত্ব’! দক্ষিণ দিনাজপুরে রাস্তায় মৃত্যুফাঁদ, আতঙ্কে পথচারীরা

0
220

‘বাম্পের রাজত্ব’! দক্ষিণ দিনাজপুরে রাস্তায় মৃত্যুফাঁদ, আতঙ্কে পথচারীরা

বালুরঘাট, ২ এপ্রিল —– সড়ক নয়, যেন ধাপে ধাপে বিপদের মঞ্চ! দক্ষিণ দিনাজপুরের বিভিন্ন প্রান্তে একের পর এক বাম্প বসানোয় ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা জেলা। কেউ বলছেন, “এখন আর রাস্তা চলে না, ঝাঁকুনির উৎসবে নাচতে হয়!” কেউ কটাক্ষ করে নামই দিয়ে দিয়েছেন ‘বাম্পের জেলা’!

জেলার প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে এই বাম্পের ছড়াছড়ি। কোথাও ১০০ মিটারের মধ্যেই দু’টি, কোথাও আবার একটার পর একটা এতটাই কাছাকাছি যে, মনে হবে গাড়ির নয়, ঘোড়ার গাড়ির পথ!

প্রশাসনের দাবি, দুর্ঘটনা কমাতেই রাজ্য সড়ক ও পকেট রুট থেকে জাতীয় সড়কে ওঠার মুখে একাধিক বাম্প বসানো হয়েছে। বালুরঘাট ট্রাফিক আইসি অরুণ তামাং বলছেন, “টোটো, বাইক নিয়ন্ত্রণ করতেই এই সিদ্ধান্ত। অতিরিক্ত গতি কমাতে না পারলে আরও দুর্ঘটনা ঘটত।”

কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন! কারণ এই বাম্পগুলোর বেশির ভাগই কোনও বৈজ্ঞানিক পরিকল্পনা ছাড়াই বসানো। ফলে দিনেও চালকদের চালানো দায়, আর রাতে? চোখে না পড়া মাত্রই গাড়ি লাফিয়ে উঠছে, দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েই চলেছে।

সবচেয়ে বেশি বিপাকে হাসপাতালে যাওয়া রোগীরা। বালুরঘাট, তপন, কুমারগঞ্জ, গঙ্গারামপুর, বংশীহারি— সর্বত্রই বাম্পের দাপট! কোনও কোনও জায়গায় হাসপাতালে পৌঁছতে গড়ে ১৫-২০ মিনিট বেশি সময় লাগছে। অ্যাম্বুল্যান্স চালকরাও রীতিমতো অসহায়। এক চালক বললেন, “গর্ভবতী মহিলা নিয়ে যাচ্ছিলাম, হঠাৎ এক বাম্পে পুরো গাড়িটাই লাফিয়ে উঠল! ভাবুন, ওই রোগীর কী অবস্থা হয়েছিল?”

সাধারণ মানুষের রাগ ফুটে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কেউ লিখছেন, “বাম্প না পেরোলে দক্ষিণ দিনাজপুরে এখন নিত্যযাত্রা অসম্পূর্ণ!” কেউ বলছেন, “এভাবে চললে জেলার প্রতিটি মানুষের স্পন্ডিলোসিস হয়ে যাবে!”

প্রশাসন এখনো নিজেদের অবস্থানে অনড়। তাঁদের যুক্তি, বাম্প না থাকলে আরও ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটত। তবে প্রশ্ন থেকেই যায়— নিরাপত্তা না বিপদ? দুর্ঘটনা কমানোর চেষ্টাই যদি নতুন দুর্ঘটনার কারণ হয়, তাহলে দায় নেবে কে?

বাম্প থাকুক, কিন্তু চিহ্নিতকরণ ও সঠিক পরিকল্পনা ছাড়া নয়! রাস্তার উপর সঠিক আলোর ব্যবস্থা, বোর্ড, সাবধানবাণী— এসব ছাড়া বাম্প মানেই ফাঁদ! সাধারণ মানুষের সাফ কথা, বেপরোয়া গতি কমাতে হবে, তবে মানুষের জীবন ঝুঁকিতে ফেলে নয়!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here