‘বহিরাগত’ তকমা! দলের প্রচারে গিয়ে ছাত্র নেতাদের ধাক্কাধাক্কির মুখে খোদ জেলা তৃণমূল ছাত্র সভাপতি

0
40

‘বহিরাগত’ তকমা! দলের প্রচারে গিয়ে ছাত্র নেতাদের ধাক্কাধাক্কির মুখে খোদ জেলা তৃণমূল ছাত্র সভাপতি, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে তুমুল উত্তেজনা বালুরঘাট কোয়েড কলেজ

বালুরঘাট, ২৯ অক্টোবর —— তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি, অথচ তকমা ‘বহিরাগত’! বুধবার দুপুরে বালুরঘাট কোয়েড কলেজে এমন দৃশ্য দেখল দক্ষিণ দিনাজপুর, যা রাজ্যের ছাত্র রাজনীতিতে নয়া নজির গড়ল—এমনটাই বলছেন রাজনৈতিক মহল। এদিন দুপুরে কলেজে পা রাখতেই জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নবনিযুক্ত সভাপতি সৃঞ্জয় সান্যালকে ঘিরে ধাক্কাধাক্কি, বচসা, উত্তেজনা—এমনকী বাধা দেওয়া হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি-সংবলিত “আমি বাংলার ডিজিটাল যোদ্ধা” প্রচারের ফ্লেক্স লাগাতেও।

সূত্রের খবর, বুধবার দুপুরে কয়েকজন অনুগামীকে নিয়ে কলেজে পৌঁছন সৃঞ্জয়বাবু। উদ্দেশ্য—‘ডিজিটাল যোদ্ধা’র প্রচার শুরু করা। কিন্তু প্রবেশমুহূর্তেই কলেজ ইউনিটের একাংশ টিএমসিপি নেতারা তাঁকে ‘বহিরাগত’ বলে ভিতরে ঢুকতে বাধা দেন। সেখান থেকেই শুরু তীব্র বচসা, তারপর ধাক্কাধাক্কি। মুহূর্তে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কলেজ চত্বর। শেষমেশ পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছায় যে গেটের বাইরে দাঁড়িয়েই একাংশ সমর্থকের হাত থেকে সংবর্ধনা নিতে হয় তাঁকে। খোদ দলের একাংশ ছাত্র নেতাদের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে সৃঞ্জয়বাবু বলেন, “আমি নিজের দলের দায়িত্ব পালন করতে গিয়েছিলাম। অথচ কিছু ছাত্র নেতা ধাক্কাধাক্কি করেছে, ফ্লেক্স টাঙাতে বাধা দিয়েছে। বিষয়টি উচ্চ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। দলীয় শৃঙ্খলা ভাঙার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অন্যদিকে, বালুরঘাট কলেজ ইউনিটের সভাপতি পরিতোষ শীল অবশ্য এই ঘটনাকে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ বলে দাবি করেছেন। তাঁর বক্তব্য, “জেলা সভাপতির কলেজে আসার কথা সেভাবে কাউকে জানানো হয়নি। তাই প্রথমে বাধা দেওয়া হয়। পরে আলোচনা করে পরিস্থিতি মিটিয়ে ফেলা হয়েছে।”

তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ঘটনাটি নিছক ভুল বোঝাবুঝি নয়। অমরনাথ ঘোষকে সরিয়ে নতুন সভাপতি হিসেবে সৃঞ্জয় সান্যালের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সংগঠনের ভিতরে অস্বস্তি ছড়িয়েছিল। এদিন তারই বহিঃপ্রকাশ দেখা গেল কলেজের গেটে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক প্রবীণ নেতা কটাক্ষ করে বলেন,“যেখানে নিজেদের জেলা সভাপতিকে কলেজে ঢুকতে দেওয়া হয় না, সেখানে শত্রু খুঁজতে বাইরে যেতে হয় না।”

দিনের শেষে কলেজ চত্বরে উত্তেজনা কমলেও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ভেতরে যে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে, তা আর লুকোনো যাচ্ছে না। বালুরঘাট কলেজের গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে যখন জেলা সভাপতি সংবর্ধনা নিচ্ছেন—ঠিক তখনই জেলার ছাত্র রাজনীতিতে যেন লেখা হচ্ছিল এক নতুন বার্তা। দল বদলায়, নেতৃত্ব বদলায়—কিন্তু দ্বন্দ্বের চেহারা একই থেকে যায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here