বইয়ের পাতায় নয়, কল্পনার পাখায়’—খরাইলের বিজ্ঞানমেলায় শিশু বিজ্ঞানীদের মনে আগামী ভারতের ছায়াপাত
বালুরঘাট, ২৪ জুলাই —–কাল্পনিক নয়, ভবিষ্যতের বাস্তব ছবি যেন ফুটে উঠল বালুরঘাটের সরস্বতী শিশু বিদ্যামন্দিরের বিজ্ঞানমেলায়। খরাইলের শান্তগ্রামে হঠাৎই যেন নেমে এল বিজ্ঞানমন্ত্রের রোশনাই। ছোট ছোট হাতে গড়া মডেলের মধ্য দিয়ে এক একটি শিশুমন রাঙিয়ে তুলল আগামী ভারতের স্বপ্ন।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ জুড়ে উৎসবের আবহ। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে যে বিজ্ঞান মেলার উদ্বোধন করেন ললিত মোহন হাইস্কুলের শিক্ষক পুলক চৌধুরী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিদ্যালয় পরিদর্শক জ্যোতির্ময় সিনহা সহ জেলার বিশিষ্ট মুখেরা।
এই মেলায় চতুর্থ থেকে সপ্তম শ্রেণির ৩৩টি বৈজ্ঞানিক প্রকল্প যেন শুধুই প্রদর্শন নয়—ছিল প্রত্যেকটি চিন্তার গভীরতা, সমস্যার সমাধান খোঁজার স্পষ্ট অভিপ্রায়। কৃষিভিত্তিক প্রযুক্তি, সৌরশক্তি সংরক্ষণ, জলের অপচয় রোধ, দূষণবিরোধী ব্যবস্থা—সবই শিশুদের মডেলে প্রতিফলিত হয়েছে অবাক করা সাবলীলতায়।
শুধু তাই নয়, দক্ষিণ দিনাজপুর কুইজ অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে বিজ্ঞান কুইজও চলেছে তুমুল প্রতিযোগিতায়—পাঠ্যপুস্তকের গণ্ডি ছাপিয়ে প্রশ্ন-উত্তরের মধ্যে দেখা যায় বৈজ্ঞানিক ভাবনার সাহসী উত্তরণ।
বিদ্যালয়ের প্রধান আচার্য উত্তম কুমার সরকার বলেন, “এই মেলায় ভবিষ্যতের চিন্তাবিদেরা নিজেদের প্রথম পদক্ষেপ ফেলেছে। ওরা শুধু বিজ্ঞান শিখছে না—সমাধান খুঁজতে শিখছে।”
অন্য এক শিক্ষক টিঙ্কু দাস জানালেন, “বাঙালি বিজ্ঞানীদের অবদান স্মরণ করেই আমরা চাইছি শিশুরা বিজ্ঞানের ভাষা আপন করে নিক, ভয় নয়—ভালোবাসা থেকে।”
এদিন শ্রেষ্ঠ মডেলকে দেওয়া হয় পুরস্কার। তবে মঞ্চে যারাই উঠেছে, তাদের চোখেই লেখা ছিল গর্ব, আত্মবিশ্বাস আর এক আশ্বাস—“আমরাও পারি, আমরা পারব।”
শিক্ষার এই যাত্রা শুধুই এক দিনের মেলা নয়—এ যেন আলোর বীজ বোনা এক ভবিষ্যতের উৎসব।