প্রেমিকের ভাইকে খুনের ঘটনায় ৭২ঘণ্টার মধ্যেই মালদার যুবককে গ্রেফতার করল হরিরামপুর থানার পুলিশ, আদালতের নির্দেশে অভিযুক্তকে দেওয়া হল দু-দিনের পুলিশি হেফাজতে
শীতল চক্রবর্তী বালুরঘাট ৯মে দক্ষিণ দিনাজপুর।জিমেন টুডুর হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত হেমন্ত মুর্মুকে ৭২ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার করলো হরিরামপুর থানার পুলিশ।বৃহস্পতিবার রাতে মালদা থানার পুলিশের সহযোগিতায় হরিরামপুর থানার পুলিশ অভিযুক্ত হেমন্ত মুর্মুকে মালদার পিপড়াগ্রাম থেকে গ্রেফতার করে হরিরামপুর থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।শুক্রবার দুপুরে পুলিশ তাকে সাত দিনের তাদের হেফাজত চেয়ে গঙ্গারামপুর মহকুমা আদালতে পাঠালে বিচারক পুলিশকে দুই দিনের হেফাজত মঞ্জুর করে। তিনদিন আগে হরিরামপুর থানার পুন্ডরী গ্রাম পঞ্চায়েতের মিশনপাড়ার বাসিন্দা জিমেন টুডুর বাড়িতে গিয়ে ধারালো দিয়ে আহত করে অভিযুক্ত হেমন্ত মুর্মু পালিয়ে যায়।তার বাড়ি মালদা জেলার হব্বিপুর থানার নিয়মতপুর বুলবুলচন্ডী এলাকায়। হরিরামপুর থানার পুলিশ গোপন সূত্রের খবর পেয়ে যে,মালদা থানার একটি জায়গাতে অভিযুক্ত হেমন্ত মুর্মু পালিয়ে রয়েছে।পরে পুলিশ মালদার পিপড়াগ্রাম থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে হরিরামপুর থানার নিয়ে আসে পুলিশ।শুক্রবার পুলিশ সাত দিনের নিজেদের হেফাজতে চেয়ে গঙ্গারামপুর মহকুমা আদালতে পাঠালেও বিচারক দুদিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেন। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান,প্রণয় ঘটিত কারণে প্রেমিকের ভাইকে ওই যুবক খুন করে বলে অভিযোগ উঠে। মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে,মালদা জেলার নিয়ামতপুর বুলচন্ডী এলাকার বাসিন্দা হেমন্ত সরেন তার প্রেমিকা স্বর্ণলতা সরেনের পুন্ডরী গ্রাম পঞ্চায়েতের মিশনমোড়ে একটি শ্রাদ্ধ বাড়ির অনুষ্ঠানে এসেছিল গত সোমবার রাতে।সেখান থেকে সে রাতের অন্ধকারে স্বর্ণলতা সরেনের ঘরের মধ্যে খাটের নিচে লুকিয়ে ছিল।এদিকে স্বর্ণলতা সরেনের ভাই জিমেন রাত্রি তার বাড়িতে একটি ঘরে শুয়েছিল।অপর দিকে স্বর্ণলতা সরেন রাতের খাবার শেষে নিজের ঘরে শুতে যায়।ঘরের মধ্যে আলো জ্বালাতেই খাটের নিচে দেখতে পায় কে যেন লুকিয়ে রয়েছে সেখানে।তখন স্বর্ণলতা চোর চোর বলে চিৎকার শুরু করলে পাশের ঘর থেকে তার ভাই জিমেন ছুটে আসে।তখন জিমেন দেখতে পায় খাটের নিচে হেমন্ত লুকিয়ে রয়েছে।এমন সময় ঘরের খাটের নিচ থেকে বের হয়ে জিমেনের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে হেমন্ত বলে খবর। অভিযোগ,”হঠাৎ করেই স্বর্ণলতা সরেনের উপরে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে হেমন্ত।তখন জিমেন তার দিদিকে বাঁচাতে গেলে হেমন্তর হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র জিমেনের উপর চালিয়ে দিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ।ঘটনায় জিমেন কোন মতে গুরুতর আহত অবস্থায় বাড়ির পাশে একটি দোকানের সামনের রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ি থেকে বের হয়ে আত্মনাদ করতে থাকে।পরে তাকে গ্রামবাসীরা প্রথমে রশিদপুর ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও পরে গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান,অভিযুক্ত যুবক বিদেশে শ্রমিক সরবরাহকারী ঠিকাদার হিসেবে কাজ করত।সেখানেই স্বর্ণলতা হেমরম সঙ্গে তার প্রণয় ঘটিত সম্পর্ক তৈরি হয় ।এমনকি স্বর্ণলতা সরেনকে হেমন্ত মুর্মু জানায় সে অবিবাহিত একজন যুবক। মৃতের পরিবার সূত্রের খবর, হেমন্ত কাছ থেকে স্বর্ণলতা সরেন বেশ কয়েক লক্ষ টাকাও নিয়েছিল।স্বর্ণলতা সরেন বাড়িতে ফিরে এসে জানতে পারে হেমন্ত মুর্মু বিবাহিত ও তার ছেলে রয়েছে।এরপরেই স্বর্ণলতা হেমন্তর সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে বলে খবর।বহুদিন পরে স্বর্ণলতার সঙ্গে গোপনে দেখা করতে তার বাড়িতে গিয়েছিল হেমন্ত বলে খবর। মৃতের স্ত্রী জানিয়েছেন”যেভাবে স্বামীকে খুন করেছে , পুলিশ তাকে ফাঁসি সাজা দেবে সেই দাবি জানাই।” গঙ্গারামপুরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দ্বীপায়ন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন,”খুনের ঘটনায় হবিরামপুর থানার পুলিশ মালদা থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে শুক্রবার আদালতে পাঠিয়েছে।অভিযুক্তকে দুদিনের পুলিশি হেফাজত দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফে। পুলিশের এমন কাজকে সকলেই সাধুবাদ জানিয়েছেন।