শীতল চক্রবর্তী হরিরামপুর২আগষ্ট দক্ষিণ দিনাজপুর-গরীব মানুষজনদের জমানো সমবায়ের প্রায় 67লক্ষ টাকা নয়ছয় করায়, সেই টাকা ফেরতের দাবিতে আন্দোলনে নামল সমবায়ের বাকি সদস্যরা। কৃষি সমবায়ের সম্পাদক থাকা কালীন তৃণমুল নেতা তথা প্রাক্তন সমবায়ের সম্পাদক নারায়ন সরকার ওরফে নকুল দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুর ব্লকের শিরষী গ্রাম পঞ্চায়েতের মুলাহার সমবায়ের জমানো টাকা সম্পাদকের পদের অপব্যবহার করে সেই টাকা নয়ছয় করেছে বলে অভিযোগ বাকি সদস্যদের।টাকা ফেরতের দাবিতে বাকি সমবায়ের সদস্যরা উচ্চ আদালত থেকে শুরু করে গঙ্গারামপুরের মকুমা আদালতে মামলা পর্যন্ত করেন নারায়ন সরকার ওরফে নকুল এর নামে।টাকা ফেরত দেওয়া সহ বাকি সদস্যরা নারায়ন সরকার (নকুল)এর গ্রেফতারের দাবিতে সোমবার দুপুরে হরিরামপুরে অবস্থান বিক্ষোভ করে আন্দোলনে নামেন হরিরামপুর এলাকায় ।রাজ্যের কৃষি ও সমবায় মন্ত্রী জানিয়েছেন, বিষয়টি খোজ নিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।যদিও অভিযুক্ত ঋণ খিলাপি করে ব্যাঙ্কের সঙ্গে প্রতারণা করা অভিযুক্ত জানিয়েছেন ,যারা এমন করছে তাঁরা বিজেপির লোক। আমি টাকা ফেরত দিয়েছি,আদালতে বিষয়টি চলছে।এমন ঘটনায় ফের হরিরামপুরে শোরগোল পড়েছে।

হরিরামপুর ব্লকের শিরষী গ্রাম পঞ্চায়েতের দানগ্রাম এলাকার কৃষকদের সুবিধায় ১৯৫০ সালে মুলাহার এলাকায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি লিমিটেড বি.ডি.পি মাধ্যমে সমবায় সমিতির ব্যাঙ্কের শাখা খোলা হয়। দানগ্রাম এলাকার তৃণমুল নেতা নারায়ণ সরকার ওরফে নকুল মুলাহার সমবায় সমিতির সম্পাদক পদে বসেন ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত।এই সমবায় সমিতিতে প্রায় ৯৯৯জন গরীব আদিবাসী সংখ্যালঘু পরিবারের মানুষজন গ্রাহক রয়েছেন। তারাই সেখান থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করবেন বলে এই সমিতি খোলা হয়েছিল।

সমবায় সমিতি সুত্রে খবর, নারায়ন সরকার ওরফে নকুল গত ২০০৯ সাল থেকে ৫১০০০ ১০৫ নম্বর চেক সহ প্রায় ৯টি চেক দিয়ে ১০/১১/২০১৭ সাল পর্যন্ত ৩৪লক্ষ ০২হাজার ৯১২টাকা ঋণ নিয়েছেন ওই ব্যাস্ক থেকে। সেই টাকা ব্যাস্কে এই কয়েক বছরে নারায়ন সরকার ওরফে নকুলের সুদ সহ হয়েছে আরো 33লক্ষ ৩৩হাজার ৬৯৪টাকা। সব মিলিয়ে ২০/০৭/২০২১ পর্যন্ত নারায়ণ সরকার ওরফে নকুলের কাছে ব্যাঙ্কের পাওনা টাকার পরিমান ৬৭লক্ষ ৩৬হাজার ৬০৬টাকা বলে যানা গিয়েছে। নারায়ণ সরকার ওরফে নকুল এত পরিমানে টাকা সেখান থেকে তুলে সেই ব্যাস্কটিকে কার্যত বন্ধ
করে দেবার মত পরিস্থতি তৈরি করে ফেলেছেন বলে অভিযোগ বাকি সদস্যদের।

জমানো টাকা ফেরতের জন্য আদিবাসী থেকে সংখ্যালঘুরা সকলেই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে চাপ দিতে থাকেন।এর ফলেই নারায়ন সরকার নকুলের কাছে ঋণের টাকা ফেরতের জন্য বাকি সদস্যরা আন্দোলন শুরু করেন৷গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এলাকার তৃণমুল নেতা নারায়ণ সরকার ওরফে নকুল এর স্ত্রীকে শিৱষী গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের প্রধান করা হয়। অভিযোগ, ব্যাঙ্কের তরফে এই তৃণমূল নেতার কাছে বারবার টাকার ফেরতের জন্য বলা হলে সেই টাকা তিনি দিতে রাজি ছিলেন না বলে অভিযোগ করেন বাকি সদস্যরা।

মূলাহার সমবায় ব্যাঙ্কের নারায়ন সরকার ওরফে নকুলের পরে সম্পাদক হওয়া সামিম হাসন অভিযোগ করে বলেন, প্রায় 67লক্ষ টাকা নকুল সরকারের কাছে পাবে ব্যাঙ্ক।সেই টাকা ফেরত পাবার জন্য আন্দোলনে নেমেছি৷গবীর জনগনের টাকা ফেরত দিতে হবে তারাও চাপ দিচ্ছে। সমস্ত জায়গায় লিখিত অভিযোগ করেছি। নারায়ণ সরকার ওরফে নকুলের গ্রেফতারের দাবি জানাই।

মুলাহার সমবায়ের সদস্য হাবল রায় ও সমবায় বাঙ্কের মহিলা সদস্য অভিযোগ করে বলেন ৩৪লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিল, সেই টাকা সুদ সহ হয়েছে ৬৭লক্ষ টাকার উপরে হয়েছে।নারায়ন সরকার ৫বছর ধরে সেই টাকা নিলেও ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছে।কোলকাতা হাইকোর্টে মামলা করার পরেও সেই টাকা ফেরত দিচ্ছে না সে৷তাঁর গ্রেফতারের দাবি জানাই। সমবায় সমিতি শেষ করে দিয়েছেন তিনি।
রাজ্যের কৃষি ও বিপনন মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র জানিয়েছেন ,বিষয়টি খোজ নিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হরো ।
যদিও অভিযুক্ত ঋণ খিলাপি নারায়ণ সরকার ওরফে নকুল নামে অভিযুক্ত জানিয়েছেন, যারা এমন করছে তাঁরা বিজেপির লোক।আমি ঋণের টাকা ফেরৎ দিয়েছি। তাছাড়া বিষয়টি আদালতে চলছে। আমার নামে বদনাম করা হচ্ছে।

নারায়ন সরকারের নামে বার বার এমন অভিযোগ ওঠার পরেও তৃণমূল দল থেকে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন সেই প্রশ্ন তুলেছেন সকলেই।
এমন ঘটনায় শোরগোল পরেছে হরিরামপুর সহ জেলাজুড়ে ।