প্রশাসনের লিখিত আশ্বাসের একবছর পরেও কুমারগঞ্জে হয়নি পাকা রাস্তা, গাছের গুড়ি ফেলে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ বাসিন্দাদের।

0
1071

প্রশাসনের লিখিত আশ্বাসের একবছর পরেও কুমারগঞ্জে হয়নি পাকা রাস্তা, গাছের গুড়ি ফেলে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ বাসিন্দাদের। ছয় ঘন্টার অবরোধে দূর্ভোগে সাধারণ মানুষ

পিন্টু কুন্ডু , বালুরঘাট, ১৪সেপ্টেম্বর— প্রশাসনের লিখিত আশ্বাসের একবছর পরেও গ্রামের একমাত্র চলাচলের রাস্তা তৈরি হয়নি কুমারগঞ্জে। স্বাধীনতার ৭৩ বছর পরেও পাকা রাস্তার স্বাদ মেলেনি সাতটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের। গ্রামে যাওয়ার মাত্র তিন কিমি রাস্তা পাকা না হওয়ায় বালুরঘাট-গাজোল  ৫১২  জাতীয় সড়কের বোল্লা মোড়ে গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ করে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ক্ষুদ্ধ গ্রামবাসীরা। তীর, ধনুক হাতে রাস্তায় নামেন এলাকার আদিবাসী মানুষেরাও। জাতীয় সড়কে বসে পড়ে পাকা রাস্তার দাবিতে সরব হন মহিলারাও। সোমবার সকাল থেকে এই ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে বালুরঘাটের বোল্লা এলাকায়।  খবর পেয়ে পুলিশ, বিডিও এবং মহুকুমা শাসকের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরা এলাকায় পৌছালেও অবরোধ তুলতে রাজি হয়নি ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ২০১৭ সালে তারা একই দাবিতে এই জায়গাতেই  রাস্তা অবরোধ করার সময় কুমারগঞ্জের বিডিও এসে রাস্তা পাকা করবার আশ্বাস দিয়েছিলেন, কিন্তু রাস্তা পাকা হয়নি আজো। পরে আবারও গ্রামবাসিরা একই দাবিতে ২০১৯ সালে এই রাস্তা অবরোধ করতে বাধ্য হন।  সে সময় প্রথমে বিডিও ও পরে এসডিও এসে গ্রামবাসিদের তিনমাসের মধ্যে রাস্তা পাকা করবার আশ্বাস দিলেও গ্রামের মাত্র তিন কিমি রাস্তা কাচাই থেকে গেছে।  টানা বর্ষায় বেহাল অবস্থা হয়ে দাড়িয়েছে সেই রাস্তার। আর যার প্রতিবাদেই এদিন সকাল থেকে  জাতীয় সড়ক অবরোধ চলায় গ্রামবাসীরা। যার জেরে দীর্ঘ ছঘন্টা রাস্তায় আটকে চরম দুর্ভোগে পড়েন  সাধারন ও নিত্য যাত্রীরা।  

    জানাগেছে কুমারগঞ্জ ব্লকের দিওড় গ্রাম পঞ্চায়েতের বোল্লা থেকে চৌষা অবধি ভায়া রসুলপুর,  এই তিন কিমি পথ দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই বেহাল অবস্থায় রয়েছে। এলাকায় আইসিডিএস সেন্টার থেকে শিশু শিক্ষা কেন্দ্র সবই রয়েছে। চৌষা,রসুলপুর, মহাদেবপুর,বারাইল,নদিপুর সহ ৭-৮ টা গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের চলাচলের এই একমাত্রই রাস্তা। অল্প বৃষ্টিতেই যেন কাদা জলে ডুবে থাকে এলাকা। যে রাস্তার সমস্যা জানিয়ে বার বার প্রশাসনের নিকট আবেদন নিবেদন জানিয়েও কোন ফল পাননি। কোন এক অদৃশ্য কারনে বার বার প্রতিশ্রুতি পাওয়া সত্বেও আজও তা পাকা রাস্তার রুপ পায় নি বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের।  টানা বর্ষায় গ্রামবাসিদের চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হলেও হেল দোল নেই প্রশাসনের। সেই কারনেই তাদের দাবি পুরনের জন্য  ভিন্ন কোন পথ না পেয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। সকাল থেকে এই অবরোধের জেরে নাজেহাল হয়ে পড়েন পথচলতি মানুষেরা। পরে ফের একবার প্রশাসনের তিন মাসের রাস্তা তৈরির আশ্বাসে ছয় ঘন্টা পর অবরোধ তোলেন গ্রামবাসীরা।
 অবরোধ চলাকালীন ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা প্রশাসনের দুই আধিকারিক,  কুমারগঞ্জের বিডিও ও বালুরঘাটের মহুকুমা শাসকের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদ্বয়কে এব্যাপারে  সংবাদ মধ্যম প্রশ্ন করে বিষয়টি জানতে চাইলে তারা কেউ সংবাদ মধ্যমের কাছে মুখ খুলতে চায় নি। তাদের বক্তব্য যা বলার জেলা শাসক বলবেন। ওদিকে ঘটনাস্থল থেকে জেলা শাসকের বক্তব্য জানার জন্য তার দপ্তরে এলে জানা যায় জেলা শাসক নিখিল নির্মল প্রশাসনিক বৈঠকে ব্যাস্ত রয়েছেন।  
  নেমলি তিরকী, গোপাল সরকার, সুনীল চক্রবর্তী ও স্বপন সরকাররা অভিযোগ করে বলেন, ভোট যায় ভোট আসে নেতা মন্ত্রী থেকে দপ্তরের আধিকারিকদের হাজারও আশ্বাস সত্বেও  আজ তাদের গ্রামের মাত্র তিন কিমি রাস্তা সেই কাচা কাচাই থেকে গেছে। পাকা রাস্তার মুখ  আর গ্রাম বাসিদের দেখা আজও সম্ভব হয় নি। রাতবিরেতে রাস্তার জন্য অসুস্থ রোগীদের ঘাড়ে করেই পারাপার করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here