পুলিশ নয়,ব্যবসায়ীর বুদ্ধিতেই বড়সড ছিনতাইয়ের হাত থেকে বাঁচলেন এক ব্যবসায়ী,চিৎকার করে লোকজন জড়ো করে অভিযুক্তকে মারধর দিয়ে এলাকাবাসীরা তুলে দিলেন থানা পুলিশের হাতে, পুলিশের ভূমিকায় নিন্দায় সকলেই,ক্ষোভ এলাকাজুড়ে
শীতল চক্রবর্তী ,গঙ্গারামপুর ,28 জুন, দক্ষিণ দিনাজপুর:——ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই করতে এসে ওই ব্যবসায়ীর বুদ্ধিতেই এলাকাবাসীরা অভিযুক্ত যুবককে ধরে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিল। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর হাইরোডের পেট্রোল পাম্পের পাশে।অভিযুক্ত ছিনতাইকারী যুবক ব্যাবসায়ীর চোখে মুখে স্প্রে করে অজ্ঞান করার পর তার কাছে থাকা টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনায় ছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীর মুখে স্পে করতেই রুমাল দিয়ে তিনি তাঁ মুছে ফেলেন এর পরেই ব্যাবসায়ীর ব্যাগ ধরে টান দেয় দুষ্কৃতিকারী।শেষ পর্যন্ত ওই ব্যবসায়ীর বুদ্ধি করে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করলে অভিযুক্তকে ধরে এলাকাবাসীরা পুলিশের হাতে তুলে দেয়।খোদ শহরের বুকে এমন চুরির ঘটনায় গঙ্গারামপুর থানা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা সমিতিও। ব্যাবসায়ী সমিতির অভিযোগ ,পুলিশ ব্যবসায়ীদের কোন নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পারছে না। পুলিশ প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনে নামা হতে পারে। পুলিশ বলছে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এমন ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়েছে এলাকাজুড়ে।
পুলিশ জানিয়েছে ধৃত ওই অভিযুক্ত যুবকের নাম ,তার বাড়ি এলাকায়। গঙ্গারামপুর হাইরোড এলাকার তপন রোডে মুদিখানার হোলসেলের দোকান রয়েছে সমীর রায় নামে দত্তপাড়া এলাকার এক ব্যবসায়ীর। গঙ্গারামপুর হাইরোড এর চৌপথি মোরে মুদিখানার এই ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসার দুই ভাই মিলেই করে থাকেন। সহজ সরল ভাবে জীবন যাপন করা এই দুই ব্যবসায়ী সুনামের সঙ্গে তাদের ব্যবসা দীর্ঘদিন ধরে করে যান।
সোমবার রাতে তাদের মুদিখানা দোকানটি বন্ধ করে সমীরবাবু ও তার ভাই দত্তপাড়া এলাকার বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ,গঙ্গারামপুর থানার হাই রোডে অবস্থিত পেট্রোল পাম্পের একটু দূরে ব্যবসায়ী সমীর রায়ের পথ আটকায় সে।সঙ্গে সঙ্গেই অভিযুক্ত দুষ্কৃতী সমীরবাবুর চোখেমুখে বিষাক্ত কিছু করতে স্পে করতে থাকে। কিছুটা দূরে বাকি দুষ্কৃতীরা একটি গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখেছিল বলে সমীরবাবু দেখতে পেয়েছিলেন। মুখে কিছু স্পে আসতেই সঙ্গে সঙ্গে পকেট থেকে রুমাল বের করে চোখ গুলি গুলি তিনি মুছে ফেলেন। অভিযুক্ত যুবক এর পরেই সমীরবাবুর কাছে থাকা দোকানে বিক্রি করা টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু সমীরবাবুর বুদ্ধিতেই চিৎকার শুরু করলে আশপাশ থেকে বাসিন্দারা ছুটে এসে অভিযুক্তকে হাতেনাতে ধরে ফেলে।এরপরে অভিযুক্ত যুবকের গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হতে তুলে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা।ততক্ষনে গাড়ি নিয়ে বাকি অভিযুক্তরা সেখান থেকে পালিয়ে যায় বলে জানা গেছে।
ব্যবসায়ী সমীর রায় অভিযোগ করে জানিয়েছেন,দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথেই দুস্কৃতিকারীরা মুখে কিছু স্প্রে করে দেয়।ব্যাগ ধরে টানাটানি করতেই মুখ মুছে ফেলে চিৎকার শুরু করি।পরে সকলে ছুটে এসে অভিযুক্তকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। আমরা ব্যবসায়ীরা পুলিশি নিরাপত্তা চাই।
গঙ্গারামপুর ব্যবসায়ী সমিতি মার্চেন অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সভাপতি কমলেশ ফোজদার অভিযোগ করে জানিয়েছেন, এতো দেখছি সন্ধ্যা নামতেই ব্যাবসায়ীদের টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টা।পুলিশ যদি ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা না দিতে পারে তাহলে আমরা ব্যবসায়ীরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাব।
গঙ্গারামপুর শহর এলাকাবাসীদের অভিযোগ,যেভাবে শহর এলাকায় একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটে চলেছে।পুলিশ কি গরমে এসি মেশিনের তলায় লুকিয়েছে নাকি। তাছাড়া আগে যা ঘটতো না এখন তা কেন ঘটে চলছে শহরের বুকে সে বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার পুলিশের।
জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে জানিয়েছেন,পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে ঘটনায় আর করা জড়িত রয়েছে মঙ্গলবার ধৃত যুবককে রিমাইন্ডার চেয়ে মহকুমা আদালতে পাঠানো হবে।
এমন ঘটনাই রীতিমতো শোরগোল পড়েছে শহর গঙ্গারামপুর জুড়ে।