পুর্ন মন্ত্রীর দায়ীত্ব নিয়েই দপ্তরে বসলেন বিপ্লব মিত্র, উচ্ছ্বাসে ভাসলো দক্ষিণ দিনাজপুর

0
721

পিন্টু কুন্ডু , বালুরঘাট, ১০ এপ্রিল–––   ছয়ে তিন পেলেও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাকে যোগ্য সম্মান দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী । সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে পূর্নাঙ্গ মন্ত্রী পেল দক্ষিণ দিনাজপুর । বরাবরই উন্নয়নের দিক থেকে পিছিয়ে পড়া জেলা দক্ষিণ দিনাজপুরের ভূমিপুত্র তথা দলের দীর্ঘদিনের লড়াকু নেতা বিপ্লব মিত্রকে কৃষি বিপনন দপ্তরের পূর্ণমন্ত্রী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এদিন সকাল থেকে  সেই খুশির খবর ঘিরে  উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে গোটা দক্ষিন দিনাজপুর জেলার মানুষ। 

এদিন সকালে বালুরঘাট পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান রাজেন শীলের নেতৃত্বে শহরের সাহেব কাছাড়ি এলাকায় জায়েন্ট স্ক্রিন লাগিয়ে রাজ্য মন্ত্রীসভার শপথ গ্রহনের অনুষ্ঠান দেখানো হয় । ডানলপমোড় এলাকায় ব্যান্ড বাজিয়ে উৎসবে মেতে ওঠেন দলের কর্মীরা। চলে একে অপরকে মিষ্টিমুখ করানোও। গঙ্গারামপুরেও বাজি ফাটিয়ে আনন্দে মেতে ওঠেন দলীয় নেতা কর্মীরা। 


পারিবারিক সূত্রে বিপ্লব মিত্র ডানপন্থী রাজনীতিতে যুক্ত হলেও ৯৮ সালে তৃণমূল দল গঠনের সময় দলের জেলা সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন ননীগোপাল রায়। তাঁর কিছুদিন পরেই বিপ্লব মিত্র দলের জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। এরপর থেকেই  সিপিএমের গড় গঙ্গারামপুরে প্রতিনিয়ত লড়াই করে সংগঠন মজবুত করেছেন তিনি । পরবর্তিতে জেলা সভাপতির দায়িত্বে আসেন তিনি। ২০০৯ সালে বালুরঘাট লোকসভা আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করলেও সেবার আরএসপি নেতা প্রশান্ত মজুমদারের কাছে মাত্র ৫১০৫ ভোটে পরাজিত হন তিনি । পরবর্তীতে ২০১১ সালে তৃণমূলের টিকিটে হরিরামপুর বিধানসভা আসনে তিনি জয়লাভ করেন। কিন্তু সেবার দলের জেলা সভাপতির দায়িত্ব সামলাতে হয় তাঁকে। ২০১৪ সালে বালুরঘাট লোকসভা আসনে নাট্যব্যক্তিত্ব অর্পিতা ঘোষকে প্রার্থী করা হয়। সেবার বিপ্লব মিত্রের কঠোর পরিশ্রমে অর্পিতা ঘোষ জয়লাভ করেন। ২০১৬ সালে ফের বিপ্লব মিত্রকে হরিরামপুর আসনে প্রার্থী করে দল। কিন্তু এবারে তিনি সিপিএম প্রার্থী রফিকুল ইসলামের কাছে পরাজিত হন। পরে বিপ্লব মিত্রকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের সহ সচীবের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ১৯ সালে বালুরঘাট লোকসভা আসনে তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়ানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন বিপ্লব মিত্র। কিন্তু দল এবারে বিপ্লব মিত্রকে প্রার্থী না করে ফের অর্পিতা ঘোষকে প্রার্থী করে। নির্বাচনে অর্পিতা হেরে যাবার পর থেকেই দলের সভাপতি হিসাবে বিপ্লব মিত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙ্গুল ওঠে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে শেষমেশ তিনি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের ১১ জন সদস্যকে নিয়ে দিল্লীতে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন। কিন্তু কিছুদিন পর থেকেই নিজের ভুল বুঝতে পারেন তিনি। ফের তাঁকে দলে নেওয়া হয়। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে হরিরামপুর আসনে তৃণমূলের প্রার্থী হন তিনি। বিজেপি প্রার্থী নীলাঞ্জন রায়কে হারিয়ে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন তিনি। আর এই জয়লাভের পর থেকেই বিপ্লব মিত্রকে মন্ত্রীত্বে আনা হবে বলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছিল জেলাজুড়ে। এদিন বিপ্লব মিত্রকে এগ্রিকালচার মার্কেটিং দপ্তরের দায়িত্ব দেওয়া হতেই উৎসবের আনন্দে মাতেন গোটা দক্ষিন দিনাজপুরের মানুষ।  দীর্ঘদিন বাদে জেলায় একজন পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়ায় খুশি জেলাবাসী।


 বিপ্লব মিত্র জানিয়েছেন, দায়িত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করবেন । জেলার উন্নয়নের পাশাপাশি রাজ্যের উন্নয়নেও জোড় দেবেন তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here