পাটখেত থেকে উদ্ধার নিখোঁজ গৃহবধূর টুকরো টুকরো হাড়গোড়

0
1060

পাটখেত থেকে উদ্ধার নিখোঁজ গৃহবধূর টুকরো টুকরো হাড়গোড়। শিউরে উঠলো আস্ত গ্রাম। উত্তেজনা তপনের কালিনগর এলাকায়

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ২২ জুন —— পাট খেত থেকে নিখোঁজ গৃহবধূর টুকরো টুকরো দেহ উদ্ধার কে ঘিরে শিউরে উঠলো আস্ত গ্রাম। শনিবার সকাল থেকে এই ঘটনাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয় দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকের রামচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কালিনগর এলাকায়। ঘটনার পরেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও বিডিওর নেতৃত্বে তপন থানার বিরাট পুলিশ বাহিনী এলাকায় পৌঁছে একটি কাটা পা ও বেশকিছু হাড়গোড় উদ্ধার করেছে। ঘটনায় আটক করা হয়েছে জমির মালিককে।

জানা যায় শুক্রবার সন্ধ্যায় তপনের রামচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কালিনগর এলাকায় এক বাসিন্দা তার জমিতে কাজ করতে যাবার পথে একটি কাটা পা দেখতে পান। যা নিয়ে কিছুটা আতকেও ওঠেন তিনি। এরপরই খবর দেওয়া হয় তপন থানার পুলিশকে। পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করবার চেষ্টা করলেও রাতের অন্ধকারে শুধুমাত্র একটি কাটা পা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। তবে দেহের বাকি অংশ কোথায় রয়েছে তার তদন্তে এদিন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কার্তিক মন্ডলের নেতৃত্বে তপন থানার পুলিশের একটি বিরাট টিম এলাকায় পৌছায়। যেখানে হাজির ছিলেন তপন ব্লকের বিডিও। এদিকে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে নিমপুর গ্রামের এক গৃহবধূ সুলেখা খাতুন বিবি আচমকায় চারদিন ধরে তার বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। যা নিয়ে ওই গৃহবধূর পরিবারের লোকেরা থানায় মিসিং ডাইরি না করলেও ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার হওয়া জুতো ও কাটা পা দেখে তাকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। পরিবারের লোকেদের দাবি কাটা পায়ের অংশটি সুলেখার। তাদের আরো দাবি সুলেখাকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। কিন্তু বাড়ি থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার দূরে কালিনগর এলাকার নির্জন ওই পাট খেতে কিভাবে মৃত সুলেখার টুকরো টুকরো দেহ এসে পৌঁছালো, এবং কেনই বা তাকে এমন নৃশংসভাবে খুন করা হলো তা নিয়েই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে মৃতর পরিবারের লোকেদের মধ্যে। এদিকে এই ঘটনা নিয়ে রীতিমতো হুলুস্থুল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় এদিন দুপুরে এলাকায় পৌছে ওই পাটখেত ও তার আশপাশের বিভিন্ন আবাদি জমি খতিয়ে দেখেন বিডিও সহ পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা। যেখান থেকে এদিন বেশকিছু হাড়গোড় উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। তবে পাটখেতের পাশে হাল দেওয়া জমিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মৃত গৃহবধূর শরীরের নানা অংশ দেখে কিছুটা অবাক হয়েছেন খোদ পুলিশ কর্মীরাও। ঘটনার জেরে আটক করা হয়েছে জমির মালিক জালাল মোল্লাকে। তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ওই গৃহবধূকে খুন করবার পর তার তথ্য লোপাটের জন্যই শরীরের বিভিন্ন অংশ ছিন্নভিন্ন করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, জমিতে হাল দিয়ে মৃতদেহের নানা অংশ নিশ্চিহ্ন করবার চেষ্টাও করা হয়েছে। যদিও এঘটনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কার্তিক মন্ডল।

মৃত গৃহবধূর আত্মীয় বিরাজ উল মোল্লা, মান্নান শেখ ও আফুর্জা বিবিরা বলেন, তারা ভাবতেই পারছেন না তাদের মেয়েকে কেউ এমন নৃশংস ভাবে খুন করবে। স্বামী ভিনরাজ্যে থাকায় দুই ছেলেকে নিয়েই থাকতো সে। চারদিন আগে আচমকা নিখোঁজ হয়ে যায় সে। এদিন তার দেহের টুকরো ও জুতো দেখে তারা শনাক্ত করতে পেরেছেন। তবে কি কারনে এমন খুন তা তাদের অজানা। ঘটনার পিছনে যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তারা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here