শীতল চক্রবর্তী গঙ্গারামপুর 28 জানুয়ারি দক্ষিণ দিনাজপুর :- পঞ্চায়েতের টেন্ডারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উভয়পক্ষের আহত হলেন দশজন বলে অভিযোগ উঠেছে। আহতদের মধ্যে গৌতম পন্থী পাঁচজন ও বিপ্লব মিত্র পন্থী পাঁচজন করে তৃণমূল কর্মী বলে জানা গিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার দুপুরে দক্ষিণ দিনাজপুর গঙ্গারামপুর থানার গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাণসাগর এলাকায়। আহতরা ভর্তি হয়েছেন গঙ্গারামপুর মহাকুমা হাসপাতাল সহ বিভিন্ন হাসপাতালে বলে খবর। উভয় পক্ষেরই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে বিরাট পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করার পাশাপাশি পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ফের তৃণমূলের জেলা সভাপতি বনাম জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যানের লোকজনদের মধ্যে এমন গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চালুন গ্রাম পঞ্চায়েতে সূত্রে খবর, বুধবার ছিল চালুন গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রকাশ্য টেন্ডার ডাকা হয়েছিল তার কাগজ জমা করার দিন। সেখানে সাতটি রাস্তা সহ বেশ কয়েকটি কাজের জন্য সেই টেন্ডার ডাকা হয়েছিল বলে খবর। সেই কাজের বিষয়ে টেন্ডারের ড্রপিং এর সময় ছিল বুধবার সকালে। উভয় পক্ষের লোকজন সেখানে টেন্ডার ড্রপিং করতে গেলে তৃণমূলের জেলার চেয়ারম্যান বিপ্লব মিত্র ঘনিষ্ঠ চালুন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এর স্বামী জালালুদ্দীনের লোকজনদের সঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌতম দাসের লোকজনদের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয় বলে অভিযোগ। কিছুক্ষণের মধ্যেই দু পক্ষের লোকজন দের মধ্যে হাতাহাতি ও পরে গোলমাল শুরু হয়ে যায় বলে খবর। সেখানে পুলিশ তৎপর হয়ে উভয় পক্ষের লোকজনদের সেখান থেকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। কিছুক্ষণ পর উভয় পক্ষের লোকজন বাড়ি ফেরার পথে ফের দু’পক্ষের মধ্যে ঝামেলা শুরু হলে উভয়পক্ষের মধ্যে গোলমালে ১০ জন আহত হয় বলে অভিযোগ একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। তার মধ্যে বিপ্লব মিত্র পন্থী তৃণমূল কর্মী পাঁচজন ও গৌতম ঘনিষ্ঠ পাঁচজন রয়েছে বলে খবর। আহতদের মধ্যে কারো পা ভেঙেছে কারো হাত ভেঙেছে, কারো মাথা ফেটে আহত হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। আহতদের গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতালে পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় ভর্তি করা হয়েছে বলে খবর।
ঘটনায় আহত গৌতম পন্থী তৃণমূল কর্মী মোফাজ্জল হোসেন কুরমান হোসেনের সরাসরি তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে বিপ্লব মিত্র ঘনিষ্ঠ চালন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী জালালুদ্দীন আহমেদ, আতাউর রহমান এরা তাদের মারধর করেছে বলে অভিযোগ করেন। যেন অন্য কেউ সেই টেন্ডার জমা না করতে না পারে তার জন্য। আমরা দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাই।
চালুন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী তথা বিপ্লব মিত্র পন্থী চালুন অঞ্চল তৃনমূল নেতা জালালুদ্দীন মিয়া অভিযোগ করে বলেন, চালুন অঞ্চল তৃনমূলের সভাপতি শহিদুর সরকার পঞ্চায়েতের কাটমানির টাকা না পেয়ে বোমা পিস্তল নিয়ে পঞ্চায়েতে এমন হামলা করেছে। আমাদের বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছে। তাদের রাস্তায় কে মারধর করেছে সে বিষয়ে আমার জানা নেই। পুলিশ সব দেখেছে। থানায় অভিযোগ হবে।
চালুন অঞ্চল তৃনমূলের সভাপতি সাইদুর সরকার পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, পঞ্চায়েতের সব লুটে পুটে খাবার জন্য প্রধান ও তার স্বামী জালাল আতিউর এমন নোংরামি করছে। সেই ঘটনার প্রতিবাদ করাতে তারা গোলমাল পাকিয়েছে। থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
গঙ্গারামপুর থানার তরফে এলাকায় বিরাট পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, পুরো ঘটনার তদন্ত করে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ফের তৃণমূলের জেলা সভাপতি বনাম জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যানের লোকজনদের মধ্যে এমন গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।