দেড় মাস গোপন ঘাঁটি! সীমান্ত পেরিয়ে কুমারগঞ্জে বাংলাদেশি যুবক, গ্রেপ্তারে তোলপাড়
বালুরঘাট, ২৮ মে ——-সীমান্তের কাঁটাতার টপকে দেড় মাস ধরে গোপনে ভারতে আশ্রয় বাংলাদেশী যুবকের। তোলপাড় দক্ষিণ দিনাজপুর। মঙ্গলবার গভীর রাতে কুমারগঞ্জের ডাঙ্গারহাট এলাকা থেকে গোপন খবরের ভিত্তিতে মিলন চন্দ্র বর্মন নামে এক বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করল পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে কুমারগঞ্জে রীতিমতো গা ঢাকা দিয়ে ছিল সে।
পুলিশ জানিয়েছে ধৃতের বাড়ি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বোনেতারা গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে। প্রায় দেড় মাস আগে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর চোখে ধুলো দিয়ে অবৈধভাবে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করে বলে পুলিশের দাবি। সেই থেকে কুমারগঞ্জের নানা প্রান্তে ঘুরে বেড়ালেও, গত কয়েকদিন ধরে তার গতিবিধি ঘিরে সন্দেহ দানা বাঁধে। যার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ ডাঙ্গারহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে পাকড়াও করে। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে বেশিকিছু বাংলাদেশি নথিপত্র।
তবে সে ভারতে ঠিক কী উদ্দেশ্যে প্রবেশ করেছিল, কেনই বা দেড় মাস ধরে কুমারগঞ্জে গা ঢাকা দিয়ে ছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তদন্তে নামা পুলিশ সবদিক খতিয়ে দেখছে — ব্যক্তি বিশেষের অনুপ্রবেশ, নাকি এর পিছনে রয়েছে বৃহত্তর কোনো চক্র?
বুধবার ধৃত মিলনকে বালুরঘাট জেলা আদালতে পেশ করে পুলিশ রিমান্ডের আবেদন জানায় কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ।
ডিএসপি (ডিএনটি) প্রদীপ কুমার সরকার জানিয়েছেন, “ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসতে পারে। তাই আমরা আদালতে পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানিয়েছি। আপাতত নানা দিক থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
এই ঘটনায় কুমারগঞ্জের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি ঘিরে ফের প্রশ্ন উঠেছে। কাঁটাতার, নজরদারি ক্যামেরা, বিএসএফ টহল — সবকিছুর মাঝেও কীভাবে গা ঢাকা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভারতে বসবাস করল এক যুবক? প্রশাসন স্তব্ধ, এলাকাবাসী আতঙ্কিত।
সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রবেশ নতুন নয়, তবে এত দীর্ঘ সময় ধরে গোপনে ঘাঁটি গাঁড়া — তা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। প্রশ্ন উঠছে সীমান্ত সুরক্ষা নিয়েও। তদন্তের পরেই স্পষ্ট হবে, এই ঘটনা নিছকই একজন যুবকের সাহসিক অভিযানের গল্প, না কি এর নেপথ্যে রয়েছে অন্য কোনও বিপজ্জনক অভিসন্ধি।