দুয়ারে রেশন প্রকল্প শুরুর সাতদিনেই দক্ষিণ দিনাজপুরে অতিসক্রিয় দালালচক্র

0
421

দুয়ারে রেশন প্রকল্প শুরুর সাতদিনেই দক্ষিণ দিনাজপুরে অতিসক্রিয় দালালচক্র, সামগ্রী রোটেশনেই প্রক্রিয়া চলার অভিযোগ, প্রশাসনিক উদাসীনতা নিয়ে ক্ষোভ ডিলারদের

পিন্টু কুন্ডু,  বালুরঘাট, ২৩ নভেম্বর  —–– দুয়ারে রেশন প্রকল্পের মধ্যেই অতিসক্রিয় হয়ে দুয়ারে পৌছাচ্ছে দালালরাও। গ্রাহকদের কাছ থেকে একপ্রকার ছিনিয়ে নিয়েই চাল,গম, আটা বস্তাবন্দী করছেন ফড়েরা। মুহুর্তে  হাতবদল হয়ে তা ফের ডিস্ট্রিবিউটরের ঘরে পৌঁছাচ্ছে বলেও অভিযোগ। দীর্ঘ একসপ্তাহ ধরে পুরো দক্ষিন দিনাজপুর জেলায় প্রকাশ্যে এমন দালালরাজের ঘটনায় রীতিমতো আলোড়ন ফেলেছে। আর যাদের দৌরাত্ম্যে ফুলে ফেপে উঠছেন কিছু ডিস্ট্রিবিউটরা বলেও অভিযোগ। যদিও এমন ঘটনার কথা অস্বীকার করা হয়েছে ডিস্ট্রিবিউটর এসোসিয়েশনের তরফে। তবে প্রশাসনিক উদাসীনতায়  দালালদের দৌরাত্ম্য যে চরম পর্যায়ে পৌছেছে তা একপ্রকার স্বীকার করেছেন রেশন ডিলাররা। যদিও এই বিষয়ে আমল দিতেই চাননি জেলা খাদ্য দপ্তর।

১৬ নভেম্বর থেকে রাজ্যজুড়ে চালু হওয়া দুয়ারে রেশন প্রকল্পে অংশ নেন দক্ষিন দিনাজপুরের ৩০৩ জন রেশন ডিলারও। অভিযোগ,  যে প্রকল্প নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে ডিলাররা হাজির হতেই দুয়ারে হাজির একশ্রেণীর দালালরাও। যাদের দাপটে একপ্রকার নাভিশ্বাস অবস্থা রেশন ডিলারদের। দীর্ঘ প্রায় সাতদিন ধরে বালুরঘাট শহর সহ গোটা জেলাজুড়েই শুরু হয়েছে ওই অসাধু চক্রের দৌরাত্ম্য। যাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে জানিয়েও কোন সুরাহা পাননি রেশন ডিলাররা বলেও অভিযোগ। প্রশাসনিক নিয়মানুযায়ী দুয়ারে রেশন প্রকল্পে উপভোক্তাদের দুয়ারে গিয়ে বিনামূল্যে রেশন বিলি করবে ডিলাররা। যাদের চাল, গম ও আটার প্যাকেট সরবরাহ করবার দায়ীত্ব রয়েছে রেশন ডিস্ট্রিবিউটরদের। রাজ্যজুড়ে একইসাথে ১৬ নভেম্বর এই প্রকল্প শুরু হতেই দক্ষিন দিনাজপুর জেলা জুড়ে রেশন ডিলারদের সাথে দুয়ারে পৌছায় একশ্রেণীর দালালরাও। যারা এলাকায় গিয়ে রীতিমতো ওজন মেশিন বসিয়ে উপভোক্তাদের কাছ থেকে একপ্রকার ছিনিয়ে নিচ্ছেন সেই সব সামগ্রী বলেও অভিযোগ। বিনিময়ে ১৬ টাকা কেজি হিসাবে চাল, ১৮ টাকা কেজি হিসাবে গম ও ১২ টাকা করে আটার প্যাকেটের দাম দিচ্ছে ফড়েরা।  যেসব জিনিস ফের বস্তাবন্দী হয়ে একশ্রেণীর ডিস্ট্রিবিউটরের ঘরে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ। শুধুমাত্র রোটেশনের এই প্রক্রিয়ার জেরেই মোটা অঙ্কের টাকা পকেটে ঢুকছে কিছু ডিস্ট্রিবিউটর ও ফড়েদের।

যদিও এমন ঘটনা জানা নেই বলে জানিয়েছেন রেশন ডিস্ট্রিবিউটর এসোসিয়েশনের সম্পাদক বাপী চ্যাটার্জ্জী। তিনি বলেন, দুয়ারে রেশন প্রকল্পে তাদের ভুমিকা খুবই কম। তবে দালালের মাধ্যমে এধরনের রোটেশনের ব্যাপার তার জানা নেই।
দুয়ারে রেশন দিতে যাওয়া রেশন ডিলারদের পক্ষে কৌশিক সরকার ও প্রসাদ হাজমরা বলেন, গ্রাহকদের মাল তুলে দেওয়া তাদের দায়ীত্ব। কিন্তু তারপর সেটা কিহবে তা দেখার দায়ীত্ব তাদের নয়। তবে এই ফড়েদের দাপটে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন তারা। প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে। 

সাধারণ এক বাসিন্দা বলেন, দুয়ারে রেশনের পাশেই চলছে ফড়েদের দাপট। এমনটা ঠিক নয়। প্রশাসনের গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। 
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা খাদ্য নিয়ামক জয়ন্ত রায় বলেন, জেলায় ৩০৩ টি রেশন ডিলারের মাধ্যমে চলছে দুয়ারে রেশন প্রক্রিয়া। সাধারণ মানুষ রেশনের চাল, গম, আটা সঠিক পাচ্ছে কিনা সেটা দেখার দায়ীত্ব তার। কিন্তু তারপর সেটা কি হবে সে বিষয়টি দেখার দায়ীত্ব তার নয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here