দু’ঘন্টার বৃষ্টিতে ভাসলো উন্নয়ন! ভাইরাল বালুরঘাট রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মের ঝরনা
বালুরঘাট, ২৬ মে ——দুঘন্টার টানা বৃষ্টিতে জলে থইথই ট্রেনের প্ল্যাটফর্ম! চাল দিয়ে স্টেশনের ভেতরে অঝোরে ঝড়ছে বৃষ্টির জল। ভাইরাল বালুরঘাট স্টেশনের ভিডিও। ট্রোল সোশ্যাল মিডিয়ায়। কেউ লিখছে স্টেশনের ছাদ যেন ঝরনা। আবার কেউ লিখছে বালুরঘাট স্টেশনে অমৃত ভারত প্রকল্পের প্রথম কিস্তির কাজের পর প্রাকৃতিক ঝরনা তৈরি হয়েছে। ভাবুন ভাবা প্রাকটিস করুন, এমনটাও উল্লেখ করে পোস্ট করা হয়। যাকে ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যা প্রকাশ্যে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয় ট্রোল। অনেকে এই ঘটনা নিয়ে রেল কতৃপক্ষের কড়া সমালোচনায় সরব হয়েছে। তাদের অভিযোগ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই এমন ঘটনা বারবার ঘটছে বালুরঘাট রেলস্টেশনে।
যে স্টেশন ঘিরে জেলার মানুষের যাতায়াতের ভরসা, সেই বালুরঘাট আজ মশকরা আর ক্ষোভের কেন্দ্রে। প্ল্যাটফর্মের এদিক-ওদিক হাঁটু সমান জল, বসার জায়গা নেই, দাঁড়ানোর ঠাঁই নেই। এমন পরিস্থিতি যে শুধু অব্যবস্থার প্রমাণ, তা নয়—এ যেন উন্নয়নের ঢাকের কাঠি আর হাওয়া খঞ্জনি!
রেল মন্ত্রকের ‘অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্প’-এর অধীনে কিছু মাস আগেই সংস্কারের কাজ শুরু হয় এই স্টেশনে। কিন্তু কাজের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির সদস্যরা। একলাখি–বালুরঘাট রেল যাত্রী কল্যাণ ও সমাজ উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান স্মৃতিশ্বর রায় বলছেন, “ইতিমধ্যেই রেল স্টেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। অবস্থা সত্যিই খারাপ। সম্ভবত সেখানে ইঞ্জিনিয়ারিং কাজের সমস্যার জন্যই ছাদের জল উপচে প্ল্যাটফর্মের মেঝেতে জল জমছে। এখন কোনও অভিযোগ করলেই রাজনৈতিক দিক থেকে দেখা হচ্ছে। এনিয়ে আমরা রেল দপ্তরের বিভিন্ন জায়গায় লিখিত অভিযোগ করার চেষ্টা করছি।’
যাত্রীদের অভিযোগ, বর্ষা এলেই বালুরঘাট স্টেশন কার্যত ভাসতে থাকে। একাধিকবার রেল কর্তৃপক্ষকে জানানো সত্ত্বেও কোনও স্থায়ী সমাধান মেলেনি। বরং প্রতিবছর ছবি ভাইরাল হয়, ট্রোল হয়, অভিযোগ হয়—তারপর আবার স্তব্ধতা।
উন্নয়নের ঢাক যতই বাজুক, যদি ছাদটাই ভেঙে পড়ে, তবে তা ঢাক নয়, বাজনার অন্তিম শব্দই শোনা যায়। প্রশ্ন উঠছে, অমৃত প্রকল্পের ‘রূপান্তরের ছোঁয়া’ কি শুধুই পোস্টারে, নাকি তার রেশ পৌঁছচ্ছে সাধারণ মানুষের দুর্দশায়?