দিনরাত রায়গঞ্জ স্টেশনের পাশে রেলেরই জায়গায় খোলা আকাশের নীচে কাটাচ্ছেন ভিনরাজ্যের শ্রমিক উকিলপাড়ার বাসিন্দা টুনুয়া মন্ডল।

0
175

রায়গঞ্জ:-ট্রেনে কাটা পরে দুটো পা হারিয়েছেন। ঘর বলতে ছিল রেলের জায়গায় ঝুপড়ি।  রেলওয়ে দপ্তর তাও তুলে দিয়েছে। এখন দিনরাত রায়গঞ্জ স্টেশনের পাশে রেলেরই জায়গায় খোলা আকাশের নীচে কাটাচ্ছেন ভিনরাজ্যের শ্রমিক উকিলপাড়ার বাসিন্দা টুনুয়া মন্ডল। আশপাশের লোকজন কেউ খাবার দিলে খেতে পান নইলে অনাহারেও দিন কাটে তাঁর। পাননি সরকারি বেসরকারি কোনও সাহায্য সহযোগিতা।  হয়নি প্রতিবন্ধী কার্ড বা ভাতা। বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবসে এমনই করুন চিত্র দেখা গেল রায়গঞ্জ শহরের স্টেশন চত্বর এলাকায়।

খুব অল্প বয়সেই বাবা-মাকে হারিয়ে অনাথ হয়ে পড়েছিল রায়গঞ্জ শহরের পূর্ব উকিলপাড়ার রেললাইনের ধারে ঝুপড়িতে বসবাসকারী টুনুয়া মন্ডল। পেটের তাগিদে ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজে চলে যায় কিশোর টুনুয়া। প্রায় ১৫ বছর ধরে দিল্লিতে শ্রমিকের কাজ করে সে। ২০১৯ সালে দিল্লিতেই রেললাইন পারাপারের সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে টুনুয়া। দুটো পা ট্রেনে কাটা পরে তাঁর। দুবছর ধরে রেলের হাসপাতালেই চিকিৎসা চলার পর সুস্থ হয়ে তাঁর নিজের শহর রায়গঞ্জে ফিরলে সে দেখতে পায় তাঁদের সেই ঝুপড়ির বাড়ি আর নেই। রেলওয়ে বিভাগ তুলে দিয়েছে ঝুপড়ি।  একেবারে অসহায় হয়ে পড়ে টুনুয়া। কি করে কাজ করবে, কি খাবে আর কোথায় বা বাস করবে। অবশেষে আস্তানা নিল রেলেরই প্ল্যাটফর্মের ধারে।  ছেঁড়া একটা ফ্লেক্স আচ্ছাদন দিয়ে এই শীতেও রাত কাটাচ্ছেন টুনুয়া। রোদ ঝড় বৃষ্টি মাথায় করে অনাহারে অর্দ্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন টুনুয়া। আশপাশের লোকজনেরা যে যা খাবার দেয় তা খেয়েই দিন গুজরান হয় তাঁর। প্রতিবেশীদের দাবি টুনুয়াকে একটা থাকার জায়গা আর ওর যোগ্যমতো কোনও কাজের ব্যাবস্থা প্রশাসন বা সহৃদয় কোনও ব্যক্তি করে দেন তাহলে প্রানে বাঁচতে পারে টুনুয়া। এটাই আজ বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবসে টুনুয়া ও রায়গঞ্জবাসীর আবেদন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here