দন্ডি ক্ষত মুছলো কবে! প্রদীপ্তাকে মঞ্চে দেখে তৃণমূলে টালমাটাল আদিবাসী ভোটের সমীকরণ

0
327

দন্ডি ক্ষত মুছলো কবে! প্রদীপ্তাকে মঞ্চে দেখে তৃণমূলে টালমাটাল আদিবাসী ভোটের সমীকরণ, ক্ষোভ জেলা সভাপতির

বালুরঘাট, ১৬ এপ্রিল —– প্রদীপ্তাকে নিয়ে ফের বিড়ম্বনা তৃণমূলে! বিধানসভার আগে আদিবাসী ভোট নিয়ে হোচট খাওয়ার আশঙ্কা ঘাসফুল শিবিরে। ২১ শে জুলাই ধর্মতলা চলোর প্রচার সভার প্রথম সারিতে তার দেখা মিলতেই উদ্বেগ প্রকাশ জেলা সভাপতির। আশঙ্কা আদিবাসী বিক্ষোভেরও। ক্ষোভের আশঙ্কা প্রকাশ করে দলকে সতর্ক আদিবাসী সংগঠনের সভাপতিরও।

প্রসঙ্গত, বিজেপিতে যোগ দেবার অপরাধে প্রায় দুবছর আগে তপনের গোফানগরের চার আদিবাসী মহিলাকে প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা দণ্ডি কাটাবার অভিযোগ উঠেছিল প্রদীপ্তা চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। যে ঘটনা নিয়ে একপ্রকার গোটা দেশজুড়ে তোলপাড় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। আদিবাসী মহিলাদের সাথে কেন এমন ঘটনা ঘটানো হল তা মেনে নিতে না পেরে রাস্তায় নেমে আন্দোলনেও নেমেছিল বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠনগুলি। এরপরেই জেলায় ছুটে এসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কথা বলেছিলেন আদিবাসী ওই তিন মহিলার সাথেই। যেখান থেকেই তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে দন্ডি কাণ্ডে যতবড়ই নেতানেত্রী জড়িত থাকুক না কেন তাঁর বিরুদ্ধে দলীয় ও প্রশাসনিক গত ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরপরেই প্রদীপ্তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল সমস্ত পদ থেকে। শুধু তাই নয়, দলীয় সমস্ত অনুষ্ঠান থেকে তাকে বিরত থাকবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এরপর বেশকিছুদিন কেটে গেছে, আবার দলীয় সভা, মিছিলে স্বাভাবিক ভাবে অংশ নিতে শুরু করেছেন প্রদীপ্তা চক্রবর্তী। আর যা নিয়েই এবারে উদ্বেগ প্রকাশ করে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল। তিনি বলেন, যারা দল থেকে সুবিধা পাচ্ছে, যাদের পরিবারের লোকেরা বড় বড় পদ হোল্ড করে বসে আছে তারাই যদি দল বিরুদ্ধ কাজ করে, তাহলে দলের একজন সাধারণ কর্মীকে কিভাবে সতর্ক করবেন তিনি। দলের বাইরে কেউ নন, দল আছে বলেই তাদের পরিচিতি আছে। বিগত সভাপতির আমলে সিদ্ধান্ত ছিল তাকে দলের সমস্ত কাজকর্ম থেকে বিরত থাকবার। তারপর দলে তাকে নিয়ে নতুন করে কোন সিদ্ধান্ত আসে নি। ওকে সভাতে দেখা গেলেই আদিবাসীদের তরফে অভিযোগ আসছে, জেলায় বিক্ষোভ হচ্ছে। বিষয়টা যথেষ্ট উদ্বেগের। তিনি আরো বলেন, জেলার একটা বিধানসভা আসন পুরোপুরি আদিবাসী অধ্যুষিত। গোটা জেলাতে প্রায় ১৮ শতাংশ ভোট রয়েছে আদিবাসীদের। তারপরেও সে ঘুরে বেড়াচ্ছে। রাজ্যের কাছে অভিযোগ জানাবেন হয় তার সাসপেনশন তুলে নেওয়া হোক, নয়তো সাসপেন্ড করা হোক।ব্যক্তিগতভাবে তিনি কারো বিরোধী নয়, দল ক্লিনচিট দিলে কারো অসুবিধা থাকতে পারে না। কিন্তু এব্যাপারে দল এখনও কোন সিদ্ধান্ত জানায় নি। বিষয়টি নিয়ে এবারে সশরীরে লিখিতভাবে অভিযোগ জানাবেন তিনি।

তৃণমূল সভাপতির পাশে দাঁড়িয়ে একই মন্তব্য পেশ করেছেন তৃণমূল এসটি সেলের সভাপতি সন্তোষ হাসদা। তিনি বলেন, এব্যাপারে দলের তরফে কোন নির্দেশিকা নেই। তাকে দেখলে আদিবাসী মানুষদের মধ্যে দন্ডি কান্ডের বিষয়টি জেগে উঠতে পারে এবং ক্ষোভ তৈরি হতে পারে।

রাজনৈতিক মহলের মতে, প্রদীপ্তা নামটাই এখন তৃণমূলের জন্য ‘আলবাত বিপদ’। দল চাইলেও আদিবাসী সমাজের মন থেকে এখনও মুছে যায়নি সেই দণ্ডি-কাণ্ডের দগদগে ক্ষত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here