দক্ষিণ দিনাজপুরে মহিলার মাধ্যমে জাল লটারির প্রতারণা! বালুরঘাটে গ্রেফতার আজমিরা ফকির
বালুরঘাট, ১০ মে —– দক্ষিণ দিনাজপুরে জাল লটারি চক্রের রহস্য উন্মোচন! মহিলাদের ব্যবহারের মাধ্যমে এই চক্র চলানো হচ্ছিল, এমনই অভিযোগ স্থানীয় লটারি ব্যবসায়ীদের। শুক্রবার রাতে বালুরঘাটের নারায়ণপুর এলাকা থেকে মুর্শিদাবাদের আজমিরা ফকির নামে এক মহিলা গ্রেপ্তার হওয়ার পরেই প্রকাশ্যে আসে চমকপ্রদ এই ঘটনা।
দক্ষিণ দিনাজপুরে বিগত কয়েক মাস ধরে গোপনে সক্রিয় হয়ে উঠেছে জাল লটারির চক্র। জেলার একাধিক এলাকায় এই চক্রের নেটওয়ার্ক বিস্তার লাভ করলেও, মুলত জাল লটারি কারবারের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে গঙ্গারামপুর । ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, মহিলাদের নামিয়ে তাদের মাধ্যমে ভুয়া লটারির পুরস্কার দিয়ে প্রতারণা করা হচ্ছিল। একাধিক মহিলাকে ব্যবহার করা হচ্ছিল লটারি বিজয়ীর ভূমিকায়, আর সেসব পুরস্কার দিয়ে কার্যত লুট করা হচ্ছিল আসল লটারি ব্যবসায়ীদের টাকা।
শুক্রবার রাতে আজমিরা ফকির প্রথমে ৪৫ হাজার টাকা তুলে নিয়ে যায় এক ভুয়া লটারি বিজয়ের মাধ্যমে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে যখন একই কায়দায় আরও একটি লটারির পুরস্কার নিতে যায়, তখন সন্দেহ তৈরি হয়। লটারি ব্যবসায়ীরা তৎক্ষণাৎ তাকে ধরেন এবং পুলিশকে জানায়। পুলিশ এসে তাকে গ্রেপ্তার করে বালুরঘাট থানায় নিয়ে আসে।
শনিবার অভিযুক্তকে বালুরঘাট জেলা আদালতে তোলা হলে, বিচারক তাকে তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। সরকারি আইনজীবী অর্ঘ্য দাস জানান, বিচারক আজমিরা ফকির কে তিনদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে, স্থানীয় লটারি ব্যবসায়ী আনন্দ নট্ট ও জয়রাম সাহারা বলেন, ‘‘এতদিন পুরুষদের মাধ্যমে এই জাল লটারির কারবার চলত। কিন্তু বর্তমানে মহিলাদের ব্যবহার করে এই চক্র চালানো হচ্ছে।’’ তারা জানান, আজমিরার কথাবার্তায় অসঙ্গতি ধরা পড়ায় তাকে ধরতে সক্ষম হন তারা।
এই ঘটনা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনার পিছনে অসাধু কারবারীদের পাশাপাশি একাংশ পুলিশ কর্মীরাও যুক্ত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন লটারি বিক্রেতারা। যদিও বালুরঘাট থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
এখন এই জাল লটারির চক্রকে পুরোপুরি উন্মোচন করতে আরও তদন্ত চালানো হবে বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ।