দক্ষিণ দিনাজপুরে ‘বাতিল’ ৮৬ হাজার ভোটারের নাম! ৯৩ শতাংশ কাজ শেষ হতেই সামনে কমিশনের সামনে চাঞ্চল্যকর তথ্য
বালুরঘাট, ৩ ডিসেম্বর —– বিধানসভা নির্বাচন দরজায় যেন কড়া নাড়ছে। তার ঠিক আগেই দক্ষিণ দিনাজপুরে ভোটার তালিকা পুনর্মূল্যায়নে সামনে এল এমন এক পরিসংখ্যান, যা জেলায় রাজনৈতিক মহলে রীতিমতো তোলপাড় ফেলেছে। বুধবার বালুরঘাট সার্কিট হাউসে সর্বদলীয় বৈঠকে ইলেক্টোরাল রোল অবজারভার অশ্বিনী যাদবের সামনে উঠে আসে মোট প্রায় ৮৬ হাজার বাতিল ভোটারের তথ্য—যা শুনে সভায় উপস্থিত দলগুলির প্রতিনিধিরাও চমকে ওঠেন।
রাজনৈতিক দলগুলির দাবি, এস আই আর (SIR)–এর ৯৩ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হতেই এই তালিকা স্পষ্ট হয়েছে। বিস্ফোরক তথ্য বলছে—১২ হাজার ফর্ম খুঁজেই পাওয়া যায়নি, ৪১,৯৭০ জন মৃত ভোটার, ৮,৯৯৪ জনকে কোনওভাবেই খুঁজে পাওয়া যায়নি, স্থান্তরিত হয়েছেন ২১,৫১২ জন, ডুপ্লিকেট ভোটার ১,২৩০ জন এবং অন্যান্য ক্যাটাগরিতে রয়েছে আরও ২০২ জনের নাম।
আগামী বছরই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে ভোটার তালিকা পরিশুদ্ধ করতে কমিশনের এই বিশেষ অভিযানকে কেন্দ্র করে জেলাজুড়ে চলছিল টানটান উত্তেজনা। সেই কাজ কতদূর এগোলো, বাস্তবে কী কী সমস্যা সামনে এল—তা খতিয়ে দেখতেই এদিন জেলায় আসেন অবজারভার অশ্বিনী যাদব। সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসনের কর্তারা ও রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ে বৈঠকে তিনি সম্পূর্ণ রিপোর্ট তুলে ধরেন। যেখানে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক বালা সুব্রামানিয়ান টি-ও।
যদিও বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশন বা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের কিছু জানানো হয়নি। কিন্তু মুখ খুলেছেন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
জেলা কংগ্রেস সভাপতি গোপাল দেব জানান, “দুপুর বারোটা পর্যন্ত ৯৩ শতাংশ ফর্ম জমা পড়েছে। আরও কিছু বাকি রয়েছে। মৃত ভোটারদের নাম কীভাবে কাটা হবে—এ প্রশ্নে অবজারভার স্পষ্ট বলেছেন, শুধু BLO বা BLA-র উপর নির্ভর না করে বিভিন্ন তথ্যসূত্র ব্যবহার করা হচ্ছে।”
সিপিএম নেতা কল্যাণ দাসের বক্তব্য, “অবজারভার অনেক দেরিতে এলেন। শুরুতে বহু সমস্যা হয়েছিল। এখন আর তেমন কিছু নেই। তবু তিনি আশ্বস্ত করেছেন—ভোটার তালিকা এবার নিখুঁত হবে।
অন্যদিকে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বাপি সরকার জানান, “আমরা জানিয়েছি, যেসব সমস্যা হয়েছে, তা প্রশাসনের মাধ্যমে সমাধান করেছি। অবজারভার পুরো প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখছেন।
জেলাজুড়ে এখন একটাই প্রশ্ন—৮৬ হাজার বাতিল ভোটারের এই বিস্ফোরক পরিসংখ্যান কী প্রভাব ফেলবে আসন্ন নির্বাচনে? রাজনৈতিক মহল থেকে সাধারণ ভোটার—সবার মধ্যেই তীব্র আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু এখন এই চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট।

















