তপনে গৃহবধূ কে নৃশংস খুনের ঘটনায় অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিল আদালত

0
118

তপনে গৃহবধূ কে নৃশংস খুনের ঘটনায় অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিল আদালত। অবৈধ সম্পর্ক ফাঁস হতেই রোটারের ব্লেড দিয়ে গৃহবধূকে টুকরো টুকরো করেছিল সাদ্দাম

বালুরঘাট, ৮ ডিসেম্বর —– দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনে গৃহবধূ খুনের নৃশংস ঘটনার মাত্র ১৭ মাসের মধ্যেই সাজা ঘোষণা করল অতিরিক্ত দায়রা আদালত। সোমবার বিচারক সন্তোষ পাঠক যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন অভিযুক্ত সাদ্দাম সরকার ওরফে সাদ্দাম হোসেন মোল্লাকে। পাশাপাশি ১০ হাজার টাকার জরিমানা করেন, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ডও বহাল থাকছে।

সরকারি আইনজীবী ঋতব্রত চক্রবর্তী জানান, ১৮ জুন ২০২৪-এ নিখোঁজ হন সুলেখা। চারদিন পর ধানের জমিতে ক্ষতবিক্ষত দেহাংশ উদ্ধার হয়। তদন্তে উঠে আসে অভিযুক্ত সাদ্দামের সঙ্গে সুলেখার অবৈধ সম্পর্কের তথ্য। সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসায় ক্ষোভে ও প্রতিশোধে সাদ্দাম তাকে ডেকে নিয়ে যায় একটি নির্জন চাষের জমিতে। তারপর ট্রাক্টরের রোটারের মতো ধারালো ব্লেড দিয়ে টুকরো টুকরো করে খুন করে। গ্রেফতারের পর সাদ্দামের দেখানো জায়গা থেকেই উদ্ধার হয় দেহের বাকি অংশ ও হাড়গোড়। রোটার ব্লেড থেকেও সংগ্রহ করা হয় রক্তের নমুনা।

ডিএনএ পরীক্ষায় নিহত সুলেখার নাবালক সন্তানের রক্তের সঙ্গে মিলে যায় দেহাংশের নমুনা। যে রিপোর্টেই নিশ্চিত হয়—কাটা দেহাংশগুলি নিখোঁজ সুলেখারই।

ঘটনার সূত্রপাত তপনের রামচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের কালিনগর এলাকায়। এক কৃষক সকালে জমিতে গিয়ে হঠাৎই দেখতে পান একটি কাটা মানুষের পা। খবর পান তপন থানার পুলিশ। তবে সেই কাটা পা ও উদ্ধার হওয়া জুতো দেখে সুলেখার পরিবার তাকে সনাক্ত করে। তবে কেন বাড়ি থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার দূরে—এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটল, কেনই বা এমন নিষ্ঠুর পদ্ধতিতে খুন করা হল, সেই প্রশ্নে তোলপাড় হয় এলাকা। দিনের পর দিন তল্লাশি, ডিএনএ রিপোর্টের অপেক্ষা— নানা বাঁক পেরিয়ে শেষমেশ গত শনিবার আদালত সাদ্দামকে দোষী সাব্যস্ত করে। আর এদিন ঘোষণা হল সাজা।

সম্পর্ক ফাঁস হওয়ার ভয়ে কেন এমন নির্মমতা? কেনই বা মৃতদেহ খণ্ডবিখণ্ড করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল বিভিন্ন জায়গায়— এমন প্রশ্নে আজও বাকরুদ্ধ সুলেখার পরিবার। তবে আদালতের দ্রুত রায় অন্তত আংশিক স্বস্তি দিয়েছে মৃতের পরিবারের লোকেদের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here