ডিমের বাক্সে গাঁজার পাহাড়! বাংলাদেশে পাচারের আগেই সীমান্তে বড়সড় সফলতা হিলি থানার পুলিশের
বালুরঘাট, ২৮ এপ্রিল ——বাইরে থেকে দেখতে একেবারে সাধারণ ডিমের বাক্স। কিন্তু ভেতরে গাঁজার পাহাড়! দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্তে রুদ্ধশ্বাস অভিযানে পুলিশের জালে ধরা পড়ল আটটি বাক্স বোঝাই গাঁজা। গাড়ি বোঝাই ডিমের বাক্সের মধ্যে লুকিয়ে পাচারের ছক বানচাল করে প্রায় এক কুইন্টাল গাঁজা উদ্ধার করল হিলি থানার পুলিশ। হাতেনাতে ধরা পড়ল মাদকচক্রের মূলচক্রী কাঞ্চন হালদার।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত কাঞ্চনের বাড়ি হিলি থানার ত্রিমোহিনী চাপাহাট এলাকায়। দীর্ঘদিন ধরে সে গোপনে শিলিগুড়ি থেকে গাঁজা কিনে এনে সীমান্তে পাচারের কাজে যুক্ত ছিল। সোমবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বক্সীগঞ্জ এলাকায় ফাঁদ পাতেন হিলি থানার অফিসাররা। সন্দেহজনক একটি গাড়ি আটকানোর পরই বেরিয়ে আসে আসল রহস্য।
গাড়ির পিছনে সাজানো আটটি ডিমের বাক্স। খুলতেই চমকে ওঠেন অফিসাররা — ডিম নয়, বাক্সভর্তি গাঁজা! উদ্ধার হয় ৯৩ কেজি ৪১০ গ্রাম মাদক। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ছয় লক্ষ টাকার কাছাকাছি। পরিকল্পনা ছিল, রাতের অন্ধকারে এই বিপুল পরিমাণ গাঁজা সীমান্ত পার করিয়ে বাংলাদেশে পাঠানো হবে।
ডিএসপি সদর বিক্রম প্রসাদ জানান, ‘‘গোপন খবরের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়েছিল। ধৃত কাঞ্চন হালদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১২ দিনের পুলিশ রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’’
তদন্তকারীরা মনে করছেন, কাঞ্চন একা নয়। তার পেছনে রয়েছে শক্তিশালী পাচারচক্র। সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই নানা ছদ্মবেশে মাদক পাচার চলছিল — কখনও ফলের ঝুড়িতে, কখনও সব্জির লরিতে, কখনও ডিমের বাক্সে। প্রতিবারই সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকত এই মাদক।
পুলিশ সূত্রে আরও খবর, সম্প্রতি সীমান্ত এলাকা থেকে বাংলাদেশে মাদকের চাহিদা বাড়ছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই সক্রিয় হয়েছে পাচারকারীরা। পুলিশের দাবি, কাঞ্চনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পাচারচক্রের আরও বড় মাথাদের নাম সামনে আসবে। সামনে আসতে পারে সীমান্ত জুড়ে ছড়িয়ে থাকা মাদক সাম্রাজ্যের চমকে দেওয়া নকশাও।”