নিজস্ব সংবাদদাতা, বালুরঘাট:-শিক্ষকতার চাদরে ঢাকা জুয়ার সাম্রাজ্য! বিজ্ঞান পড়াতেন ক্লাসে, আর আড়ালে চালাতেন কোটি টাকার লোটো ও বেটিং চক্র। শেষমেশ গোপন অভিযানে ফাঁস রহস্য। রবিবার সন্ধ্যায় হইচই ফেলে পুলিশ উদ্ধার করল প্রায় এক কোটি টাকা নগদ। চাঞ্চল্য আরও বেড়েছে, কারণ ওই টাকার সিংহভাগ মিলেছে একেবারে ঠাকুরঘরের সিংহাসন আর খাটের তলা থেকে!
ধৃতদের মধ্যে অন্যতম অপূর্ব সরকার (৩৭)। পেশায় গঙ্গারামপুর থানার নয়াবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক। পুলিশ জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই অনলাইন লোটো, আইপিএল বেটিং ও জুয়া চক্রে সক্রিয় ছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, ওই চক্রের আগেই গঙ্গারামপুর থেকে একজন ধরা পড়তেই গা ঢাকা দেন অপূর্ব। অবশেষে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গ্যাংটক থেকে তাকে ও সহযোগী কুণাল দাসকে পাকড়াও করে পুলিশ।
সূত্রের খবর, রবিবার সন্ধ্যায় গঙ্গারামপুরের এসডিপিওর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী হানা দেয় অপূর্বর শ্বশুরবাড়ি রঘুনাথপুরে। সেখান থেকেই মিলল টাকার পাহাড়। যদিও সঠিক অঙ্ক এখনও জানানো হয়নি, তবে প্রথমিক অনুমান কোটি টাকারও বেশি। জেলা পুলিশের দাবি, তদন্তের স্বার্থে আপাতত বিস্তারিত জানানো যাবে না।
সোমবার গঙ্গারামপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক অপূর্বকে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠান। আদালত চত্বরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। তবে নয়াবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক জানান, ২৭ আগস্ট থেকে অপূর্ব স্কুলে অনুপস্থিত। তাঁর কথায়, “আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখতাম, কিন্তু এই অভিযোগ বিশ্বাস করা কঠিন।”
গঙ্গারামপুর মহকুমা পুলিশের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, পুরো চক্রের কৌশলগত খোঁজখবর এবং অবৈধ লেনদেনের বিস্তারিত অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। এই ধরণের অপরাধ বন্ধ করতে অভিযান আরও জোরদার করা হবে।”।
বালুরঘাটের ডিএসপি বিক্রমপ্রসাদ বলেন, “তদন্ত চলছে। টাকা উদ্ধারের বিষয়ে এখন কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে এই চক্রের সব যোগসূত্র ভেঙে ফেলা হবে।”
একজন শিক্ষক, যিনি ছাত্রমহলে জনপ্রিয় ছিলেন—তার ঘর থেকে যখন কোটি টাকা উদ্ধার হয়, তখন তা শুধু জেলাজুড়েই নয়, রাজ্যজুড়ে তীব্র আলোড়ন তোলে।