টেরর নয়,ট্যুরিজমেই এখন সাফল্য!
আলিপুরদুয়ার:-
টেরর নয়। ট্যুরিজমের হাত ধরেই নিজেদের এলাকার আমুল বদল আনল আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাট বীরপাড়া ব্লকের লঙ্কাপাড়া বাগানের শ্রমিক কর্মচারীরা। ২০১৪ সাল থেকেই বন্ধ আলিপুরদুয়ার থেকে ৮৫ কিমি দূরের অবস্থিত জেলার সবচেয়ে বড় বাগান, লঙ্কাপাড়া চা বাগান। কর্মহীন হয়ে পরেন প্রায় ২২০০ শ্রমিক। বাগান বন্ধ থাকায় কার্যত সমাজবিরোধীদের আখরায় পরিনত হয়েছিল লঙ্কাপাড়া। গ্যাং ওয়ার, চুরি, ডাকাতি থেকে দাদাগিরি যেমন ছিল, পাশাপাশি একের পর এক গোলাগুলি কান্ডে কুখ্যাত হয়ে উঠেছিল এলাকা। পুলিশের তরফে স্থায়ী পুলিশ ফাড়ি অবদি তৈরি করা হয়। বাইরের লোক অনেক দূর, আলিপুরদুয়ার জেলার বাসিন্দারাও খুব বেশী প্রয়োজন না হলে লঙ্কাপাড়ার দিকে যেতেনই না। আজ সেই ছবি যেন অতীত। জেলা পুলিশের দৌলতে এলাকার কুখ্যাতরা আজ জেল বন্দী। আজ সেখানে স্থানীওদের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে এক পর্যটন কেন্দ্র।
পাহাড়,নদী,জঙ্গল, চা বাগান সবই রয়েছে লঙ্কাপাড়ায়। একদিকে ভুটান, উল্টো দিকে ভারত। মাঝে তিতি নদী। রয়েছে বন্যপ্রাণীরাও। এলাকার আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে লঙ্কাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ভেতর স্থানীয়ভাবে ছোটপাহাড় নামে পরিচিত একটি এলাকাকে পর্যটনের জন্য বেছে নেয় চা বাগান শ্রমিক এবং কর্মচারীদের নিয়ে গঠিত মনকামনা সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার কমিটি। কমিটির ২১ সদস্য ২০২২ সাল থেকে উদ্যোগ নেয়। পাহাড় চূড়ায় ওয়াচ-টাওয়ার, আই লাভ লঙ্কাপাড়া লেখা সেলফি পয়েন্ট, দোলনা সহ সাঁজানো হয় এলাকাটি। ২০২৩ র ডিসেম্বর মাসে শুরু হয় এই পর্যটন কেন্দ্রেটির পথ চলা। আর তার পর থেকেই এই এলাকার সৌন্দর্য মন জয় করে নিয়েছে অনেকের। গত ডিসেম্বর মাস থেকে শুরু করে প্রায় আড়াই লক্ষ পর্যটক পা রেখেছেন এখানে। ভরা বর্ষার মধ্যেও প্রায় প্রতিটি দিন পর্যটকদের একাংশ ঘুরে যাচ্ছেন লঙ্কাপাড়া। বাগান বন্ধ থাকলেও নতুন করে অন্তত ২০০ মানুষের সরাসরি কিছুটা কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এখন এলাকাবাসীদের দাবী আর টেরর নয় ট্যুরিজমেই সাফল্য পাক লঙ্কা পাড়া।
এখানকার পুরুষ এবং মহিলারা সবাই কাজের জন্য অন্য রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছিল সেই কারণেই এখানকার অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো করার জন্য আমরা এই পিকনিক স্পটটা খুলেছি বলে জানান আয়োজকরা।
কলকাতার নৈহাটি থেকে ঘুরতে আশা রঞ্জন চক্রবর্তী নামে এক পর্যটক জানান পাহাড় ঘেরা এই লঙ্কাপাড়া জায়গাটা সত্যিই খুব ভালো জায়গা। পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে যে নদীটা বয়ে গেছে সেই নদীটা দেখার মত।চতুর্দিকে চা বাগান সেই চা বাগান দেখার মত।
কলকাতার শ্যামনগর থেকে আসা রণদীপ চক্রবর্তী নামে এক পর্যটক জানান আলিপুরদুয়ার বলুন বা কোচবিহার বলুন বা এইদিকে সিকিম বলুন নর্থ বেঙ্গল আগা গোড়াই সুন্দর। আমার কাছে লঙ্কা পাড়া স্পট টা সত্যিই অনবদ্ধ। সেলফি পয়েন্ট আছে, সামনে ভুটান পাহাড়ের দৃশ্য আছে। এখান থেকে যে নদীটা বয়ে যাচ্ছে সেটার একটা দৃশ্য আছে।