আলিপুরদুয়ার : টাকা নয় বরং গোবরের দিলেই মিলবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি গ্যাস ও পানীয় জলের পরিষেবা। আলিপুরদুয়ার জেলার বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গল লাগুয়া রাজাভাতখাওয়া রাভা বস্তিতে বাস্তবায়িত হয়েছে এই গোবর্ধন বায়ো গ্যাস প্রকল্প।
এই প্রকল্পের অধীনে বায়োগ্যাসের মাধ্যমে জ্বলছে বাতি, রান্নার গ্যাস। পাশাপাশি, জনগণ পাচ্ছে জলের পরিষেবাও। বর্তমানে এই এলাকার বাসিন্দা মানিক রাভার বাড়িতে বসেছে এই প্রকল্পের যন্ত্রাংশ। যেখানে গোবর দিলেই তা বিদ্যুৎ ও গ্যাস উৎপাদন হয়ে যাচ্ছে। তার থেকেই জ্বলছে আলো, রান্নার গ্যাস,পাশাপাশি প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে পানীয় জলের পরিষেবাও।তবে বর্তমানে মানিক রাভার বাড়িতে এর যন্ত্রাংশ থাকায় তিনি এই পরিষেবা পেলেও, এলাকার প্রায় দশটি বাড়িতে এই পরিষেবা প্রদানের লক্ষমাত্রা রয়েছে প্রশাসনের। সেই অনুযায়ী শুরু হয়ে গিয়েছে কাজও।খুব শীঘ্রই সেই কাজও সম্পন্ন হবে বলে জানানো হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
রাজাভাতখাওয়ার রাভাবস্তির এই এলাকায় প্রায় তিনশো পরিবারের বসবাস। আর অধিকাংশ মানুষের প্রধান জীবিকা কৃষিকাজ ও পশুপালন।ফলে বাসিন্দারা টাকার বদলে শুধুমাত্র গোবরদিলেই প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলি পাবেন। গত ২০২৪ সালে জেলা পরিষদ তরফে ৩৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দে এই গোবরর্ধন প্রকল্পের কাজ রাজা ভাতখাওয়া রাভা বস্তিতে সম্পন্ন হয়েছে। কালচিনি ব্লক তথা আলিপুরদুয়ার জেলায় এই প্ৰথম বায়োগ্যাসের এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।এই রাভা বস্তিতে এই বায়োগ্যাস পরিচালনের দায়িত্বে রয়েছেন মানিক রাভা নামের একজন বাসিন্দা। তাকে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকায় এরকম এক প্রকল্প হওয়ায় খুশি বাসিন্দারাও। তাদের কথায়, এলাকার অনেকেরই রান্নার গ্যাস কেনার সামর্থ নেই।ফলেপ্রাণের ঝুঁকি নিয়ে অনেকেই জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করেন বন থেকে।তার বদলে যদি গোবর দিয়েই জ্বালানি গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জলের পরিষেবা মেলে তাহলে অনেক টাকাই সাশ্রয় হয়।
এ বিষয়ে এই রাভা বস্তির বাসিন্দা মানিক রাভা বলেন, “বর্তমানে এই বায়োগ্যাসের মাধ্যমে জ্বালানি গ্যাস এবং দরকারে আলো জ্বালানো যাচ্ছে।এরজন্য প্রতিদিন ২৫ কেজির মতো গোবরের প্রয়োজন হচ্ছে।তবে চিন্তার কারনে হয়ে দাঁড়িয়েছে বায়োগ্যাস উৎপাদনকারী যন্ত্রাংশ চালানোর জন্য মাত্রাতিরিক্ত বিদ্যুতের বিল। তা চালাতে প্রশাসনের সহায়তা মিললে আরও ভালভাবে এই প্রকল্প চলবে।”
যদিও এই বায়োগ্যাস উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রাংশের বিদ্যুতের খরচ রাজা ভাতখাওয়া গ্রাম পঞ্চায়েত দফতর থেকে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।