জুতোপেটার পর গ্রেফতার শিক্ষক অধরা অভিভাবকরা! প্রতিবাদে বংশীহারি এস আই অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ শিক্ষকদের, প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষোভ
বালুরঘাট, ৬ আগষ্ট ——ছাত্রকে শাসন করেছিলেন শিক্ষক। পালটা প্রকাশ্যে জুতোপেটা তাঁকেই! জামাকাপড় ছিঁড়ে, রীতিমতো হেনস্থা — আর শেষমেশ পুলিশ এসে গ্রেফতার করল সেই শিক্ষককেই। অভিযুক্ত অভিভাবকরা? বহাল তবিয়তে!
দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরের বড়াইল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যা ঘটল, তা শিক্ষাক্ষেত্রে নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন জেলার শিক্ষক মহল।
অভিযোগ, অঙ্ক না পারায় কয়েকজন পড়ুয়াকে শাসন করেছিলেন শিক্ষক শুভাশিস বসাক। ‘শাসন’ শব্দটিকে কেন্দ্র করেই তুফান। অভিভাবকদের দাবি, শাসনের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন শিক্ষক— লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধরে পা জখম হয়েছে খুদের, কেউ কেউ খুঁড়িয়ে হাঁটছে।
সেই ক্ষোভেই সোমবার স্কুল চত্বরে রণক্ষেত্র পরিবেশ তৈরি হয়। সালিশি সভা বসলেও মেটেনি ঝামেলা। হঠাৎই একদল ক্ষিপ্ত অভিভাবক, অধিকাংশই মহিলা, শিক্ষকের উপর চড়াও হন। জামা ছিঁড়ে তাঁকে জুতোপেটা করা হয় প্রকাশ্যে। পুলিশ এসে উদ্ধার করলেও গ্রেফতার করা হয় শিক্ষককেই। কিন্তু যারা প্রকাশ্যে একজন শিক্ষককে এভাবে পেটালেন তারা বহাল তবিয়তে।
এই ঘটনার প্রতিবাদেই বুধবার শতাধিক শিক্ষক বংশীহারি থানার এসআই অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভকারী শিক্ষক দিবস বসাক ও উত্তম খা রা বলেন, প্রত্যেক ছাত্র ছাত্রীকে শাসন করবার অধিকার শিক্ষকদের রয়েছে। ঘটনা নিয়ে ওই শিক্ষক শুভাশিস বসাক ভুল স্বীকার করবার পরেও তাকে যেভাবে জুতো দিয়ে পেটানো হয়েছে তাতে তারা যথেষ্টই আতঙ্কিত। এধরণের ঘটনা শিক্ষক সমাজের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করছে। ঘটনার পর শিক্ষককে পুলিশ গ্রেফতার করলেও অভিভাবকদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ। যার বিরুদ্ধে আগামীতে লাগাতার আন্দোলনে নামবেন তারা।
তাঁদের আরো দাবি, এভাবে চললে শিক্ষকতার পরিসরে তৈরি হবে তীব্র আতঙ্ক। ৪৮ ঘণ্টা পেরোলেও অভিভাবকদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। এদিকে এসআই না থাকায় এদিন কোনও লিখিত অভিযোগও জমা দিতে পারেননি বিক্ষোভকারীরা।
শিক্ষা মহলে প্রশ্ন— শিক্ষক মারলে বিচার নেই? অথচ শাসন করলেই শাস্তি?