জাল লটারি কাণ্ডে গ্রেফতার জিয়া খান

0
122

জাল লটারি কাণ্ডে গ্রেফতার জিয়া খান গ্রেফতার হরিরামপুর থানার বামনগ্রাম থেকে,কালদিঘির প্রভাবশালীর নাম ফাঁস, প্রশ্নের মুখে পুলিশ কর্মী স্ত্রী
শীতল চক্রবর্তী, বালুরঘাট, ৬ জুলাই, দক্ষিণ দিনাজপুর: জাল লটারি কাণ্ডে অবশেষে গ্রেফতার হল গঙ্গারামপুর পৌরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ধলদিঘি উত্তরপাড়ার বাসিন্দা জিয়াউল খান ওরফে জিয়া। বহুদিন পলাতক থাকার পর শনিবার রাতে হরিরামপুর থানার পুলিশ পুন্ডরি পঞ্চায়েতের বামনগ্রাম এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। গোটা ঘটনার সূত্রপাত হয় স্টার সংবাদের এক অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন থেকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতারের পর জিয়া জিজ্ঞাসাবাদে কালদিঘি এলাকার এক প্রভাবশালী দুষ্কৃতীর নাম ফাঁস করেছে, যার সঙ্গে এই চক্রের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রয়েছে বলে দাবি। জেলা পুলিশের ডিবি বিভাগ ইতিমধ্যে তাকে আদালতে পেশ করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেছে।
এক সময় টোটো বিক্রেতা জিয়ার হঠাৎ অস্বাভাবিক সম্পদবৃদ্ধি ঘিরে জনমনে প্রশ্ন। ধলদিঘিতে তার রাজপ্রাসাদসম বাড়ি তৈরি, কোটি টাকার মালিকানা, এবং গোপনে চলা জাল লটারি ব্যবসা নিয়ে এলাকাবাসী হতবাক। স্ত্রী পুলিশে, স্বামী জালিয়াতিতে?
জিয়ার স্ত্রী জেসমিন খাতুন বিবি একজন পুলিশ হোমগার্ড। তাঁর বিরুদ্ধেও পুলিশের তরফে এখনো কোনো কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। লাইনে ক্লোজ করেই কি দায় শেষ করছে পুলিশ প্রশাসন? তদন্তকারীদের অনুমান, স্ত্রীর কাছ থেকেই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে।
গত ২৫ জুন গঙ্গারামপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রায় দেড় লক্ষ টাকার জাল লটারি, কম্পিউটার ও একটি টোটো সহ এক যুবক গ্রেফতার হয়। এরপর ধলদিঘির একটি বাড়ি থেকে আরও পাঁচজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর থেকেই জিয়ার সন্ধানে তৎপর ছিল গোটা পুলিশ বিভাগ।
গত শুক্রবার হরিরামপুর ও কালিয়াগঞ্জে চালানো অভিযানে তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ, উদ্ধার হয় প্রচুর জাল লটারি সামগ্রী এবং একটি বুলেরো গাড়ি।
শহরের বাজার, চায়ের দোকান, আড্ডা সর্বত্রই এখন একটাই নাম – জিয়া খান। অনেকেরই প্রশ্ন, জিয়ার এই চক্রের পিছনে কি রাজনৈতিক মদত ছিল? পুলিশ কর্মী স্ত্রী বাড়িতে থাকার পরেও দীর্ঘদিন ধরে কিভাবে নির্বিঘ্নে এত বড় প্রতারণা সাম্রাজ্য চালাতে পারল সে?
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ইন্দ্রজিৎ সরকার জানান, “জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে,ঘটনায় যেই জড়িত থাকুক না কেন, কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না। কালদিঘির প্রভাবশালীকেও খুব শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে।”
এই ঘটনায় পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা, রাজনৈতিক যোগসাজশ এবং সমাজে দ্রুত অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রবণতা – সব কিছু মিলিয়ে এক জটিল ও চাঞ্চল্যকর চিত্র উঠে আসছে। তদন্তের অগ্রগতি এখন দক্ষিণ দিনাজপুরের মানুষের কড়া নজরে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here