চার বছর ধরে নিখোঁজ বিধায়ক ! হিলির চকবলরামে বেহাল রাস্তা সারাতে ইট ফেলে পথে নামলেন গ্রামবাসীরা
বালুরঘাট, ১৪ জুন ——- একটাও ভোট মিস করেননি। বিধায়ক এসেছিলেন—ভোট চাইতে। তারপর? তারপর আর ফিরে তাকাননি। অথচ প্রতিদিন তাকিয়ে থাকতে হয় চকবলরাম গ্রামের হাজারো মানুষকে—একটা রাস্তা পেরিয়ে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে নামতে।
হিলি ব্লকের বিনশিরা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত চকবলরাম, বালুরঘাট বিধানসভার অন্তর্ভুক্ত। এখানকার তিনটি গ্রামের প্রায় হাজার খানেক মানুষ নির্ভরশীল একটি মাত্র রাস্তার উপর, যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৮০০ মিটার। ২০১১ সালে তৎকালীন মন্ত্রী শংকর চক্রবর্তীর উদ্যোগে ঢালাই রাস্তাটি তৈরি হয়েছিল। তার পর বয়ে গিয়েছে প্রায় দেড় দশক। রাস্তা মেরামত হয়নি একবারও। এখন সিমেন্ট-পাথর উঠে গিয়ে ঢালাইয়ের চিহ্ন মুছে গিয়েছে বহু জায়গায়। বাকি অংশ কাদায় ডুবে কার্যত অচল। বর্ষা এলে রাস্তা আর রাস্তা থাকে না—হয়ে যায় জল-কাদার খাল।
বারবার জানানো হয়েছে পঞ্চায়েতকে, অভিযোগ তোলা হয়েছে ‘দিদিকে বলো’তেও। বিডিও অফিস তদন্ত করলেও সমাধান হয়নি। শেষমেশ আর ভরসা না পেয়ে নিজেরাই রাস্তা সারাতে কোমর বেঁধে নেমেছেন গ্রামের মানুষ। চাঁদা তুলে কিনেছেন সামান্য ইট। ভাঙা রাস্তার গর্তে সেই ইট ফেলে খানিকটা চলার মতো করেছেন তাঁরা।
স্থানীয় বাসিন্দা অনিল সরকার, আশীষ সরকার ও পরেশ সরকাররা বলছেন, “চার বছরে একবারও এলাকায় আসেননি বিধায়ক। কী জানাব, কাকে বলব?” “আমরা বুঝতে পারি না, বিধায়ক আদৌ আমাদের এলাকার কিনা!”
এলাকার রেশন ডিলার রূপম সরকার জানালেন, “দিদিকে বলোতে অভিযোগ করেছিলাম। বিডিও অফিস থেকে লোক এসেও দেখে গিয়েছেন। কিন্তু তারপর আর কিছু হয়নি।”
এই প্রসঙ্গে হিলি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সরস্বতী সরকার মন্ডল জানান, “বিষয়টি জানা নেই। বিডিওর সঙ্গে কথা বলে খোঁজ নিয়ে দেখবেন তিনি।”
কিন্তু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে—বিধানসভা ভোটের আগেও কি এই রাস্তা ঠিক হবে? নাকি ভোট এলেই আবার এক দিনের ‘দর্শন’ দিয়ে বেপাত্তা হবেন জনপ্রতিনিধি?