গ্রামবাসীদের উদ্যোগে রাস্তা সংস্কার: প্রশাসনের প্রতিশ্রুতির পরও কাজ শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ
শীতল চক্রবর্তী, বালুরঘাট, ১১ অক্টোবর,দক্ষিণ দিনাজপুর।সরকারি উদ্যোগের অভাবে বেহাল রাস্তা সংস্কারের দায়িত্ব এবার নিজের কাঁধে তুলে নিলেন এলাকার গ্রামবাসীরা। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারী ব্লকের গাঙ্গুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত তালতলা মোড় থেকে আগাপাড়া পর্যন্ত রাস্তার কাজ স্বয়ং গ্রামবাসীরাই করছেন।কয়েকদিন আগে আগাপাড়া গ্রামের সুশীলা মুর্মু নামে এক গর্ভবতী মহিলার প্রসব যন্ত্রণা ওঠে। তখন তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হলেও, রাস্তার করুণ অবস্থার কারণে গাড়িটি গ্রামে ঢুকতে পারেনি। বাধ্য হয়ে গ্রামবাসীরা তাঁকে খাটিয়ায় তুলে নিয়ে যাওয়ার পথে রাস্তাতেই নবজাতকের জন্ম হয়।এই ঘটনাই নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা গ্রামকে।
বংশীহারী ব্লকের গাঙ্গুরিয়া পঞ্চায়েতের আগাপাড়া গ্রামের এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন বহু মানুষের যাতায়াত। বর্ষাকালে কাদা, গর্ত আর জলজমায় গ্রামবাসীদের দুর্ভোগের শেষ ছিল না। অবশেষে আর অপেক্ষা না করে, চাঁদা তুলে নিজেরাই রাস্তা সংস্কারের কাজে নেমে পড়েন তাঁরা।
গ্রামবাসীরা জানান, আগস্টের ২৮ তারিখে নছুয়াপাড়া মোড়ে পথ অবরোধ করে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল। তখন স্থানীয় গাঙ্গুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সুকুমার রায়, উপপ্রধান আফরোজা খাতুন ও সদস্যা বন্দনা মার্ডি প্রতিশ্রুতি দেন তালতলা মেনরোড থেকে আগাপাড়া টুডুরবাড়ি পর্যন্ত রাস্তা তৈরি হবে। কিন্তু দেড় মাস কেটে গেলেও কাজ শুরু না হওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দা মার্তিনা মুর্মু ও মানে হেমরম অভিযোগ করে জানান,“রাস্তা এতটাই খারাপ যে, বৃষ্টি হলেই বাড়ি থেকে বেরোনো যেত না। অসুস্থ বা প্রসবযন্ত্রণা ওঠা রোগীকে মাথায় করে দু’ কিলোমিটার দূরে নিয়ে যেতে হতো। পঞ্চায়েতে বহুবার বলেছি, কেউ দেখতেও আসেনি। তাই বাধ্য হয়ে চাঁদা তুলে নিজেরাই রাস্তা ঠিক করছি। এটা সরকারের কাজ, কিন্তু আমরাই করছি।”
রাস্তাটি দিয়ে বকরাডাঙ্গি, আগাপাড়া, বিকলডাঙ্গা হয়ে দৌলতপুর যাওয়া যায়।এলাকায় আইটি আই কলেজ, কেজি স্কুল ও হাইস্কুলও রয়েছে। স্কুলগামী শিশু, বয়স্ক ও রোগীদের জন্য এই রাস্তা অপরিহার্য।
এ বিষয়ে বংশীহারী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গণেশ প্রসাদ জানান,“বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রাস্তাটি বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। খুব শিগগিরই সংস্কার কাজ শুরু হবে।”
বংশীহারী ব্লকের বিডিও বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিয়েছেন এবং দ্রুত সমস্যার স্থায়ী সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।” এখন দেখার বিষয় এটাই যে, কবে নাগাদ এই রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয় সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে সকলেই।