গঙ্গারামপুর পুরসভার অস্থায়ী নাইট গার্ড এক অসুস্থ ব্যক্তির কাছে থাকা প্রায় 2 লক্ষাধিক টাকা উদ্ধার করে প্রশাসনের মাধ্যমিক পুলিশ আগে তুলে দিল, ধন্যবাদ জানিয়েছেন পুরসভার চেয়ারম্যানসহ অনেকেই শীতল চক্রবর্তী বালুরঘাট ৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ দিনাজপুর। পুসভার অস্থায়ী নাইট গার্ডের কাজ করা যুবক এক ব্যক্তিকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে তার কাছে থাকা ১লক্ষ ৭২হাজার ৯৪০টাকা পুলিশ প্রশাসনের হাতে তুলে দিল।দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর পুরসভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মঙ্গলবার রাতে নাইট নাইট গার্ডের কাজ করার সময় গঙ্গারামপুর পুরসভা এলাকার ১২নম্বর ওয়ার্ডের বসাকপাড়ার বাসিন্দা বুদ্ধ দাসের এমন সততায় মুগ্ধ পুরসভার চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে এক্সিকিউটিভ অফিসারের। পরিবারে চরম অভাব থাকলেও টাকার লোভ হয়নি উৎসর অস্থায়ী কর্মী বুদ্ধ বাবুর। তিনি বললেন সততাই একমাত্র তার মূলধন।তাই ওই ব্যক্তিকে সুস্থ করে বিষয়টি পুরসভার একাধিক আধিকারিককে জানিয়ে বাসস্ট্যান্ড চত্বরে থাকা অনেককেই ডেকে নিয়ে প্রশাসনের হাতে ওই টাকা তুলে দেওয়া হয়।গঙ্গারামপুর পুরসভার ১২নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত বংশী বদন দাস ১৯৯৩ সালে পুরসভার মাধ্যমে নাইট গার্ডের চাকরি পেয়েছিলেন পুরসভার অস্থায়ী কর্মী হিসেবে।২০২১ সালে তিনি মারা যান। পরে গঙ্গারামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান প্রশান্ত মিত্র মানবিক ভূমিকা পালন করে মৃত বংশীবদন দাসের ছেলে বুদ্ধ দাসকে তার জায়গায় অস্থায়ী হিসেবে নিয়োগপত্র দেন। গঙ্গারামপুর পুরসভা সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতেও প্রতিদিনের মতো গঙ্গারামপুর বাস স্ট্যান্ড এলাকায় নাইট গার্ডের কাজ করছিল অস্থায়ী কর্মীর বুদ্ধ দাস। যাচ্ছি তখন তাই বারোটার কাছাকাছি। সেই সময় বুদ্ধবাবু দেখতে পান বাসস্ট্যান্ডের একপাশে এক ব্যক্তি ও চৈতন্য অসুস্থ অবস্থায় পড়ে রয়েছে।সেই সময় পুরসভার পাহারাদার বুদ্ধ দাস দেখতে পান তার শরীরের মধ্যে নগদ এক লক্ষ ৭২হাজার ৯৪০টাকা ও একটি দামি মোবাইল ফোন রয়েছে। নগর দুই টাকা এবং দামি ফোনটি উদ্ধার করার পরে বিষয়টি পুরসভার চেয়ারম্যান প্রশান্ত মিত্র , পুরসভার এক্সিকিউটিভ পঙ্কজ পুরোকায়াত,ওয়ার্ডের বাসিন্দা তথা বড়বাবুর দায়িত্বে থাকা শ্যামন দাসকে বিষয়টি জানান। তারা তাকে নির্দেশ দেন প্রশাসনকে বিষয়টি জানাতে। এরপরেই তার কাছে ছুটে আসে বাসস্ট্যান্ডে সেই সময় থাকা অনেক দোকানদারেরা। পৌরসভার অস্থায়ী কর্মীর কাছ থেকে খবর পেয়ে ছুটে আসে থানার আধিকারিকেরাও।ততক্ষণে ওই অসুস্থ অচৈতন্য হয়ে পড়ে থাকা ব্যক্তিকে উদ্ধার করে জল ঢেলে সুস্থ করেন বুদ্ধবাবু সহ বাকিরা। পরে বুদ্ধ দাসের কাছে থাকা ওই টাকাও মোবাইল ফোনটি গঙ্গারামপুর থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয় বুদ্ধবাবু বাকি বাকি বাসস্ট্যান্ডে থাকা দোকানদারদের সামনে। পুরসভার নাইটগার্ড অস্থায়ী কর্মী বুদ্ধ দাসের পরিবারে মা ছবি দাস ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত। বুদ্ধবাবু স্ত্রী স্বর্ণলতা সরকার (দাস) ও তার ছেলেকে নিয়ে তাদের অভাবের সংসার। কোন মত মায়ের ভাতা ও অস্থায়ী নাইটগার্ডের কাজ করেছি টাকা পান তা দিয়ে চলে তাদের সংসার। বুদ্ধ দাস জানিয়েছেন,”গরিব হলেও অসৎ নই।তাই মানবিকতার খাতিরেই ওই ব্যক্তিকে সুস্থ করে তুলে তার কাছে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন পুরসভার আধিকারিকদের নির্দেশে থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।” গঙ্গারামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান প্রশান্ত মিত্র বলেন,”ওর কাজে আমি মুগ্ধ। ধন্যবাদ জানাই এমন কাজ করার জন্য।” গঙ্গারামপুর পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার পঙ্কজ পুরোকায়েত জানান,”ওর কাজে আমরা ভীষণ খুশি।পুরসভার চেয়ারম্যানের দেখানো পথেই সককে যে কাজ করছে তা এই ঘটনা প্রমাণ মেলে।” গঙ্গারামপুর থানার আইসি শান্তনু মিত্র জানিয়েছেন”ওই ব্যক্তির নাম টুনটুন যাদব, তার বাড়ি বিহারে।রাতে বাস স্ট্যান্ড থেকে বাস ধরে অন্যত্র যাবার জন্যই সে সেখানে এসেছিল।টাকা ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। ধন্যবাদ জানাই পুরসভার কর্মী সহ বাসিন্দাদের।” আবারো প্রমাণ হলো যে, সমাজ থেকে মানবিকতা হারিয়ে যায়নি।

















