খাপ পঞ্চায়েতের ছায়া এবারে বালুরঘাটের বোয়ালদাড়ে, প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মহিলা ঘটিত বিষয় নিয়ে পঞ্চায়েতে সালিশি সভা চালানোর অভিযোগ উপপ্রধানের বিরুদ্ধে
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১৩ জুন —– খাপ পঞ্চায়েতের ছায়া এবারে বালুরঘাট ব্লকের বোয়ালদাড় গ্রাম পঞ্চায়েতে। প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পঞ্চায়েতে বসেই সালিশি সভা চালানোর অভিযোগ খোদ উপপ্রধানের বিরুদ্ধে। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার সহবাস ও তার ফলে গর্ভবতী হয়ে পড়া এক কিশোরীকে পঞ্চায়েতে ডেকে এনে সালিশি সভার মাধ্যমে মেটানোর পরামর্শ উপপ্রধানের। সোমবার এই ঘটনাকে রীতিমতো আলোড়ন ছড়িয়ে পড়ে বালুরঘাট ব্লকের বোয়ালদাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের খাসপুর এলাকায়। অভিযোগ, মেয়েটি গর্ভবতী ছিল কিনা তা পরীক্ষা করার নিদান এদিন পঞ্চায়েতের তরফ থেকে নতুন করে দেওয়া হয়েছে। যাকে ঘিরেই উঠেছে জোড়ালো প্রশ্ন? পুলিশ-প্রশাসন থাকতে পঞ্চায়েতে ডেকে কিভাবে মহিলা ঘটিত এইরকম একটি গুরুতর অভিযোগের নিষ্পত্তি করছিল পঞ্চায়েতের উপপ্রধান? কিভাবেই বা পঞ্চায়েতের ভেতরে সালিশি সভা বসিয়েছিলেন ওই উপপ্রধান তা নিয়েও প্রশ্ন? যদিও বোয়ালদাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান পিন্টু বসাক জানিয়েছেন, সালিশি সভা বসে ছিল। তিনি বলছেন যে এই বিষয়টি পঞ্চায়েত এর মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা সম্ভব নয়। কিন্তু অভিযোগকারিণীর মা সোনিয়া মাল্লার (ভুল নাম) অভিযোগ তিনি পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রায় সাত মাস আগে। কিন্তু বার বার তারিখ দিয়েও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েতের তরফে। এখন পঞ্চায়েতের তরফে জানানো হয়েছে, তার মেয়ে যে গর্ভবতী ছিল সে বিষয়টি আরো একবার পরীক্ষা করে দেখাতে হবে। প্রশ্ন এখানেই পঞ্চায়েতের এই ধরনের কোন বিষয়ে কাজ করার কি এক্তিয়ার রয়েছে ? বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে উপপ্রধান পিন্টু বসাক বলেন এ দায়িত্ব পঞ্চায়েতের নয় বিষয়টি সমাধান করা যায়নি পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার জন্য বলেছি।
জানা যায়, বোয়ালদাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের খাসপুরের বাসিন্দা সোনিয়া ও তার মেয়ে পিঙ্কির(ভুল নাম) সাথে গোয়ায় কাজে গিয়ে পরিচয় হয় এলাকারই আর এক যুবকের সাথে। সেখান থেকেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আর এখান থেকেই দুজনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।মায়ের সাথে গোয়াতে কাজ করতে গিয়েছিলেন অভিযোগকারিণী ওই মহিলা। গোয়াতেই অভিযুক্তর সাথে পরিচয় সেখানেই সম্পর্ক। অভিযোগ সেই সময়ই গোয়াতে গর্ভবতী হয়েপড়ে ওই মহিলা। সেখান থেকে ফিরে আসে খাসপুর গ্রামে এবং এখানেই ওষুধ খাইয়ে গর্ভস্থ শিশুটিকে নষ্ট করে ফেলা হয়। এরপর থেকেই বিয়ে করতে অস্বীকার করেছে অভিযুক্ত ওই যুবক বলে অভিযোগ। আর এরপরেই এই সমস্যার সমাধান করতে পঞ্চায়েতে সালিশি সভা বসিয়ে সমাধানের উদ্যোগ নেয় বোয়ালদাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান পিন্টু বসাক বলে অভিযোগ। পুলিশ বা প্রশাসন থাকতে কিভাবে পঞ্চায়েতে বসে মহিলা ঘটিত ওই বিষয়ের সালিশি সভা করান তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। প্রশাসনকে অন্ধকারে রেখে এই কাজ করার এক্তিয়ার কি পঞ্চায়েতের রয়েছে উঠেছে সেই প্রশ্নও।
অভিযোগকারী কিশোরীর মা বলেন, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার মেয়ের সাথে একাধিকবার সহবাস করেছে প্রতিবেশী যুবক। গর্ভবতী মেয়ের বাচ্চাও নষ্ট করেছে। পঞ্চায়েতে ডেকে বিষয়টি মীমাংসা করবার জন্য তাদের ডাকা হয়েছিল।
অভিযোগকারী কিশোরী বলেন, তিনি যে গর্ভবতী হয়েছিলেন তা ফের পরীক্ষা করে দেখানোর কথা বলা হয়েছে পঞ্চায়েতের তরফে। তারা চান এর সুবিচার।
পূর্ণিমা মাল্লা জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত থেকে তাদের ডাকা হয়েছিল জন্য তারা এসেছেন। তার ছেলে ভরতকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। পঞ্চায়েতে ডাকা সালিশি সভায় মেয়ের গর্ভবতী হওয়ার কোন রিপোর্ট দেখাতে পারেনি তারা।