কেন্দ্রীয় প্রকল্পে চাকরির টোপ!

0
145

কেন্দ্রীয় প্রকল্পে চাকরির টোপ!গঙ্গারামপুরে কোটি টাকার প্রতারণা,তিন যুবক গ্রেফতার-তৃণমূল নেতারা পাশে দাঁড়ালেন প্রতারিত যুবতী গৃহবধূদের
শীতল চক্রবর্তী, বালুরঘাট, ২০ এপ্রিল —— খোদ কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর গড়েই এবারে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পে চাকরি দেওয়ার টোপ! সেই প্রতিশ্রুতি দেখিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে প্রায় ৩০০জন বেকার যুবতী ও গৃহবধূর কাছ থেকে কোটি টাকারও বেশি প্রতারণার অভিযোগ উঠল তিন যুবকের বিরুদ্ধে। শনিবার সন্ধ্যায় শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকার ‘স্মার্ট ভ্যালু নারিস হেলথ’ নামে একটি অফিস থেকে হাতেনাতে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় অভিযুক্তদের। তৃণমূলের নেতাদের কাছে গিয়ে প্রতারিতরা পাশে দাঁড়ানো আবেদন করলে বা তাদের পাশে থেকে সহযোগিতা আশ্বাস দেন। ঘটনা শোরগোল পড়েছে এলাকাজুড়ে।
পুলিশের হাতে ধৃত অভিযুক্ত কৃষ্ণকান্ত মন্ডল, অসীম কুমার জানা ও পবিত্র জানা—এদের মধ্যে একজন পূর্ব মেদিনীপুর, অন্য দুই যুবকের বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের বাসিন্দা। অভিযোগ,বছরখানেক আগে ‘কেন্দ্রীয় প্রকল্পে চাকরি’ ও ‘নার্সিং ট্রেনিং’ দেওয়ার নামে গঙ্গারামপুর শহরে নতুন বাসস্ট্যান্ডে একটি অফিস খুলে প্রতারণার ফাঁদ পাতে এই চক্র।কোনও গৃহবধূকে নার্সিং, আবার কাউকে মেডিসিন সেলস বা প্রশিক্ষণের নাম করে ৩০-৩৫ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়। প্রতারিতদের একজন চিকিৎসক বলে পরিচয় দিয়ে এমনকি ভুয়ো ওষুধ বিক্রি করানো সহ মহিলাদের কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।প্রতারিতদের দাবি, টাকা দেবার উপযুক্ত রসিদ রয়েছে তাঁদের হাতে।
শনিবার সন্ধ্যায় প্রতারিতরা বুঝতে পারেন, অফিসটি বন্ধ করে দিয়ে অভিযুক্তরা চম্পট দেওয়ার চেষ্টা করছে। যারপরেই প্রতারিতরা স্থানীয় তৃণমূল পার্টি অফিসে গিয়ে অভিযোগ জানালে তাদের পাশে দাঁড়ান গঙ্গারামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি রঞ্জন প্রামাণিক ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কৌশিক সাহা।যে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে।
গঙ্গারামপুরে বেলবাড়ি এলাকার বাসিন্দা প্রতারিত গৃহবধূ লক্ষ্মী রাজবংশী বলেন, “তৃণমূল নেতারা পাশে না দাঁড়ালে আমরা ন্যায় পেতাম না।প্রশাসন করা ব্যবস্থা নেই সেই দাবি জানাই।” একইসুরে প্রতারিত সুমনা পারভিন বলেন,“যে কোনও লোভনীয় চাকরির টোপে পা দেবেন না কেউ। আমরা ঠকেছি আপনারা কেউ ঠকবেন না। ধন্যবাদ জানিয়ে তৃণমূল নেতাদের যারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করেছে।”
গঙ্গারামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি রঞ্জন প্রামাণিক বলেন,”মানুষজনদের পাশে তৃণমূল কংগ্রেসই থাকে।তাই তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করা হয়েছে। আগামীতেও তাদের পাশে থেকে সহযোগিতা করব”
রাজ্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কৌশিক সাহা বলেন,”বিপদের সময় আমরাই মানুষজনদের পাশে থাকি।কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পের নাম করে কোটি টাকা তুলেছে তারা। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও হোক সেই দাবি জানাই।”
যদিও অভিযুক্তদের দাবি, তাঁদের কাছে সব কাগজপত্র আছে, তাঁরা নির্দোষ। গঙ্গারামপুর থানার আইসি শান্তনু মিত্র জানিয়েছেন,” বাকি অভিযুক্তদেরও খোঁজ চলছে এবং আদালতে রিম্যান্ড চেয়ে তিনজনকে পাঠানো হয়েছে।”
বিজেপির জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী বলেন ,”এমন কাজ তৃণমূল করে,বিজেপি করে না বলে পাল্টা দোষারোপ করেছেন তিনি।”
প্রশ্ন উঠছে,এক বছরের বেশি সময় ধরে এই অফিস শহরের মধ্যেই প্রতারণা চালিয়ে গেলেও প্রশাসন বিষয়টি জানল না কী করে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here