সারের কালোবাজারিতে ফুসছে দক্ষিণ দিনাজপুর, কৃষকদের ব্যারিকেড ভাঙা অভিযানে উত্তাল বালুরঘাট
বালুরঘাট, ১৬ জুলাই —– সারের কালোবাজারি রুখতে পথে নামতেই বিক্ষোভ ফেটে পড়ল কৃষকরা। কৃষি দপ্তর ঘেরাও, ব্যারিকেড ভাঙচুর, পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি—বুধবার বালুরঘাট যেন ফুটেছিল কৃষক বিদ্রোহে। সরকারি ভর্তুকি মূল্যের সারের বদলে একের পর এক দোকানে চড়া দাম, তার প্রতিবাদেই হাজারেরও বেশি কৃষক ঝাঁপিয়ে পড়লেন আন্দোলনে।
এদিন দক্ষিণ দিনাজপুর কৃষক সমিতির ডাকে জেলার নানা প্রান্ত থেকে কৃষকরা জমা হন বালুরঘাটে। কৃষি দপ্তরের সামনে ধামসা, মাদল বাজিয়ে বিক্ষোভে সরব হন তারা। অভিযোগ, ২৪২ টাকার ইউরিয়া কিনতে হচ্ছে ৩৪০ টাকায়। ১২০০ টাকার সার ২০০০ টাকা পর্যন্ত ছাড়িয়ে যাচ্ছে। গোডাউনে সার থাকলেও দোকানদাররা বলছেন, ‘মজুত নেই।’ প্রশাসনকে বারবার জানিয়ে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
কৃষক নেতা সঞ্জয় মন্ডল স্পষ্ট বললেন, ‘‘সরকারি সিদ্ধান্ত ছিল ভর্তুকির সারের। অথচ এখনো তা কার্যকর নয়। কালোবাজারির সঙ্গে প্রশাসনের একাংশের যোগসাজশ আছে বলেই এতদিনেও ব্যবস্থা হয়নি।’’
বিক্ষোভ ঘিরে আগাম সতর্কতায় ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। তবুও উত্তেজিত কৃষকরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ভবনে ঢোকার চেষ্টা করেন। লোহার ব্যারিকেড তুলে পুলিশকে ঠেলে সরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। দীর্ঘ টানাপোড়েনের পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হয়। পরে কৃষক প্রতিনিধি দল উপ কৃষি অধিকর্তা অমিত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনায় বসেন।
অমিতবাবু জানান, ‘নির্ধারিত মূল্যের বেশি দাম চাইলে লিখিত অভিযোগ করুন। ব্যবস্থা নেব। ইতিমধ্যেই নয়জন ডিলারকে সাসপেন্ড, দুজনের লাইসেন্স বাতিল হয়েছে।’ তবে কৃষকদের প্রশ্ন, এত অভিযোগ, এত আশ্বাস—তবু কেন মিলছে না সুরাহা? ধান রোপণের ভরা মরসুমে সারের সংকট কাটবে তো? না কি প্রতিবারের মতোই আশ্বাসেই শেষ হবে সব?