কুশমন্ডিতে স্কুল ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের মৃত ছাত্রের পরিবারের। অগ্নিসংযোগের ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার পুলিশের
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১১ জুলাই —— মিড ডে মিলের লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ স্কুল ছাত্রের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রনক্ষেত্রের ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করল কুশমন্ডি থানার পুলিশ। ঘটনা নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বদলি ও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন মৃত স্কুল ছাত্রের পরিবারের লোকেরা। ঘটনাকে ঘিরে বৃহস্পতিবারও থমথমে পরিস্থিতি দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমন্ডির কচড়া হাইস্কুলে।
জানা যায়, কুশমন্ডি ব্লকের অন্তর্গত কচড়া হাই স্কুলে ওইদিন মিড ডে মিল চলবার সময় খাবার নেবার লাইনে দাঁড়িয়ে আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়ে স্কুলেরই সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র অভিজিৎ সরকার(১২)। এরপর স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়ারা অসুস্থ ঐ ছাত্রকে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অফিসে নিয়ে যায় এবং সেই ছাত্রটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ করেন। যদিও স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিষয়টি কে সেভাবে গুরুত্ব না দিয়ে অসুস্থ ওই ছাত্রের অভিভাবককে স্কুলে ডেকে পাঠায়। এর মাঝেই কিছু সময় পেরিয়ে যায়। এরপর অসুস্থ ছাত্রের অভিভাবকরা স্কুলে পৌছে অভিজিৎ সরকার-কে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা হলেও পথেই মৃত্যু হয়েছে অসুস্থ ওই ছাত্রের। আর এতেই উত্তেজিত হয়ে উঠে স্থানীয় বাসিন্দারা ও স্কুলের অনান্য ছাত্ররা। স্কুলের গেট ভেঙ্গে উত্তেজিত জনতা স্কুলে ভেতরে প্রবেশ করে অবাধে ভাঙচুর চালায়। বেধড়ক মারধর করা হয় স্কুলের প্রধান শিক্ষককে। এরপর স্কুলের লাইব্রেরীতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি স্কুলের জানালা, দরজা, ফ্যান ভেঙ্গে উত্তেজিত জনতা রাজ্য সড়কও অবরুদ্ধ করে। যে ঘটনার খবর পেয়ে এসডিপিও দীপাঞ্জন ভট্টাচার্য-র নেতৃত্বে কুশমন্ডি থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকায় পৌছে স্বাভাবিক করে পরিস্থিতি। যা নিয়েই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রানা বসাকের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চারজনকে গ্রেফতার করেছে কুশমন্ডি থানার পুলিশ। এদিকে এই ঘটনা নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধেই আঙুল তুলেছেন মৃত স্কুল ছাত্রের পরিবারের লোকেরা। তাদের দাবি প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে অসুস্থ ছেলেটিকে স্কুলে না বসিয়ে রেখে হাসপাতালে নিয়ে গেলেই তার জীবন বাচানো সম্ভব হত।
মৃত ছাত্রর দাদা কৌশিক সরকার বলেন, সানান্য জ্বর ছিল তার ভায়ের শরীরে। স্কুলে মিড ডে মিলের খাবার নিতে গিয়েই পড়ে অসুস্থ হয়ে যায় সে। এরপরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে প্রায় ৪৫ মিনিট স্কুলেই ফেলে রাখে প্রধান শিক্ষক। এরপর বাড়ির লোকেরা স্কুলে পৌঁছে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। ঘটনা নিয়ে ওই প্রধান শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে কুশমন্ডি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তারা।
জেলা পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তাল জানিয়েছেন, অভিযোগ পেয়েই ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।