কুলিক পক্ষীনিবাসের পাখি গননার কাজ শুরু করল রায়গঞ্জ বন বিভাগের কর্মীরা

0
689

রায়গঞ্জ :—-করোনা আবহের কারনে পর্যটকের আনাগোনায় বিধিনিষেধ থাকলেও এশিয়ার বৃহত্তম পক্ষীনিবাস কুলিক পক্ষীনিবাসের পাখি গননার কাজ শুরু করল রায়গঞ্জ বন বিভাগের কর্মীরা। রবিবার থেকে রায়গঞ্জ শহর সংলগ্ন কুলিক পক্ষীনিবাসের পাখি গননার কাজে রায়গঞ্জ বন বিভাগের সাথে সাহায্য সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিল পশুপ্রেমী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা উত্তর দিনাজপুর পিউপিলস ফর অ্যানিমেলস এর সদস্যরা। এছাড়াও রায়গঞ্জ পিউপিলস ফর অ্যানিমেলস এবং হেমতাবাদ জনকল্যান সমিতি আরও দুটি পশুপ্রেমী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বন দপ্তরের আহ্বানে সাড়া দিয়ে পাখি গননার কাজে নামেন।

উত্তরবঙ্গের অন্যতম সেরা পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিগনিত হয়েছে রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষীনিবাস। এশিয়ার বৃহত্তম পক্ষীনিবাস ” রায়গঞ্জ কুলিক ওয়ার্ড লাইফ বার্ড স্যাঞ্চুরি ” তে প্রতিবছর জুন মাসের দিকে হাজার হাজার মাইল দূর থেকে কয়েক লক্ষ পরিযায়ী পাখি ভীড় জমায়। ওপেনবিল স্টক, নাইট হেরন, ইগ্রেট, করমোরেন্ট নামের এই চার প্রজাতির পরিযায়ী পাখিরা কুলিক নদীর ধারের জঙ্গলে এসে বাসা বাঁধে প্রজনন করে, শাবকদের বড় করে তোলে। শাবকেরা উড়তে শিখলে ডিসেম্বর মাস নাগাদ এরা ফিরে যায় যেখান থেকে এরা আসে। সম্ভবত অতীতের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে এবছর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পরিযায়ী পাখি এসেছে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে লকডাউনের কারনে দূষণ অনেকটাই কম হওয়ায় পাখিদের বাসস্থান ও খাবারের অনুকূল পরিবেশ গড়ে ওঠায় পাখির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অনুমান পশুপ্রেমী সংস্থা ও রায়গঞ্জ বন বিভাগের কর্তাদের। রায়গঞ্জ কুলিক অরন্যের এই কুলিক পক্ষীনিবাসে প্রতিবছরই সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে পাখি গননার কাজ শুরু করে রায়গঞ্জ বন দপ্তর। রবিবার থেকে এশিয়ার বৃহত্তম পক্ষীনিবাসে পাখি গননার কাজ শুরু হল। পক্ষীনিবাসের প্রতিটি গাছে কতগুলি পাখির বাসা আছে এবং প্রতিটি বাসায় কটি করে পাখি রয়েছে তা গননা করেই কুলিক পক্ষীনিবাসের পাখি গননা করা হয়। ২০১৮ সালে রায়গঞ্জ কুলিক পক্ষীনিবাসে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা ছিল ৯৮৫৬২ টি। ২০১৯ সালে তা কিছুটা কমে গিয়ে দাঁড়ায় ৯৩০৮৮ টি।

রায়গঞ্জ বন বিভাগ ও পশুপ্রেমী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দাবি এবছর পাখির সংখ্যায় বিগত দিনের সব রেকর্ডকে ছাপিয়ে যাবে। পশুপ্রেমী সংস্থা উত্তর দিনাজপুর পিউপিলস ফর অ্যানিমেলস এর সাধারণ সম্পাদক গৌতম তান্তিয়া জানিয়েছেন, কুলিক পক্ষীনিবাস রায়গঞ্জ তথা জেলার গর্ব। এই পক্ষীনিবাসকে রক্ষা করার জন্য এলাকার সমস্ত জলাশয়কে আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে যাতে পরিযায়ী পাখিরা পর্যাপ্ত খাবার পায়। কুলিক নদীর দূষন রোধে নদীর ধারে চাষের জমিতে রাসায়নিক সার প্রয়োগ বন্ধ করা এবং নদীতে আবর্জনা ফেলা যাতে বন্ধ করা যায় তার উদ্যোগ নিতে হবে। রায়গঞ্জ বন বিভাগের রেঞ্জার প্রতিমা লামা জানিয়েছেন, প্রতি বছরের মতো এবারেও কুলিক পক্ষীনিবাসে পাখি গননার কাজ শুরু হয়েছে। এই পাখি গননার কাজে তিনটি পশুপ্রেমী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here