কলেজ আছে, নেই পর্যাপ্ত ছাত্র! দুবছর ধরে বন্ধ ১৬ জন অস্থায়ী কর্মীর বেতন। কুমারগঞ্জে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ জমিদাতাদের
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ৪ জুলাই —— ছাত্র সংকটে ধুঁকছে আস্ত কলেজ! প্রায় দুবছর ধরে বেতন বন্ধ ১৬ জন অস্থায়ী কর্মীর। ক্ষোভে ফুসছেন জমি দাতারা। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়ে কলেজ কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে উষ্মা প্রকাশ অস্থায়ী কর্মীদের। ঘটনার কথা স্বীকার কলেজ অধ্যক্ষর। আলোড়ন দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ কলেজে।
সংখ্যালঘু অধ্যুষিত কুমারগঞ্জ ব্লকের প্রত্যন্ত এলাকার ছেলে মেয়েদের সুবিধার্থে থানা সংলগ্ন এলাকায় খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে ২০১৬ সালে বিপুল অর্থ ব্যয়ে চালু হয় এই কুমারগঞ্জ কলেজটি। কলেজ সুত্রের খবর অনুযায়ী বর্তমানে সেখানেই ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা রয়েছে প্রায় চারশো। যাদের শিক্ষাদানের জন্য ২১ জন স্থায়ী অধ্যাপকও রয়েছেন। শুধু তাই নয়, কলেজের যাবতীয় কাজ পরিচালনার জন্য ২০১৮ সালে গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি পদে প্রায় ১৬ জন অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করে কলেজ কতৃপক্ষ। তারপর বেশ কয়েক বছর সুষ্ঠুভাবে কলেজ পরিচালনা হলেও, সমস্যা তৈরি হয় করোনার লকডাউনের পর থেকেই বলে দাবি করেছেন কলেজ কতৃপক্ষ। তাদের কথায় ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা কমতে থাকায় কলেজের নিজস্ব তহবিল প্রায় তলানিতে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। আর যার জেরেই প্রায় দুবছর ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে কলেজের অস্থায়ী ওই ১৬ জন কর্মীর বেতন। এদিকে দীর্ঘ মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় ইতিমধ্যে কলেজে আসবার আগ্রহও হারিয়েছেন অস্থায়ী কর্মীদের অনেকেই। আর যে কারনে গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডির কাজ এখন করতে হচ্ছে কলেজের অধ্যাপকদেরই। যাকে কেন্দ্র করে কিছুটা অসন্তোষও তৈরি হয়েছে অধ্যাপকদের একাংশের মধ্যে। যদিও নিজে হাতেই এসব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন কলেজ অধ্যক্ষ দীপক মন্ডল। তার দাবি, ইতিমধ্যে কুমারগঞ্জ ব্লকের প্রত্যেকটি স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষকদের সাথে কথা বলে ছাত্র ছাত্রীদের ভর্তি নিয়ে কিছুটা সুনিশ্চিত হয়েছেন। শুধু তাই নয় এলাকায় এলাকায় মাইকিং করে ছাত্র ছাত্রীদের কলেজ মুখী করবারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তাদের তরফে। চলতি শিক্ষাবর্ষে যা অনেকটাই ফলপ্রসূ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন কলেজ অধ্যক্ষ। যদিও এনিয়ে একরাশ হতাশা প্রকাশ করে কলেজ কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর জোড়ালো হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন জমি দাতারা।
কুমারগঞ্জ কলেজের এক জমিদাতা তথা অস্থায়ী কর্মী মনোজ সরকার বলেন, প্রায় দুবছর ধরে বেতন নেই। সংসার চালাবেন কি করে এই দুশ্চিন্তা এখন সকলের মধ্যে। কিন্তু এনিয়ে তেমন কোন হেলদোল নেই কলেজ কতৃপক্ষের। তাদের স্থায়ীকরণ করানো সহ বেতন চালু করার জন্য অবিলম্বে শিক্ষামন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান তারা।
কুমারগঞ্জ কলেজ অধ্যক্ষ দীপক মন্ডল বলেন, মাত্র তিনমাস হল এই কলেজে এসেছেন তিনি। পর্যাপ্ত ছাত্র ছাত্রী না থাকায় কলেজের নিজস্ব তহবিল একপ্রকার ফাঁকা রয়েছে। আর যে কারণে তাদের বেতন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডির কর্মীরা না আসায় কলেজের সকল কাজ অধ্যাপকদেরই করতে হচ্ছে। তবে ব্লকের সকল ছাত্র ছাত্রীদের কলেজ মুখী করতে এবারে একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তারা।