শোলা শিল্পী দ্বারা তৈরি কদম ফুল
কোচবিহার:- দুর্গাপূজার প্রত্যেকটি বাড়িতে যে জিনিসটি দরকার হয় সেটা হল সোলার তৈরি কদম ফুল । পুজার বাকি মাত্র কয়েকটি দিন । তাই কদম ফুল বানাতে ব্যস্ত সোলা শিল্পীরা । কোচবিহার জেলার, তুফানগঞ্জ দিনহাটার ও মাথাভাঙ্গা ,বিভিন্ন জায়গায় শোলা শিল্পীরা শোলা দিয়ে কদম ফুলের পাশাপাশি বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করেন । তবে বর্তমান প্রজন্ম এই কাজে আর আগ্রহী হচ্ছে না । কারণ শোলার চাহিদা বাড়লেও দাম পাচ্ছে না শোলা শ্লিপিরা। বিশেষ করে এই কদম ফুলের চাহিদা বাড়লেও তারা সঠিক দাম পাচ্ছেন না। অন্যদিকে শোলা তাদের অনেক দামে কিনে নিয়ে আসতে হচ্ছে । কোচবিহার জেলার দিনহাটা এক ব্লকের ভেটাগুড়ি বালাপাড়া এলাকায় বসবাস প্রায় ২০ টি উপর মালাকার পরিবারের । দুর্গাপূজার কদম ফুল বানাতে ব্যস্ত থাকলেও তাদের গলায় শোনা গেল আক্ষেপের এই সুর । এই এলাকায় প্রায় ২০ টি উপর পরিবার রয়েছে । প্রত্যেক ঘরে এখন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে সোলার কদম ফুল বানাতে ব্যস্ত সোলা শিল্পীরা । তবে কদম ফুল ছাড়াও তারা সোনা দিয়ে মুটুক থেকে শুরু করে বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করেন । এই এলাকার কদম ফুলসহ বিভিন্ন জিনিস আসাম বিহারের পাশাপাশি বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে যায়। বর্তমানে শোলা দিয়ে কদম ফুল তৈরি করা শিল্পীদের কিছুটা সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। কারণ কদম ফুলের চাহিদা বাড়লেও । তার কারণ সোলার জায়গায় কিছু শিল্পী থার্মোকল ব্যবহার করে কদম ফুল তৈরি করছে । যা শোলার থেকে অনেক কম দামে বিক্রি করছেন তারা । যার ফলে শোলা শিল্পীদেরও কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে কদম ফুল ।
দিনহাটা এক ব্লকের ভেটাগুড়ি বালাপাড়া শোলা শিল্পী ধীরেন্দ্র মালাকার বলেন, দুর্গাপূজার সময় কদম ফুল বানানোর পাশাপাশি তিনি শোলা দিয়ে তৈরি করেন মটুক সহ সমস্ত জিনিস পত্র । বর্তমান দুর্গাপূজার সময় ১৬ কদম ফুল কাজ করা হচ্ছে । এরপর বিভিন্ন পূজার সময় বিভিন্ন জিনিস তৈরি করেন তারা । তিনি বলেন দুর্গাপূজার সময় কারো সঙ্গে কথা বলার মত সময় থাকে না । বর্তমান তিনি দিন রাত এক করে কদম ফুল তৈরি কাজ করছেন । ধীরেন্দ্রনাথ আরো বলেন, আমরা পূর্বপুরুষ থেকেই খোলার সমস্ত জিনিস বানিয়ে আসছি তবে বর্তমান আমার ছেলে এই কাজে উদযোগী হচ্ছেনা । তাদের কথায় তারা বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজ করলে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা বেতন পাবে । যা এটাতে হচ্ছে না । তাই তারা এই কাজে আর এগিয়ে আসছে না । তবে তিনি বলেন যতদিন পারব এই কাজকে চালিয়ে যাব । তবে বাড়ির বউ এরা এই কাজে আগ্রহী রয়েছেন তারাও এই কাজ করেন ।
বালা পাড়ার আরেক মালাকার পরিবারের সদস্য সঞ্জীব মালাকার বলেন, সোলার দাম অনেক বেড়ে গিয়েছে । একসময় সোলা বিনা পয়সায় পাওয়া যেত । তবে এখন সোলার দাম বেড়েছে । অন্যদিকে বাজারে থার্মোকল চলে এসেছে । যার ফলে শোলার কদম ফুলের চাহিদা বেশি থাকলেও দাম পাচ্ছি না আমরা । সরকার যদি এর উপর নজর দেয় তাহলে আমরা উপকৃত হব । ও আমাদের শিল্প বাঁচবে ।