এক পা বাংলাদেশে, আরেক পা ভারতে! বালুরঘাটের কামারপাড়ায় ধরা পড়ল ‘দু-দেশের নাগরিক’ কালীপদ!
বালুরঘাট, ১ জুন ——একই ব্যক্তি কীভাবে দুই দেশের নাগরিক হতে পারেন? তাও আবার সরকারি পরিচয়পত্র সহ! চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা সামনে এসেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট মহকুমার অমৃতখন্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের কামারপাড়া এলাকায়। যেখানে বাংলাদেশে বসেই এক ব্যক্তি পেয়েছেন ভারতের ভোটার কার্ড, আধার কার্ড! শুধু তাই নয়, একাধিকবার ভোটও দিয়ে গিয়েছেন এই বাংলায়। নাম তাঁর কালীপদ শীল। এই এক নামেই এখন তোলপাড় গোটা দক্ষিণ দিনাজপুর।
বালুরঘাটের অমৃতখন্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের কামারপাড়া এলাকায় তাঁকে বহু বছর ধরেই লোকজন চিনতেন ‘বাংলাদেশি ভিজিটর’ হিসেবে। যে ব্যক্তির নাম কালীপদ শীল। বয়স পেরিয়েছে ষাটের কোঠা। নিজেই স্বীকার করেছেন, তিনি বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার ধামইরহাট থানার মুকুন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। ভোটার তালিকায় তাঁর সিরিয়াল নম্বর ১৩৮, ভোটার আইডি নম্বর ৬৪১০৬৩২৬০২৯১। অথচ ভারতীয় আধার কার্ডেও রয়েছে তাঁর নাম— নম্বর ৯২৭৮৮৫৮৫৬৮৪৫! একইসঙ্গে ভোটার তালিকাতেও যুক্ত তাঁর পরিচয়।
সীমান্ত পেরিয়ে কীভাবে এমন পরিচয়পত্র তৈরি করলেন? উত্তরে কালীপদবাবু বলেন, “বাংলাদেশেই থাকতে থাকতে সব তৈরি করে ফেলি। এখন চার বছর ধরে ভারতে আছি। এর আগেও কয়েকবার ভোট দিয়েছি।”
কালীপদর এই স্বীকারোক্তিতেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে গোটা প্রশাসনিক ব্যবস্থা। সীমান্ত তো পেরোননি—তাহলে কীভাবে বাংলাদেশের এক নাগরিক এই দেশের গুরুত্বপূর্ণ নথি বানিয়ে ফেললেন? প্রশাসনিক স্তরে কোথায় কোথায় ফাঁক রয়েছে? শুধু কালীপদ নয়, এমন আরও কতজন এইভাবে ‘দু-দেশের নাগরিকত্ব’ ভোগ করছেন? উঠছে একের পর এক প্রশ্ন।
বালুরঘাট সদর ডিএসপি বিক্রম প্রসাদ বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে “বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।
ভোট মানে দেশের গণতন্ত্র। সেই ব্যবস্থায় যদি বহিরাগতরা গোপনে ঢুকে ভোট দিয়ে চলে যান—তবে কি সত্যিই নিরাপদ গণতন্ত্র? শুধু পরিচয় নয়, এই ঘটনায় আস্থা তছনছ হয়ে যেতে পারে নির্বাচন ও প্রশাসনের ওপর থেকে।
এই ঘটনা শুধু একটি নাম নয়—কালীপদ এক প্রতীক! যে ফাঁক গলে বহুসংখ্যক ‘অদৃশ্য নাগরিক’ এদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রশাসন কি এবার জেগে উঠবে?
