আদালতের ভেতরেই চার লক্ষ টাকার গরমিল!

0
107

আদালতের ভেতরেই চার লক্ষ টাকার গরমিল! বালুরঘাটে বিলিং অ্যাকাউন্ট্যান্টকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড

বালুরঘাট, ৫ ডিসেম্বর —– বালুরঘাট জেলা আদালতের ভাঁড়ারে লুকিয়ে থাকা এক চাঞ্চল্যকর জালিয়াতির পর্দাফাঁস হল আদালতেই। গ্রাচুইটি ও প্রভিডেন্ট ফান্ড বাবদ তিন কর্মীর মোট চার লক্ষ টাকা সিস্টেমে কারচুপি করে নিজের দখলে নেওয়ার অপরাধে শুক্রবার দৃষ্টান্তমূলক সাজা শুনালেন দক্ষিণ দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (ফার্স্ট কোর্ট) সন্তোষ কুমার পাঠক। অভিযুক্ত আদালত–কর্মী সৌভিক মজুমদারকে দেওয়া হয়েছে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, সঙ্গে চার লক্ষ দশ হাজার টাকা জরিমানা; জরিমানা না দিলে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড।

ঘটনার সূত্রপাত ২০২২ সালের ৩ রা মার্চ। আদালতের চিফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার সুভাষচন্দ্র রায় বালুরঘাট থানায় লিখিত অভিযোগে জানান—তাদেরই অফিসের বিলিং অ্যাকাউন্ট্যান্ট সৌভিক মজুমদার সিস্টেমের গোপন তথ্য বদলে তিন সহকর্মীর গ্রাচুইটি ও জিপিএফের টাকা দু’টি আলাদা অ্যাকাউন্টে সরিয়ে দিয়েছেন। অভিযোগে উঠে আসে আরও বিস্ময়কর তথ্য: ওই অ্যাকাউন্টগুলিতে যোগাযোগ নম্বর হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল সৌভিকের নিজের মোবাইল নম্বরই।

ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৭৭(এ) ধারায় মামলা রুজু করে তদন্তে নামে পুলিশ। বহু নথি খতিয়ে দেখা, ডিজিটাল ট্রান্সফার ট্রেস ও সাক্ষ্যগ্রহণের পর বৃহস্পতিবার আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে। এদিন তার সাজা ঘোষণা করে বিচারক।

সরকারি আইনজীবী ঋতব্রত চক্রবর্তী বলেন, অভিযুক্ত সৌভিক মজুমদার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা আদালতের বিলিং একাউন্টেন্ট ছিলেন। তিনি আদালতের তিন কর্মীর গ্রাচুইটি এবং প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা সিস্টেমে হেরফের করে প্রায় চার লক্ষ টাকার মতো তছরুপ করে নিয়েছিলেন। সেই ঘটনাতে গতকাল অভিযুক্ত কে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন মাননীয় বিচারক সন্তোষ কুমার পাঠক। শুক্রবার আসামিকে সাত সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ড চার লক্ষ দশ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন।

এই সাজা আদালতের অভ্যন্তরীণ স্বচ্ছতা বজায় রাখতে কড়া অবস্থানের প্রতীক—বিশ্বাসের জায়গায় বসে বেআইনি পথ নিলে বিচারব্যবস্থা যে কোনও ছাড় দেবে না, সেই বার্তাই যেন আরও গাঢ় হলো বলেই মনে করছে অনেকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here