আত্রেয়ীর তীরে ‘মিশন রেসকিউ’, বন্যা মোকাবিলায় দক্ষিণ দিনাজপুরে নজিরবিহীন মক ড্রিল এন ডি আর এফের
বালুরঘাট, ৫ ডিসেম্বর —- বর্ষা মানেই আতঙ্ক। আত্রেয়ী ফুললেই শহর-গ্রাম জুড়ে ভাঙন, প্লাবন আর জলবন্দি জীবনের স্মৃতি আজও তাড়া করে দক্ষিণ দিনাজপুরকে। সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতাকে হাতিয়ার করেই এ বছর অনেক আগেই প্রস্তুতির রাশ টানল প্রশাসন। শুক্রবার বালুরঘাটের সদর ঘাটের আত্রেয়ীর তীরে আয়োজন করা হল এক অভূতপূর্ব মক ড্রিল।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের তত্ত্বাবধানে এনডিআরএফের কলকাতা সেকেন্ড ব্যাটেলিয়নের ৩৫ জন সদস্য এদিন মাঠে নামেন প্রকৃত উদ্ধার অভিযানের মতোই। নদীর ধারে অস্থায়ী তাবু খাটিয়ে তৈরি করা হয় বেস অফ অপারেশন, ইনসিডেন্ট কমান্ড পোস্ট, কমিউনিকেশন সেন্টার, মেডিক্যাল এইড পোস্ট—প্রতিটি ইউনিট নিখুঁতভাবে সাজানো। জিপলাইনের মাধ্যমে বিপদগ্রস্তকে সরানো, নৌকা ও ডুবুরিদের তৎপরতা, আহতদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসার ব্যবস্থা—সব মিলিয়ে যেন ভিন্ন অভিজ্ঞতা। সাধারণ মানুষকে সরাসরি মহলায় যুক্ত করা এই ড্রিলকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তোলে।
জেলা শাসক বালা সুব্রামনিয়াম টি-র তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই কর্মসূচিতে এনডিআরএফের ডেপুটি কমান্ড্যান্ট সঞ্জয় কুমার অঞ্জনের ভাষায়, “আত্রেয়ীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় বর্ষাকালে প্লাবন অনিবার্য। প্রস্তুতি না থাকলে বিপর্যয় সামাল দেওয়া অসম্ভব।” সিকিমের সাম্প্রতিক গ্লেসিয়ার লেক আউটবার্স্টের কথাও তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন—এক মুহূর্তে নদীর বুক দিয়ে নেমে আসা জলধারার ভয়াবহতা মনে করিয়ে।
প্রশাসনের দাবি—বন্যা প্রতিরোধে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সমন্বয়ের অভাব। আর তাই এই মহড়া বাস্তব বিপদের আগে প্রস্তুতির শক্ত ভিত গড়ে দিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য—“এমন মহড়া আগেও দেখেছি, কিন্তু এবারের মতো নিখুঁত ও বাস্তবসম্মত কখনও নয়।

















