বালুরঘাট, ১৪ সেপ্টেম্বর —– অভিষেকের নির্দেশ অমান্য করে পদ হারানো যুব নেতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বিতর্কে জড়ালেন সদ্য দায়ীত্বপ্রাপ্ত শহর তৃণমূল সভাপতি। দণ্ডি-কাণ্ডে পদচ্যুত প্রদীপ্তা চক্রবর্তীকে ঘিরে নতুন করে অস্বস্তিতে তৃণমূল। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সব পদ হারালেও শনিবার শহর তৃণমূল সভাপতি সুভাষ চাকির সভায় তাঁর উপস্থিতি কার্যত শোরগোল ফেলে দিয়েছে জেলায়। প্রশ্ন উঠছে— কে বা কারা ফের মঞ্চে তুলে আনলেন তাঁকে? শহর সভাপতি নিজেই কি তবে অভিষেকের বার্তা অমান্য করলেন?
শনিবার সন্ধ্যায় বালুরঘাট পুরসভার সুবর্নতটে দলের নব্যনিযুক্ত নেতৃত্বদের পরিচিতি সভার আয়োজন করেছিলেন সুভাষ চাকি। উপস্থিত ছিলেন একাধিক কাউন্সিলর ও কর্মী। আর সেই সভার মাঝেই দেখা গেল প্রদীপ্তাকে। মুহূর্তে সরগরম হয় তৃণমূল মহল। সুভাষবাবুর দাবি, “সভায় সব কাউন্সিলরদের ডাকা হয়েছিল। প্রদীপ্তা একজন নির্বাচিত কাউন্সিলর। তাই তাঁর আসা স্বাভাবিক।” তবে জেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল সাফ জানিয়েছেন, “রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে প্রদীপ্তাকে ডাকার প্রশ্নই ওঠে না। কে তাঁকে ডেকেছিল, তদন্ত হবে।”
প্রসঙ্গত, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার অপরাধে চার আদিবাসী মহিলাকে দিয়ে প্রকাশ্যে দণ্ডি কাটানোর ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই প্রদীপ্তার বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়ে রাজ্য নেতৃত্ব। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে জেলায় নেমে এসে মহিলাদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, দোষী যত বড় নেতাই হোন না কেন, কড়া শাস্তি হবেই। তার পরেই প্রদীপ্তাকে সরিয়ে দেওয়া হয় দলের সব পদ থেকে। কিন্তু তাতেও তাঁকে ঘিরে বিতর্ক থামেনি। সভা, মিছিল— প্রায় সব জায়গাতেই তাঁর উপস্থিতি ধরা পড়ছে বারবার। বিশেষ করে বালুরঘাট শহর যুব তৃণমূল কংগ্রেসের আয়োজিত দলীয় প্রায় সমস্ত অনুষ্ঠানেই হাজির থেকেছেন তিনি।শহর যুব তৃণমূল সভাপতির পদ থেকে প্রদীপ্তা ঘনিষ্ঠ সেই মহেশকে সরিয়ে নতুন নেতৃত্ব বসানোর ঘটনাও তারই প্রমাণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
দক্ষিণ দিনাজপুরে প্রায় ১৮ শতাংশ আদিবাসী ভোট ব্যাঙ্কে প্রদীপ্তা-ইস্যুর সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে। তাই রাজ্য নেতৃত্ব বারবার কড়া বার্তা দিলেও, বাস্তবে যেন সেই নির্দেশ কোন কার্যকর হচ্ছে না বলেই অভিযোগ। শনিবারের ঘটনা আরও একবার প্রমাণ করল— প্রদীপ্তা এখনও শহর তৃণমূলের অন্দরকলহের অঘোষিত ‘কেন্দ্রবিন্দু’