শীতল চক্রবর্তী ,গঙ্গারামপুর, 20 সেপ্টেম্বর, দক্ষিণ দিনাজপুর :- অতিরিক্ত পণ্যের দাবিতে বিয়ের তিন বছরের মাথায় গৃহবধূকে শশুর বাড়ির স্বামী শ্বশুর-শাশুড়ি দেওর ও তার স্ত্রী ৫ জন মিলে খুন করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন মৃত গৃহবধূর আত্মীয়-স্বজনরা। শনিবার রাতে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর থানার অশোক গ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের জর্জরাইল এলাকায়। এ বিষয়ে পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃত গৃহবধূর বাবা গঙ্গারামপুর থানায় দেবীপুরের বাসিন্দা মুসলিম মিয়া। এমন ঘটনায় মৃত আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবি তুলেছেন। পুলিশ রবিবার সকালে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে সূরাতহাল করে দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে। এমন ঘটনায় ব্যাপক শোরগোল পড়েছে গঙ্গারামপুর জুড়ে।

পুলিশ জানায় মৃত গৃহবধূর নাম এসমারা খাতুন (২১)বছর। তার বাবার বাড়ি গঙ্গারামপুর থানার সুকদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দেবীপুর এলাকায়। রবীন্দ্রনাথ সকালে তার একটি দু'বছরের পুত্রসন্তান রাফসান মিয়া রয়েছে বলে পরিবার সূত্রে খবর।

মৃত গৃহবধূর পরিবার সূত্রে খবর, তিন বছর আগে অশোক গ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের জর্জরাইল এলাকার বাসিন্দা মোসলেম মিয়ার বড় ছেলে টোটো চালক গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে অনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে হয় গঙ্গারামপুর থানার দেবীপুরের বাসিন্দা ইসমাইল মিঞার মেয়ে এসনারা র সঙ্গে। পরিবারের লোকজনদের দাবি, সেই সময় তাদের চাহিদামত নগর 4 লক্ষ টাকা হাতে,কানে ,গায়ে, সহ একাধিক জিনিস দিয়ে তার সঙ্গে বিয়ে হয়। অভিযোগ এরপরে শ্বশুরবাড়ির লোকজন গোলাম রাব্বানীর শশুর মুসলিম মিয়া শাশুড়ি রুবিনা বিবি দেওর মোশারফ মিয়া ও তার স্ত্রী সহ পাঁচজন মিলে আরও অতিরিক্ত পনের দাবিতে দিনের-পর-দিন এসমারা খাতুনের উপরে বাবুর অত্যাচারের মাত্রা বাড়াতে থাকে বলে অভিযোগ গৃহবধূর বাপের বাড়ির লোকজনদের । বেশ কয়েকবার সেই টাকা বাপের বাড়ী থেকে দিয়ে দিলেই করোনা আতঙ্কের মধ্যে আরও অতিরিক্ত 30 হাজার টাকা দাবি ছিল তাদের। সেই টাকা না পেয়ে গৃহবধূকে খুন করার পরিকল্পনা করে তারা বলে অভিযোগ।তারাই গৃহবধূকে খুন করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া নাটক করে বাড়ি থেকে সকলেই পালিয়ে যায়।
গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ ঘটনার খবর পেতেই গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ি অশোক গ্রামের জর্জরাইল এলাকায় গিয়ে বারান্দায় মধ্যে পড়ে থাকা অবস্থায় ওই গৃহবধূর মৃতদেহ শনিবার রাতেই উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
মৃত গৃহবধূর দিদি সুরেনা বিবি মা জরিনা বিবি ও ভাই মোখলেস মিয়ারা শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, অতিরিক্ত পণের দাবিতে আমাদের বাড়ির মেয়েকে শ্বশুরবাড়ির স্বামীসহ পাঁচজন মিলে প্রথমে গলাটিপে খুন করার করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেব আর নাটক করেছে। থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে, ওদের ফাঁসি হোক সেই দাবি জানাই।
মৃত গৃহবধূর প্রতিবেশী গঙ্গারামপুর থানার ডিবি পুরের বাসিন্দা রুবিনা খাতুন ও আব্বাস আলী রা অভিযোগ করে বলেন আমাদের এলাকায় মেয়ের সঙ্গে যারা এমন ভাবে তাকে মেরে ফেলল তাদের কেউ যেন বিচারে একই রকম সাজা হয় সেই দাবী জানাই।
গঙ্গারামপুর থানার আইসি পূর্ণেন্দু কুমার কুন্ডু জানিয়েছেন, মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে।মৃতের কারণ জানতে যেতেই বিয়ের তিন বছরের মধ্যে এমন ঘটনা তাই ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে সুরতহাল করে দেহ ময়নাতদন্ত পাঠিয়ে ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে।
এমন ঘটনায় গঙ্গারামপুর শহর জুড়ে ব্যাপক শোরগোল পড়েছে। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে সকলেই সরব হয়েছেন।