হুইলচেয়ার নিলেই জমা রাখতে হবে অ্যান্ড্রয়েড ফোন

0
220

গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতালের ঠিকাদারদের মাধ্যমে নিয়োগ করা অস্থায়ী চতুর্থ শ্রেণী কর্মীদের ফতেয়া, “হুইলচেয়ার “নিলেই জমা রাখতে হবে অ্যান্ড্রয়েড ফোন, অভিযোগ দায়ের বিভিন্ন জায়গায়,ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস মুখ্যস্বাস্থ্য অধিকারিকের শীতল চক্রবর্তী বালুরঘাট ১৯, এই মে।আপনি কি প্রয়োজনে আপনার রোগীকে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেছেন, তাহলে পকেটে আধার বা ভোটার কার্ড না না নিয়ে এসে থাকলে দামি এন্ড্রয়েড ফোন অবশ্যই কাছে রাখবেন।হাসপাতালে যদি আপনার রোগীর হুইলচেয়ারের প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই আপনাকে হাসপাতালের অস্থায়ী চতুর্থ শ্রেণী কর্মীদের কাছে জমা রাখতে হবে আপনার দামি অ্যান্ড্রয়েড ফোন জমা।দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর মহকুমার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ঠিকাদারদের মাধ্যমে নিয়োগ করা অস্থায়ী চতুর্থ শ্রেণী কর্মীদের ফতেয়ায় রীতিমতো শোরগোল পড়েছে জেলাজুড়ে।বিপদ বুঝে রোগীর আত্মীয় দামি এন্ড্রয়েড ফোন জমা দিলেন তাদের হাতে।বিষয়টি রোগীর আত্মীয় -স্বজনদের পরিবারের তরফে জানানো হলো মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে উপস্বাস্থ্যমন্ত্রী, মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক, হাসপাতালে সুপারকে।তিনি অবশ্য জানালেন,অস্থায়ী কর্মীরা তার কথা শুনেন না,তবে তিনি সোমবার খোঁজ নিয়ে দেখবেন বিষয়টি কি হয়েছে। ঠিকাদারদের মাধ্যমে কাজ করা অস্থায়ী কর্মীদের নেতা অবশ্য জানান, এমনটা হবার কথা নয়,তিনি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন। জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক অবশ্য এমন ঘটনা শোনার পরেই তিনি জানানখোঁজ নিয়ে দেখে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।কি হচ্ছে সরকারি হাসপাতালে কার নির্দেশ মতো ওই সমস্ত অস্থায়ী কর্মীরা এত বড় অন্যায় করার পরেও ছাড় পায় তা নিয়েই সরগরম হয়েছে জেলা। জানা গেছে রবিবার রাতে গঙ্গারামপুর পৌরসভার ৪নম্বর ওয়ার্ডের নারায়ণপুর এলাকার বাসিন্দা পেশায় কাঠের ব্যবসায়ী সুব্রত সূত্রধর তার স্ত্রী শিপ্রা সূত্রধর শারীরিকভাবে অসুস্থ হন ।গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পুরনো বিল্ডিং এ মহিলা বিভাগে সুব্রতবাবু তার স্ত্রীকে ভর্তি করান।সুব্রত বাবুর কথায়, হাসপাতালে চিকিৎসক তাকে জানান,তার স্ত্রীর ইকো কার্ডিওগ্রাফি করাতে হবে। চিকিৎসকের কথামতো সুব্রত বাবু তার অসুস্থ স্ত্রীকে হাসপাতালের বেড থেকে নিয়ে যাবার জন্য হাসপাতাল থাকা হুইলচেয়ার আনতে যান। অভিযোগ,তখন ঠিকাদারদের মাধ্যমে কাজ করা একজন অস্থায়ী চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী সুব্রত বাবুকে জানান ,আপনার আঁধার বা ভোটার কার্ড জমা দিন। হুইলচেয়ার নিলে আধার বা ভোটার জমা করতেই হবে।সুব্রত বাবু জানান,তার কাছে কিছুই নেই।অভিযোগ,হাসপাতালে হুইলচেয়ার নিতে গেলে তাকে দুটি আসল পরিচয় পরিচয় পত্রের মধ্যে একটি দিতেই হবে। না হলে দামি পকেটে থাকা মোবাইলের এন্ড্রয়েড ফোনটি তিনি চান। সুব্রত সূত্রধর ওই অস্থায়ী কর্মীর কথা শুনেই হতবাক হয়ে যান।কোন উপায় না দেখে তিনি তার দাবি ফোনটি জমা রেখে হুইলচেয়ারে করে নিজেই তার স্ত্রীকে ইকো কার্ডিওলজি রিপোর্ট করাতে হাসপাতালে বাইরে নিয়ে যান। ঘুরে এসে সুব্রত বাবু ওই অস্থায়ী কর্মীকে জিজ্ঞেস করেন, সরকারি এমন কোন নিয়ম রয়েছে কি? উত্তরে ওই অস্থায়ী কর্মী সুব্রত বাবুকে জানান, হুইলচেয়ার চুরি হচ্ছে তাই নিজেরাই তারা এমন নিয়ম চালু করেছেন।ইচ্ছা হলে নিন না হলে ছেড়ে দিন। সুব্রত সূত্রধর কোন উপায় না দেখে বিষয়টি জানতে হাসপাতালে সুপারের কাছে ছুটে যেতেই তিনি দেখেন অফিসে তার দেখা নেই।পরে তিনি সংবাদমাধ্যমের দ্বারস্থ হলে হাসপাতালে সুপার বাবুসোনা শাহ জানান,”হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মীরা তার কথা শুনেন না। রবিবার ছুটি আছে সোমবার বিষয়টি নিয়ে তাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করবেন বলে তার দায় সারেন।” সুব্রত সূত্রধরের অভিযোগ,”এমন নিয়ম বাপের জন্মেও শুনিনি। মুখ্যমন্ত্রী যখন চাইছে রোগীদেরকে ভালো পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য তখন এই সমস্ত অস্থায়ী কর্মীদের জন্যই মুখ্যমন্ত্রীর ভাবমূর্তি খারাপ হচ্ছে। সরকারি জিনিস চাইতে গিয়েও এ ঘর ওঘর ঘোরানো হচ্ছে বিভিন্ন সময় ধরে।ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বিভিন্ন জায়গায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।” ঠিকাদারদের মাধ্যমে নিয়োগ করা হাসপাতালে অস্থায়ী চতুর্থ শ্রেনী কর্মীদের নেতা আশীষ শর্মা জানিয়েছেন,”বিষয়টি আপনার কাছ থেকে শুনতে পেলাম।এমনটা হবার কথা নয় খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।” এবিষয়ে জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য অধিকারিক ডক্টর সুদীপ্ত দাস জানিয়েছেন,”এমন নিয়ম কোথায় নেই,কে কেন এমনটা করল সে বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখে দোষী প্রমাণিত হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” প্রশ্ন উঠেছে এই সমস্ত ঠিকাদারদের মাধ্যমে নিয়োগ করা অস্থায়ী কর্মীদের মাথায় কাদের হাত রয়েছে,এত বড় অন্যায় করার পরেও কেন তারা ছাড় পাচ্ছে সে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন গঙ্গারামপুর সহ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাবাসী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here