স্বামী পরিত্যক্তা আদিবাসী যুবতীর শরীরে ভুল গ্রুপের রক্ত দেওয়ার অভিযোগ

0
94

স্বামী পরিত্যক্তা আদিবাসী যুবতীর শরীরে ভুল গ্রুপের রক্ত দেওয়ার অভিযোগ,অসুস্থ রোগী, আদিবাসীদের বিক্ষোভ মহকুমা হাসপাতালে,রোগীকে পাঠানো হলো মালদায় শীতল চক্রবর্তী বালুরঘাট ৩ নভেম্বর দক্ষিণ দিনাজপুর। হাসপাতালে ভর্তি থাকা আদিবাসী এক স্বামী পরিত্যাক্তা যুবতীর শরীরে ভুল গ্রুপের রক্ত দেওয়ার অভিযোগ তুলে রোগীর আত্মীয় ও পরিজনেরা বিক্ষোভ দেখালো হাসপাতাল চত্বরে।ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতালে কালদিঘিতে। রোগীর আত্মীয় পরিজনদের অভিযোগ,রক্তের নমুনা দেওয়া সত্বেও ব্লাড ব্যাংক থেকে ভুল গ্রুপের রক্ত দেওয়া হলেও চিকিৎসক ও নাসেরা তা না দেখেই আমাদের রোগীর শরীরে দেওয়ার ফলেই সে শারীরিকভাবে আর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে।আমরা চাই রোগীকে এখানে রেখেই তাকে সুস্থ করার।রবিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতালের কালদিঘিতে আদিবাসীদের বিক্ষোভে হাসপাতাল চত্বরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।ঘটনার খবর পেতেই সেখানে ছুটি আসেন গঙ্গারামপুরের মহকুমা শাসক অভিষেক শুক্লা,গঙ্গারামপুর থানার আইসি সহ বিরাট পুলিশ বাহিনী।খোদ সরকারি হাসপাতালে এমন অভিযোগ ওঠার ঘটনায় রীতিমত শোরগোল পড়েছে জেলাজুড়ে।জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক অবশ্য বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কুশমন্ডি ব্লকের আকচা গ্রাম পঞ্চায়েতের গোয়ালগ্রাম এলাকার স্বামী পরিতক্তা আদিবাসী যুবতী মৌসুমী মাড্ডি বয়স (২১) রক্তস্বল্পতায় ভুগে কুশমন্ডি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হন।তার বাবা সাগর মাটি ও তার বোন জয়ন্তি মাড্ডিকে কুশমন্ডি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান,তাকে উন্নততর চিকিৎসার জন্য গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতালে কালদিঘিতে নিয়ে যেতে হবে।সেদিন রাতেই তাকে পরিবারের লোকজনেরা গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতালে কালদিঘিতে ভর্তি করে। শুক্রবার রাতে সাধারণ বেডে ভর্তি থাকাকালীন হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা অসুস্থ আদিবাসী মৌসুমীর শরীরে রক্ত দিতে হবে বলে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের হাতে রক্তের নমুনা তুলে দেন দেন।মৌসুমীর পরিবারের লোকজনদের দাবি ,”চিকিৎসকের বলার পরেই গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতালে ব্লাড ব্যাংক থেকেই রক্তের সেই নমুনা দিয়েই তা সেখান থেকে রক্ত নিয়ে আসা হয়। মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি থাকা আদিবাসী যুবতীর পরিবারের লোকজনদের অভিযোগ, এ প্লাস রক্ত তাদের রোগীকে দেবার কথা থাকলেও ব্লাড ব্যাংক থেকে এবি প্লাস রক্ত তাকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ তাদের। হাসপাতালে চিকিৎসক ও নাসেরা তা পর্যবেক্ষণ না করেই মৌসুমী শরীরের সেই গ্রুপের রক্ত দিয়ে দেন। অভিযোগ,”এরপরেই ধীরে ধীরে অসুস্থ হতে থাকে মৌসুমী।শনিবারে তার অবস্থা আরো খারাপ হলে সকালে তাকে মহকুমা হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগে ভর্তি করা হয়।মৌসুমী পরিবার সূত্রে জানা গেছে বিয়ের কিছু দিনের মধ্যেই স্বামীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়। মৌসুমীর আত্মীয় অভিযোগ করে বলেন,”ভুল রক্ত দেওয়ার ফলেই রোগীর আত্মীয়ের এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে।আমরা চাই রোগী সুস্থ হোক সেই সঙ্গে প্রশাসন প্রশাসন তদন্ত করে দেখে ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেক।” রোগীর আত্মীয় বোন সবিতা হেমরম অভিযোগ করে বলেন,”যারা দিদির সঙ্গে এমন ঘটনা করলো তাদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাই।আমরা চাই দিদিকে এখানেই সুস্থ করুক চিকিৎসকেরা।” মৌসুমী মাড্ডির এক প্রতিবেশী রাজীব সরেন অভিযোগ করে বলেন,”চিকিৎসক ও নাসদের ভুলেই প্রতিবেশীর জীবন চলে যেতে বসেছে।আমরা চাই যারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের কঠোর শাস্তি।” নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক হাসপাতালে চিকিৎসকেরা দাবি করেন,ওই রোগী রক্তস্বল্পতায় ভুগছিল,শরীরের আরও রক্ত দেবার জন্যই আমরা ব্যবস্থা করেছিলাম। শরীর দুর্বল থাকার কারণে তিনি শরীরের রক্ত নিতে পারছিলেন না বলেই রোগী আরো অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।সেই কারনে তাকে আইসিইউ-তে ভর্তি শনিবার ভর্তি করা হয়েছিল।পরে তাকে মালদাতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।” ঘটনার খবর পেতেই গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতালে ছুটে আসেন গঙ্গারামপুরের মহকুমা শাসক অভিষেক শুক্লা,গঙ্গারামপুর থানার আইসি,শান্তনু মিত্র সহ বিরাট পুলিশ বাহিনী। গঙ্গারামপুরের মহকুমা শাসক অভিষেক শুক্লা বলেন,”ওই রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মালদাতে পাঠানো হয়েছে।বিষয়টি তদন্ত করে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক ডক্টর সুদীপ দাস জানান,”বিষয়টি কি হয়েছে তদন্ত করে দেখেই ব্যবস্থা না হবে।” প্রশ্ন উঠেছে,যদি সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিতে এসে কোন আদিবাসী সমাজের যুবতীকে সুস্থ হবার পরিবর্তে মৃত্যুর মুখে পড়তে হয় তাহলে মানুষজন যাবে কোথায়?সেই প্রশ্নই উঁকি মারছে সর্বত্রই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here