ফলক থাকলেও উধাও ড্রাগন গাছ, কোটি টাকার দুর্নীতির গন্ধ পাচ্ছেন বাসিন্দারা

0
402
ফলক থাকলেও উধাও ড্রাগন গাছ, কোটি টাকার দুর্নীতির গন্ধ পাচ্ছেন বাসিন্দারা। ধোঁয়াশায় চিঙ্গিশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের স্বনির্ভর দলের মহিলারা




পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট,  ২৩ জুন ———-– পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে বেছে নেওয়া ড্রাগন ফলের চাষ আজ যেন অনেকটা কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর লেখা” উলঙ্গ রাজা” কবিতা কে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে গোটা চিঙ্গিশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে। প্রায় ৪০ টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দেওয়া পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় ফলক চোখে পড়লেও দেখা মেলে নি কোন ড্রাগন ফল বা তার গাছের। ঘটনা নিয়ে অবশ্য বড়সড় দুর্নীতির গন্ধ পাচ্ছেন বাসিন্দারা। অন্যদিকে ড্রাগন ফল চাষ টা কি?  বা প্রকল্পের লক্ষ্যই কি রয়েছে, সে সম্পর্কে পুরো ধোয়াশায় রয়েছে স্বনির্ভর দলের মহিলারা। যদিও চিঙ্গিশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের দাবি, প্রকল্প চালু রয়েছে। কিছু টাকা উপভোক্তাদের একাউন্টে দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের কাজ শুরু হবে কিছুদিনের মধ্যেই।
সরকারি নথি অনুযায়ী বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া বালুরঘাট ব্লকের চিঙ্গশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৬ টি সংসদে ড্রাগন ফল চাষ করার জন্য ৪০ টি মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী  কে চিহ্নিত করা হয়েছে। যা দাবি করেছেন খোদ পঞ্চায়েত প্রধান। যার জন্য ২০২১-২২ অর্থ বর্ষে ওই সমস্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ড্রাগন ফল চাষ প্রকল্প কে বাস্তবায়ন করতে প্রায় তিনলক্ষ টাকা ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। যে প্রকল্পের কাজ চালু রয়েছে বলেও দেখানো হচ্ছে সরকারি ওয়েবসাইটে। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা ঠিক যেন কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর লেখা উলঙ্গ রাজা কবিতার মতো। গোটা গ্রাম পঞ্চায়েতের সমস্ত সংসদের কোথাও ড্রাগন ফলের গাছের দেখা মেলেনি। অথচ প্রায় প্রতিটি উপভোক্তার জমিতেই লাগানো রয়েছে একটি করে ফলক।যেখানে লেখা রয়েছে প্রকল্পের ব্যয় কত, কিন্তু কবে থেকে প্রকল্প শুরু হবে বা শেষ হবে তার কোন উল্লেখ নেই। স্বনির্ভর দলের মহিলাদের দাবি, পঞ্চায়েতের তরফ থেকে  তাদের এ বিষয়ে কোন প্রশিক্ষণই দেওয়া হয়নি। ড্রাগন ফল চাষ কি?  তা তারা জানেন না। এই প্রকল্পের লক্ষ্যটাই বা কি? যার কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই। তবে সরকারি প্রকল্প যে হবে এটা তারা শুনেছেন। এখানেই শেষ নয়, ওই প্রকল্পের যারা আওতাভুক্ত হয়েছেন তাদের কারো কারো একাউন্টে ২১৩ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ড্রাগন চাষ প্রকল্প সমন্ধে কোন তথ্য নেই স্বনির্ভর দলের মহিলাদের কাছে। যদিও এই ঘটনা নিয়ে সরাসরি দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। তাদের দাবি, গোটা পঞ্চায়েতের কোথাও ড্রাগন ফলের চাষ দেখতে পাননি তারা। এইভাবেই সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের বোর্ড লাগিয়ে দিয়ে টাকা তুলে নিচ্ছে পঞ্চায়েতের কর্মীরা। এই প্রকল্পের ক্ষেত্রেও একই হবে বলে তাদের অনুমান।
স্থানীয় বাসিন্দা বিকাশ সিং বলেন, ড্রাগন ফলের চাষ তাদের পঞ্চায়েতে কোথাও দেখতে পাননি। ফাকা জমিতে শুধু বোর্ড লাগানো দেখেছেন। দুর্নীতি করে টাকা তুলে খেয়ে নিয়েছেন কেউ বা কাহারা।
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য নির্মলা মাহাতো, শেফালী পাল ও শিখা বর্মনরা বলেন, ডাগন চাষ সম্পর্কে তারা কিছুই জানেন না। টাকা কেউই পাননি। পাট চাষের সময় এই চাষ হবার কথা থাকলেও আজো কিছুই পাননি। অথচ তাদের জমিতে বোর্ড লাগিয়ে দিয়ে গেছে পঞ্চায়েত।
চিঙ্গিশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান  মধুপা পাহান সিংহ বলেন, অন্য পঞ্চায়েতের কথা বলতে পারবেন না সেখানে কি হয়। একমাত্র তার পঞ্চায়েতেই যেখানে যা পোস্টার লাগানো হয় সেই অনুযায়ী কাজ হয়। প্রজেক্ট চালু রয়েছে, এক মেন্ডেজ করে টাকাও দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here