বদলের হাওয়ায় বুনিয়াদপুর — পুর প্রশাসনের হাল তরুণ তৃণমূল নেতা সমীর সরকারের হাতে, ভোটের আগে নতুন বার্তা দলের
বালুরঘাট, ১ নভেম্বর —– ২০২৬ বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে বুনিয়াদপুর পুরসভায় বড়সড় পালাবদল। প্রশাসনিক পদে রদবদলে জোর সাড়া জেলাজুড়ে। পুরপ্রশাসক কমল সরকারকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে পদ থেকে, তাঁর জায়গায় চেয়ারম্যান হচ্ছেন বুনিয়াদপুর টাউন যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সমীর সরকার। সহকারী পুরপ্রশাসক পদে এসেছে আরেক তরুণ মুখ—টিংকু পাল। ফলে ভোটের মুখে ‘তরুণ ব্রিগেড’-এর হাতে পুর প্রশাসনের দায়িত্ব তুলে দিয়ে বার্তা স্পষ্ট—দল এখন চাইছে নতুন গতি, নতুন মুখ, নতুন উদ্যম।
রাজনৈতিক মহলের মতে, গত লোকসভা নির্বাচনে বুনিয়াদপুর পুরসভা এলাকায় তৃণমূলের ভোট হারই এই রদবদলের নেপথ্যে। তবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ যে, যাঁদের পদে পরিবর্তন ঘটল এবং যাঁরা নতুন দায়িত্ব পেলেন—দু’পক্ষই রাজ্যের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। তাই বদলের মধ্যেও দলের অভ্যন্তরে উঠছে নানা প্রশ্ন—এ কি সংগঠনের নবজাগরণের ইঙ্গিত, না কি কর্মক্ষমতার ভিত্তিতে ‘রিজার্ভ বেঞ্চ’-এর টানাপোড়েন?
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের মার্চ মাসে রাজ্য সরকার কমল সরকারকে পুরপ্রশাসক ও জয়ন্ত কুন্ডুকে সহকারী পুরপ্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছিল। প্রায় দেড় বছর পর তাঁদের সরিয়ে তরুণ নেতৃত্বকে আনায় রাজনৈতিক মহলে স্পষ্ট বার্তা—“যেখানে উন্নয়নের গতি মন্থর, সেখানে পরিবর্তন অবধারিত।”
দায়িত্ব হাতে পেয়েই সমীর সরকারের গলায় শোনা গেল আত্মবিশ্বাসের সুর—“দল আমার উপর আস্থা রেখেছে, মানুষের জন্য নিরলসভাবে কাজ করব।” শহরের রাস্তায় তাঁর সমর্থনে দেখা গেল উচ্ছ্বাসের ঢেউ। কর্মী-সমর্থকদের মিছিলে ঢাকঢোলের তালে মুখরিত বুনিয়াদপুর পুরসভা চত্বর।
অন্যদিকে, প্রাক্তন প্রশাসক কমল সরকার জানিয়েছেন, “দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। দলের নির্দেশ মেনে আগামীতেও মানুষের পাশে থাকব।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ভাষায়, এই রদবদল কেবল পদ পরিবর্তন নয়, বরং ভোটের আগে এক রাজনৈতিক বার্তা—‘তৃণমূল এখন তরুণদের কাঁধে ভরসা রাখছে।’ বুনিয়াদপুরের সাধারণ মানুষের আশা, নতুন এই প্রশাসক জুটি উন্নয়নের গতিতে শহরকে ফের প্রাণবন্ত করে তুলবে।
শহরের আড্ডা, চায়ের দোকান থেকে প্রশাসনিক মহল—সবখানেই এখন একটাই প্রশ্ন,“তরুণ পুর প্রশাসক সমীর সরকারের হাতে বদলে যাবে কি বুনিয়াদপুরের ভবিষ্যৎ?”

















