তপনে সাদ্দাম খুনে তথ্য লোপাটের ছক! বালুরঘাটে অভিযুক্তর ঘনিষ্ঠ আইনজীবির কাছ থেকে উদ্ধার মৃতর গায়েব হওয়া স্কুটি
বালুরঘাট, ৬ জুন —— তপনের শিহুরে চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনায় নতুন মোড়। নৃশংসভাবে খুন হওয়া ভাইপো সাদ্দাম নাদাপের স্কুটি অবশেষে উদ্ধার হল বালুরঘাট শহর থেকে। শুক্রবার দুপুরে হাইস্কুল মাঠ এলাকা থেকে স্কুটিটি উদ্ধার করে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। সূত্রের খবর, খুনের পরদিনই অভিযুক্ত কাকিমা মৌমিতা হাসান ওরফে রানী নিজেই স্কুটি চালিয়ে বালুরঘাটে এসে এক আত্মীয়—পেশায় আইনজীবীর হাতে স্কুটির চাবি তুলে দেন। তবে আইনজীবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
ঘটনার তদন্তে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে পুলিশের হাতে। পুলিশের ধারণা, ভাইপোকে খুন করে প্রমাণ লোপাট করতেই এই ‘স্কুটি মিশনে’ বালুরঘাটে এসেছিলেন মৌমিতা। তবে শুধু কি স্কুটি গায়েব করাই উদ্দেশ্য ছিল? নাকি এর আড়ালে লুকিয়ে আছে আরও বড় কোনও রহস্য? সেই প্রশ্নের জবাব খুঁজছে ইংরেজবাজার থানার তদন্তকারীরা। প্রাথমিকভাবে তদন্তকারী অফিসাররা মনে করছে ভাইপো সাদ্দামকে নৃশংসভাবে খুন করবার পর তার প্রমান লোপাট করতেই স্কুটি নিয়ে বালুরঘাটে ছুটে এসেছিল অভিযুক্ত মৌমিতা।যদিও অভিযুক্ত মৌমিতা পুলিশি জেরায় কার্যত নিশ্চুপ।
ঘটনার সূত্রপাত গত ১৮ মে। দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন থানার সিহুর বালকাহারা গ্রামে নিজের বাপের বাড়িতে ভাইপো সাদ্দাম নাদাপকে ডেকে এনে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করেন মৌমিতা—এমনই অভিযোগ। পরে মৃতদেহ বস্তাবন্দি করে একটি ইটের বাঙ্কারে ঢুকিয়ে ধানের বস্তা দিয়ে ভরে তার দরজা ইটের দেয়াল তুলে প্লাস্টার করে দেন অভিযুক্ত। ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন সাদ্দাম। অবশেষে, পুলিশি তল্লাশিতে ওই বাঙ্কার থেকেই পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়।
এই ঘটনায় মৃতের কাকা রহমান নাদাপ এবং কাকিমা মৌমিতাকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। দু’জনকেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তাদের জেরাতেই সামনে এসেছে বালুরঘাটে লুকোনো স্কুটির তথ্য।
বালুরঘাট থানার আইসি সুমন্ত বিশ্বাস জানিয়েছেন, “তপনের খুনের তদন্তের প্রয়োজনে বালুরঘাটে এসেছিলেন ইংরেজবাজার থানার তদন্তকারীরা। তদন্তের স্বার্থে এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।”
খুন, গোপন প্রেম, ও প্রমাণ লোপাট—সব মিলিয়ে এই কাণ্ড যেন থ্রিলারে ভরা এক বাস্তব চিত্রনাট্য। এখন দেখার, এই ‘স্কুটি রহস্য’-এর শেষ গন্তব্য কোথায় পৌঁছায়!