ভিন্ন সরস্বতী পুজো হিলি সীমান্তে!
দুস্থ শিশুদের হাতে বই-খাতা-কলম তুলে দিয়ে মুখে হাসি ফোটালেন চিকিৎসক দম্পতি
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ২ ফেব্রুয়ারী ——- উৎসব শুধু আনন্দের নয়, দায়িত্ববোধেরও। সেই দায়িত্ববোধের নিদর্শন রাখলেন বালুরঘাটের বিশিষ্ট চিকিৎসক ড. পয়োধি ধর ও তাঁর স্ত্রী সঞ্চারি সিনহা। সরস্বতী পুজোর পবিত্র দিনে সীমান্তের আদিবাসী শিশুদের মুখে হাসি ফোলেন তারা, শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিলেন খাতা, বই, কলমের উপহার দিয়ে।
রবিবার হিলির ত্রিমোহিনী এলাকায় আদিবাসী যুব সংঘ ও কলকাতা নারচার ফাউন্ডেশন-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রায় ৬০ জন দুস্থ শিশু এই উপহার পায়। কিন্তু এ শুধু সামান্য কিছু বই-খাতা বিলির অনুষ্ঠান ছিল না, ছিল শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার এক অনন্য প্রয়াস।
অনুষ্ঠানের সূচনা হয় মনোমুগ্ধকর আদিবাসী নৃত্যের মাধ্যমে। এরপর উপস্থিত বিশিষ্টজনেরা সরস্বতী পুজোর তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন। ড. পয়োধি ধর বলেন,
“শিক্ষা মানেই ভবিষ্যতের আলো। সরস্বতী পুজো বিদ্যার আরাধনার দিন, আর এই দিনে যদি আমরা শিশুদের পড়াশোনার সামগ্রী দিয়ে তাদের উৎসাহিত করতে পারি, তবে সেটাই প্রকৃত পূজা।”
সমাজসেবী সুরজ দাস বলেন, “উৎসবের দিন শুধু নিজের জন্য নয়, অন্যের মুখেও হাসি ফোটানোর দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে। এমন উদ্যোগ ছোটদের মনে শিক্ষার প্রতি ভালোবাসা গড়ে তুলবে।”
এদিনের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবী আলেকজান্ডার মার্ডি, রবীন মুর্মু-সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। তাঁরা সকলেই প্রশংসা করেন চিকিৎসক দম্পতির এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের। সীমান্ত এলাকার শিশুরা অনেকসময় শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়, আর তাই তাদের পাশে দাঁড়ানোর প্রয়োজনীয়তা আরও বেশি।
চিকিৎসা জগতের গণ্ডি পেরিয়ে সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার এক উজ্জ্বল উদাহরণ যেন হয়ে উঠলেন ড. পয়োধি ধর ও সঞ্চারি সিনহা ধর। উৎসবের অর্থ নতুনভাবে ব্যাখ্যা করলেন তাঁরা—উৎসব মানে শুধু আনন্দ নয়, বরং আলোর ভাগিদার হওয়া।
সীমান্তের ছোট ছোট শিশুদের খুশি মুখগুলিই বলে দিল—শিক্ষাই সত্যিকারের আলো, আর এটাই আসল সরস্বতী পুজো !