প্রশাসনিক উদাসীনতায় বুজরুকির বাড়বাড়ন্ত সীমান্ত শহরে! চিকিৎসার নামে তারস্বরে মাইক বাজিয়ে কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসের প্রচার হিলিতে
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ২৯ নভেম্বর ——– ফাইভ জির যুগেও বুজরুকির দাপট সীমান্ত শহরে! প্রশাসনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে তারস্বরে মাইক বাজিয়ে কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসের দেদার প্রচার হিলিতে। আর যার আড়ালেই চলছে দুস্থ মানুষদের পকেট কাটবার কৌশলও। শুনতে কিছুটা অবাক মনে হলেও বিগত দুদিন ধরে এমনই বুজরুকি কান্ডে জমে উঠেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি ব্লকের ত্রিমোহিনী হাইস্কুল মাঠ। মাত্র ত্রিশ টাকার একটি টিকিট কেটে ভেতরে প্রবেশ করে মঞ্চে উপস্থিত ব্যক্তিদের সান্নিধ্যে পৌছালেই গায়েব হয়ে যাচ্ছে দুরারোগ্য সমস্ত ব্যাধী। ক্যানসার থেকে বন্ধ্যাত্ব, পেটের রোগ থেকে পিঠের রোগ, দাত ব্যাথা থেকে কান ব্যাথা বা পরীক্ষায় পাশ, শুধুমাত্র একটি ত্রিশ টাকার টিকিট আর সামান্য জলেই মিলছে মুশকিল আসান। বিগত দুদিন ধরে হিলির ত্রিমোহিনী হাইস্কুল মাঠে রীতিমতো প্যান্ডেল খাটিয়ে এমন বুজরুকি ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে বিহার থেকে আগত কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয় রীতিমতো তারস্বরে মাইক বাজিয়ে চলছে তার দেদার প্রচারও। আর যার খপ্পরে পরে জেলা ও জেলার বাইরের বহু অজ্ঞ ও দুস্থ লোকেদের ভিড় উপচে পড়েছে এলাকায়। কেটে নেওয়া হচ্ছে খাওয়া ও থাকার বিনিময়ে মোটা অঙ্কের টাকাও। চাঁদের বুকে চন্দ্রযান পাঠিয়ে যখন গোটা বিশ্বকে তাক লাগাচ্ছে ভারত, তখন হিলিতে খোদ প্রশাসনের নাকের ডগায় কিভাবে এমন তারস্বরে মাইক বাজিয়ে কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসের দেদার প্রচার চলছে তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। যদিও এনিয়ে প্রশাসনের অনুমতি রয়েছে বলেই দাবি করেছেন মুক্তির পথ চাঙ্গাই সভার কতৃপক্ষ।
কৃষ্ণ বন্ধু মহন্ত ও এক আদিবাসী মহিলা বলেন, ক্যানসার থেকে বন্ধ্যাত্ব সব দূর হয়ে যায় এখানে। এমনটা শুনে তারা তাদের সমস্যা নিয়ে হাজির হয়েছেন ও ত্রিশ টাকার টিকিট কেটেছেন।
মালদার ইংরেজবাজার থেকে আগত মহম্মদ মোস্তাক বলেন, দুদিন ধরে এখানে রয়েছেন। সাতশো টাকা নেওয়া হয়েছে তার কাছ থেকে। ছেলে কথা বলতে পারে না, যে সমস্যা নিয়ে তিনি হাজির হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সমস্ত বুজরুকি ব্যাপার চলছে এখানে।
বিহার থেকে আগত মুক্তির পথ চাঙ্গাই সভার তরফে ইনোসেন্ট সরেন বলেন, তিনদিনের এই অনুষ্টানের জন্য বিডিও থেকে পুলিশ সকলের অনুমতি নেওয়া হয়েছে। মুলত বিশ্বাসের উপর ভরসা করেই ক্যানসার থেকে অশ্ব সব রোগীরা সুস্থ হচ্ছে। এখানে কোন ওষুধের ব্যবহার নেই, টাকা নেবার বিষয়ও নেই।
বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা।