জলপাইগুড়ি:-
জলপাইগুড়ি’তে জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি বদল। সৈকত চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে পদে আনা হয়েছে চা বলয়ের নেতা সন্দীপ ছেত্রী’কে। যা নিয়ে ক্ষোভের আঁচ সংগঠনের অন্দরে। আইপ্যাক নিয়ে ক্ষোভ। “অচেনা” একজন’কে লোকসভা নির্বাচনের আগে এই রদবদল দলের পক্ষে খারাপ হতে পারে বলে দাবি পূর্বতন সভাপতি সৈকত অনুগামীদের। কটাক্ষ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির।
সোমবার রাতে বিভিন্ন জেলার যুব তৃনমুল সভাপতি পদের তালিকা প্রকাশ্যে আসে রাজ্য নেতৃত্বের তরফে। সেখানে দেখা যায় জলপাইগুড়িতে সৈকত চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে পদে আনা হয়েছে সন্দীপ ছেত্রী’কে৷ বানারহাট ব্লকের চামুর্চির বাসিন্দা সন্দীপ ছেত্রী আগে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা ছিলেন। ২০১৬সালে তৃণমুলে যোগ দেন। বর্তমানে তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন। তাকে যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি করা হয়েছে। এই ঘোষণা প্রকাশ্যে আসতেই সৈকত ঘনিষ্ঠ যুব নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সোশাল মিডিয়ার ক্ষোভ উগরে দেন অনেকে। তার মধ্যে অন্যতম যুব তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক অজয় সাহা। আইপ্যাক’কে, ছাইপ্যাক বলে কটাক্ষ করে তিনি জানিয়েছেন, ওই সংস্থার বিরুদ্ধে দলের তদন্ত করা উচিত। তার দাবি ওই সংস্থার দেওয়া ভুল তথ্যের জন্য এর আগেও দলের ক্ষতি হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের আগে এই রদবদল সংগঠনের ক্ষতি করল বলে দাবি অজয়ের। অন্যদিকে যুবর একাধিক ব্লক সভাপতির দাবি, নতুন জেলা সভাপতির নামই কোনোদিন শোনেননি আগে। যদিও পদ হারানো সৈকত চট্টোপাধ্যায় অবশ্য সাবধানী বক্তব্য রেখেছেন এই ব্যাপারে৷ তার দাবি, ৪০বছর পর্যন্ত যুবর পদে থাকা যায়। বয়েস ৪৫হয়ে যাওয়াতেই তাকে সরতে হয়েছে। যদিও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, বয়েসসীমা যদি ৪০ই হয় তাহলে তাকে আগেই সরানো হলো না কেন?তবে তিনিও দাবি করেছেন নতুন সভাপতিকে চেনেন না।
অন্যদিকে, এই রদবদল নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও।
প্রসঙ্গত, যুব কংগ্রেস ছেড়ে ২০১৪সালে তৃণমুলে যোগ দেন সৈকত । টানা দশবছর তিনি যুব সভাপতি ছিলেন। পাশাপাশি, জলপাইগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানও তিনি। সম্প্রতি এক দম্পতির আত্মহত্যা মামলায় অভিযুক্ত হন। সেই ঘটনায় জামিন না পাওয়ায় দীর্ঘদিন পুলিশের খাতায় ফেরার ছিলেন তিনি। পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে, জলপাইগুড়ি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন এবং তার জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়। কিছুদিন আগেই তিনি অন্তর্বতীকালীন জামিনে মুক্তি পান। এই ঘটনার পর থেকেই তার পদে থাকা নিয়ে বিতর্ক তৈরী হয়েছিলো। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছিলেন, এতবড় ঘটনায় অভিযুক্ত হওয়া সত্তেও তাকে কেন পদে রাখা হয়েছে। এখন জল্পনা, বয়েসের দোহাই দিলেও আদতে ওই ঘটনার প্রেক্ষিতেই তাকে সরিয়ে থাকতে পারে দল। তবে পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের পদ তার থাকছে। পাশাপাশি সৈকতের নিজের দাবি, তৃনমুল মাদার সংগঠনের কোনো পদ তাকে দেওয়া হবে।